খুলনায় মহররমের নামে শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকী পালনের চেষ্টা
Published: 14th, August 2025 GMT
খুলনায় মহররমের চেহলামের নামে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শোক দিবস পালনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। তবে, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধার মুখে তা ভণ্ডুল হয়ে যায়।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে নগরীর হেলাতলা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, আয়োজক সংগঠন স্বর্ণপট্টি ইসলামী ইন্তেজামিয়া কমিটির কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় জিতু জুয়েলার্সের মালিক আলহাজ্ব মো.
আরো পড়ুন:
বিমান বিধ্বস্তে নিহতদের স্মরণে দুবাইয়ে শোক ও দোয়া মাহফিল
বিমান বিধ্বস্তে নিহতের ঘটনায় তারেক রহমানের শোক
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে খুলনা নগরীর হেলাতলা মোড় এলাকায় একটি গরু এবং ৪-৫টি বড় ডেগ আনেন কিছু লোকজন। তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে ভিডিও করছিলেন।
এ সময় সেখানে গিয়ে স্থানীয় বিএনপির লোকজন আয়োজনকারীদের রান্নার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। তখন মহররমের চেহলামের খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠান বলে জানান তারা। বিএনপির নেতাকর্মীরা আগত লোকজনদের পরিচয় জানতে চাইলে কয়েকজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যে ৪-৫ জনকে আটক করে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশে সোপর্দ করেন।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, সজিব ওয়াজেদ জয় ফেসবুক পেজে শেখ মুজিবুর রহমানের শোক দিবসের অনুষ্ঠান পালনের নির্দেশ দেন সব জায়গায়। সেই সূত্র ধরে আওয়ামী লীগের লোকজন মহররমের অনুষ্ঠান বলে প্রচার করে শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ১৫ আগস্টের অনুষ্ঠান পালনের চেষ্টা করছিলেন। এগুলো ভিডিও করে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেইজে দিয়ে দেখাবে যে, অনেক বাধা বিপত্তির পরও তারা শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পালন করেছেন।
খুলনা সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোল্যা ফরিদ আহমেদ বলেন, “১৫ আগস্ট শুক্রবার সবকিছু বন্ধ। সেহেতু ১৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের দোসররা এখানে গরু জবাই করে মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে চেয়েছিল। আমরা হাতেনাতে ধরলে আওয়ামী লীগের লোকজন বলে এটা মহররম মাসের অনুষ্ঠান চলছে। কিন্তু মহররম মাস আরো ২ মাস আগে চলে গেছে। তখন পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে কয়েকজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় এবং চার-পাঁচজনকে ধরে আমরা পুলিশের কাছে তুলে দেই।”
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানোয়ার হোসাইন মাসুম বলেন, এখানে চেহলামের কথা বলে একটি গরু আনা হয়েছিল। কিন্তু যত্রতত্র গরু জবাই করার কোনো নিয়ম নেই। এজন্য আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললে তারা গরু জবাই করতে নিষেধ করেন।”
তিনি বলেন, “সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোল্যা ফরিদ আহমেদ বলেছেন, ১৫ আগস্টের অনুষ্ঠান পালনের চেষ্টা করছিল আওয়ামী লীগের লোকজন। তখন আমি অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেই। তবে কাউকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।
শেখ মুজিবুর রহমানের শোক দিবস পালনের অভিযোগ অস্বীকার করে আয়োজক সংগঠন স্বর্ণপট্টি ইসলামী ইন্তেজামিয়া কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মো. রবিউল ইসলাম জানান, দীর্ঘ প্রায় ৪০-৫০ বছর ধরে তারা এ সংগঠনের ব্যানারে হেলাতলায় মহররমের অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল এবং রমজান মাসে ইফতার মাহফিল করে আসছেন। যদিও করোনাসহ অন্যান্য কারণে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কোনো অনুষ্ঠান করতে পারেননি। এছাড়া এবার মহররম মাসের শেষের দিকে টানা বৃষ্টির কারণেও এ অনুষ্ঠান করতে পারেননি। এজন্য বুধবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করছিলেন তারা।
১৫ আগস্টের কথিত শোক দিবসের অনুষ্ঠান কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এটি একটি আজগুবি অভিযোগ। তিনি নিজেই খুলনা মহানগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। ফলে তার পক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের শোক দিবস পালনের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
অপরদিকে, ১৫ আগস্ট ঘিরে খুলনায় ফের সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। শহরের অদূরে খালিশপুর থেকে শুরু করে ফুলবাড়িগেট এলাকার বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগিয়েছে দলটি। গত ৯ আগস্ট মাঝরাতের কোনো এক সময় আওয়ামী লীগের খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার পক্ষে এসব পোস্টারিং করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পোস্টারিং করার নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৯ আগস্ট মাঝরাতের কোনো এক সময় খালিশপুর বানৌজা তিতুমীর মেইন গেটের আনুমানিক ৩০০ মিটার পশ্চিম দিকে ২ নম্বর নেভিগেটসহ খালিশপুর থানাধীন বিভিন্ন জায়গায় সড়কের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ও দেওয়ালে আওয়ামী লীগের খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার পক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পোস্টার লাগানো হয়। পরবর্তীতে বিক্ষুব্ধ জনতা পোস্টারগুলো ছিঁড়ে ফেলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, এই পোস্টারগুলো কে বা কারা লাগিয়েছে সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিষয়টি অনুসন্ধানের পরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ খ ম জ ব র রহম ন ব এনপ আওয় ম ল গ শ খ ম জ ব র রহম ন র রহম ন র শ ক ১৫ আগস ট মহররম র ন ত কর ম শ ক দ বস র ল কজন ব এনপ র ইসল ম করছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় মহররমের নামে শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকী পালনের চেষ্টা
খুলনায় মহররমের চেহলামের নামে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শোক দিবস পালনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। তবে, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধার মুখে তা ভণ্ডুল হয়ে যায়।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে নগরীর হেলাতলা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, আয়োজক সংগঠন স্বর্ণপট্টি ইসলামী ইন্তেজামিয়া কমিটির কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় জিতু জুয়েলার্সের মালিক আলহাজ্ব মো. রবিউল ইসলাম।
আরো পড়ুন:
বিমান বিধ্বস্তে নিহতদের স্মরণে দুবাইয়ে শোক ও দোয়া মাহফিল
বিমান বিধ্বস্তে নিহতের ঘটনায় তারেক রহমানের শোক
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে খুলনা নগরীর হেলাতলা মোড় এলাকায় একটি গরু এবং ৪-৫টি বড় ডেগ আনেন কিছু লোকজন। তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে ভিডিও করছিলেন।
এ সময় সেখানে গিয়ে স্থানীয় বিএনপির লোকজন আয়োজনকারীদের রান্নার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। তখন মহররমের চেহলামের খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠান বলে জানান তারা। বিএনপির নেতাকর্মীরা আগত লোকজনদের পরিচয় জানতে চাইলে কয়েকজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যে ৪-৫ জনকে আটক করে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশে সোপর্দ করেন।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, সজিব ওয়াজেদ জয় ফেসবুক পেজে শেখ মুজিবুর রহমানের শোক দিবসের অনুষ্ঠান পালনের নির্দেশ দেন সব জায়গায়। সেই সূত্র ধরে আওয়ামী লীগের লোকজন মহররমের অনুষ্ঠান বলে প্রচার করে শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ১৫ আগস্টের অনুষ্ঠান পালনের চেষ্টা করছিলেন। এগুলো ভিডিও করে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেইজে দিয়ে দেখাবে যে, অনেক বাধা বিপত্তির পরও তারা শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পালন করেছেন।
খুলনা সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোল্যা ফরিদ আহমেদ বলেন, “১৫ আগস্ট শুক্রবার সবকিছু বন্ধ। সেহেতু ১৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের দোসররা এখানে গরু জবাই করে মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে চেয়েছিল। আমরা হাতেনাতে ধরলে আওয়ামী লীগের লোকজন বলে এটা মহররম মাসের অনুষ্ঠান চলছে। কিন্তু মহররম মাস আরো ২ মাস আগে চলে গেছে। তখন পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে কয়েকজন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় এবং চার-পাঁচজনকে ধরে আমরা পুলিশের কাছে তুলে দেই।”
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানোয়ার হোসাইন মাসুম বলেন, এখানে চেহলামের কথা বলে একটি গরু আনা হয়েছিল। কিন্তু যত্রতত্র গরু জবাই করার কোনো নিয়ম নেই। এজন্য আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললে তারা গরু জবাই করতে নিষেধ করেন।”
তিনি বলেন, “সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোল্যা ফরিদ আহমেদ বলেছেন, ১৫ আগস্টের অনুষ্ঠান পালনের চেষ্টা করছিল আওয়ামী লীগের লোকজন। তখন আমি অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেই। তবে কাউকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।
শেখ মুজিবুর রহমানের শোক দিবস পালনের অভিযোগ অস্বীকার করে আয়োজক সংগঠন স্বর্ণপট্টি ইসলামী ইন্তেজামিয়া কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মো. রবিউল ইসলাম জানান, দীর্ঘ প্রায় ৪০-৫০ বছর ধরে তারা এ সংগঠনের ব্যানারে হেলাতলায় মহররমের অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল এবং রমজান মাসে ইফতার মাহফিল করে আসছেন। যদিও করোনাসহ অন্যান্য কারণে ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কোনো অনুষ্ঠান করতে পারেননি। এছাড়া এবার মহররম মাসের শেষের দিকে টানা বৃষ্টির কারণেও এ অনুষ্ঠান করতে পারেননি। এজন্য বুধবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করছিলেন তারা।
১৫ আগস্টের কথিত শোক দিবসের অনুষ্ঠান কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এটি একটি আজগুবি অভিযোগ। তিনি নিজেই খুলনা মহানগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। ফলে তার পক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের শোক দিবস পালনের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
অপরদিকে, ১৫ আগস্ট ঘিরে খুলনায় ফের সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। শহরের অদূরে খালিশপুর থেকে শুরু করে ফুলবাড়িগেট এলাকার বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগিয়েছে দলটি। গত ৯ আগস্ট মাঝরাতের কোনো এক সময় আওয়ামী লীগের খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার পক্ষে এসব পোস্টারিং করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পোস্টারিং করার নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৯ আগস্ট মাঝরাতের কোনো এক সময় খালিশপুর বানৌজা তিতুমীর মেইন গেটের আনুমানিক ৩০০ মিটার পশ্চিম দিকে ২ নম্বর নেভিগেটসহ খালিশপুর থানাধীন বিভিন্ন জায়গায় সড়কের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ও দেওয়ালে আওয়ামী লীগের খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার পক্ষে শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পোস্টার লাগানো হয়। পরবর্তীতে বিক্ষুব্ধ জনতা পোস্টারগুলো ছিঁড়ে ফেলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, এই পোস্টারগুলো কে বা কারা লাগিয়েছে সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিষয়টি অনুসন্ধানের পরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী