ইলন মাস্কের নিউরালিংককে চ্যালেঞ্জ করতে স্যাম অল্টম্যানের নতুন প্রতিষ্ঠান
Published: 14th, August 2025 GMT
দীর্ঘদিন বন্ধু ছিলেন খুদে ব্লগ লেখার সাইট এক্স (সাবেক টুইটার), টেসলা, স্পেসএক্স ও নিউরালিংকের মালিক ইলন মাস্ক ও আলোচিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্যাম অল্টম্যান। দুই বন্ধু মিলে একসঙ্গে চ্যাটজিপিটিসহ বিভিন্ন উদ্যোগের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। কিন্তু এআই চ্যাটবটের বাজারে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের আধিপত্য বিস্তার করতে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন তাঁরা। এবার ইলন মাস্কের নিউরালিংককে চ্যালেঞ্জ করতে ‘মার্জ ল্যাবস’ নামের ব্রেন টু কম্পিউটার ইন্টারফেসনির্ভর প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন স্যাম অল্টম্যান। মার্জ ল্যাবস তৈরিতে আনুমানিক ৮৫ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মার্জ ল্যাবসের সঙ্গে যুক্ত আছেন টুলস ফর হিউম্যানিটির প্রধান নির্বাহী অ্যালেক্স ব্লানিয়া। মানুষের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য চোখ স্ক্যান করার যন্ত্র তৈরির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিচিতি পেয়েছে। অল্টম্যানের আরেক উদ্যোগ ‘ওয়ার্ল্ড’ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের জনসমাগমস্থলে চোখ স্ক্যানের বিশেষ ডিভাইস বসানোর কাজ করছে। তবে নতুন প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি ইলন মাস্কের নিউরালিংকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত নিউরালিংক মস্তিষ্কে প্রতিস্থাপনযোগ্য চিপ তৈরি করছে, যার মাধ্যমে গুরুতর পক্ষাঘাতে আক্রান্ত ব্যক্তি শুধু চিন্তার মাধ্যমে যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি মানবদেহে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে।
আরও পড়ুনস্যাম অল্টম্যানের বিরুদ্ধে মামলা ইলন মাস্কের০১ মার্চ ২০২৪বিশেষজ্ঞদের মতে, নিউরালিংক ও মার্জ ল্যাবস উভয় প্রতিষ্ঠানই এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কাজ করছে, যা মানুষের সঙ্গে যন্ত্রের যোগাযোগের ধরন আমূল বদলে দিতে পারে। এসব উন্নয়ন একসময় মানুষ ও প্রযুক্তিকে কার্যত একীভূত করে ফেলবে। অল্টম্যান বহু বছর ধরেই এ ধারণায় আগ্রহী। ২০১৭ সালের এক ব্লগ পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘যদিও এই সংমিশ্রণ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে, সামনে এটি আরও অদ্ভুত হয়ে উঠবে। আমরা হব প্রথম প্রজাতি, যারা নিজেদের উত্তরসূরি নিজেরাই তৈরি করব।’
আরও পড়ুনএআই দাবা প্রতিযোগিতায় মাস্কের গ্রোককে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ওপেনএআই০৯ আগস্ট ২০২৫ইলন মাস্ক ২০১৮ সালে ওপেনএআই থেকে সরে দাঁড়ান। এর পর থেকে দুই প্রযুক্তি উদ্যোক্তার সম্পর্ক ধীরে ধীরে তিক্ত হয়ে ওঠে। সম্প্রতি সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রকাশ্যে রূপ পায়। মাস্ক অভিযোগ করেন, অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে ওপেনএআইকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং তিনি আইনি পদক্ষেপের হুমকি দেন। জবাবে অল্টম্যান ইঙ্গিত দেন, মাস্ক নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’ ব্যবহার করে প্রতিদ্বন্দ্বীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছেন। পরে দুজন ব্যক্তিগত কটাক্ষে জড়িয়ে পড়েন এবং নিজেদের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট নিয়ে একে অপরকে বিদ্রূপ করেন।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র জ ল য বস ইলন ম স ক র
এছাড়াও পড়ুন:
চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে অনলাইনে পছন্দের পণ্যও কেনা যাবে
প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি লিখিত প্রম্পট থেকে কৃত্রিম ছবি তৈরি করে দেয় চ্যাটজিপিটি। শুধু তা-ই নয়, ব্যবহারকারীদের নির্দেশমতো নিজ থেকে বার্তা, নিবন্ধ, কবিতাসহ ই-মেইলের খসড়াও লিখে দেয় চ্যাটবটটি। এবার চ্যাটজিপিটিতে অনলাইন কেনাকাটার সুবিধা চালু করেছে ওপেনএআই। এ সুবিধা চালুর ফলে অন্য কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ না করেই চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে সরাসরি পছন্দের পণ্য কেনা যাবে।
ওপেনএআই জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারকারীরা এখন থেকে সরাসরি চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে পণ্য কিনতে পারবেন। নতুন এ সুবিধার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইনস্ট্যান্ট চেকআউট’। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত বিক্রেতা ও প্রতিষ্ঠানের পণ্য কেনা যাবে। এত দিন চ্যাটজিপিটিতে কোনো পণ্যের খোঁজ মিললেও কিনতে হলে ব্যবহারকারীদের আলাদা ওয়েবসাইটে যেতে হতো। নতুন সুবিধা চালুর ফলে কেনাকাটার শেষ ধাপও সম্পন্ন হবে চ্যাটজিপিটির ভেতরে।
চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে অনলাইনে পছন্দের পণ্য কেনার ক্ষেত্রে কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ওপেনএআইয়ের তথ্যমতে, আপাতত একবারে কেবল একটি পণ্য কেনা যাবে। তবে নতুন এ সুবিধা ব্যবহারকারীদের অনলাইন কেনাকাটার অভ্যাসে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে। ব্যবসায়ীরা সহজেই নিজেদের পণ্য সরাসরি চ্যাটজিপিটিতে যুক্ত করতে পারবেন। যদিও অ্যামাজন বা ওয়ালমার্টের মতো বড় প্রতিষ্ঠান এখনো এ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়নি।
চ্যাটজিপিটির ব্যবহার বিস্তৃত করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এ উদ্যোগ নিয়েছে ওপেনএআই। এর আগে চ্যাটজিপিটিতে পণ্য অনুসন্ধান ও সুপারিশসুবিধা চালু করে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন সুবিধা চালুর বিষয়ে ওপেনএআইয়ের বাণিজ্য বিভাগের প্রধান মিশেল ফ্রাডিন জানিয়েছেন, চ্যাটজিপিটির প্রতি ১০ জন ব্যবহারকারীর অন্তত ১ জন কেনাকাটায় আগ্রহ দেখান। তাঁদের জন্য সরাসরি কেনাকাটার সুযোগ তৈরি করা যৌক্তিক পদক্ষেপ।
সূত্র: টেকলুসিভ