জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি) আসন ভাগাভাগির রাজনীতিতে যাবে না বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমাদের আসন দিয়ে কেনা যাবে না, আমরা বিক্রি হতে আসিনি।'

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণপরিষদ নির্বাচন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ মনে করেন, আসন ভাগাভাগি বা সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচন মানে হবে মধ্যরাতের ভোটের পুনরাবৃত্তি। তিনি বলেন, ‘আমরা বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা করব না। জনগণের সামনে বিকল্প থাকতে হবে। আগের মতো ওসি নির্ভর বা প্রশাসননির্ভর নির্বাচন আমরা চাই না।’আলোচনার একপর্যায়ে তিনি সরাসরি বলেন, ‘আমরা বিক্রি হতে আসিনি। আসন দিয়ে আমাদের কেনা সম্ভব নয়। নতুন বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য। জনগণের আস্থা থাকলেই আমরা টিকে থাকব।’

বিভিন্ন গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর ছড়ানো হচ্ছে বলে হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন। তবে এখন পর্যন্ত একটি প্রমাণও হাজির করা যায়নি বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেন, ‘এক বছরে একজনও যদি প্রমাণ দিতে পারে যে আমরা দুর্নীতি করেছি—নথি, অডিও, ভিডিও, সিসিটিভি ফুটেজ—তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। কিন্তু ভুয়া সংবাদ দিয়ে চরিত্রহনন করা হলে তার দায় নিতে হবে।’

এনসিপির এই নেতা বলেন, কেবল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেই হবে না, বরং পুরো রাজনৈতিক খেলার নিয়ম পরিবর্তন করতে হবে। আগে দেখা গেছে রেফারি গোল দিয়েছে, প্রশাসন খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছে। এবার নিয়ম বদলাতে হবে। রেফারি রেফারি থাকবে, খেলোয়াড় খেলোয়াড় থাকবে। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে।

নির্বাচন যত দ্রুত সম্ভব হওয়া উচিত উল্লেখ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, তবে সেটা অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে। নভেম্বর, ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারিতে—যেকোনো সময় নির্বাচন হোক। কিন্তু পুরোনো নিয়মে না। জনগণের সামনে প্রকৃত অপশন থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘জনগণ যদি আমাদের প্রত্যাখ্যান করে, সেটা আমরা মেনে নেব। কিন্তু সমঝোতার নির্বাচন নয়।’

বর্তমান সংবিধানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এই নেতা বলেন, এটা এখন টেক্সট বুক অব ফ্যাসিজম। ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে এই রাষ্ট্রব্যবস্থা কার্যকর নয়। নতুন সংবিধান ছাড়া জনগণের রাষ্ট্র গড়া সম্ভব না।

সভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক নাসীরুদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম সদস্যসচিব জহুরুল ইসলাম, আরিফ সোহেল ও ফরিদুল হক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জনগণ র আম দ র এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না: জি এম কাদের

আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের।

আজ বুধবার বিকেলে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি ঢাকা জেলা শাখার মতবিনিমিয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ওই সভায় জি এম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, আমি তার প্রতিবাদ করেছি। একইভাবে এখন বলছি, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।’

জি এম কাদের বলেন, ‘জুলাই গণহত্যায় অনেক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমার ও আমাদের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মিথ্যা হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। মিথ্যা মামলায় যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। আইন উপদেষ্টা ও আইজিপি বলেছেন, অনেক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তাহলে যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না কেন?’

জাতীয় পার্টির চেয়ার‍ম্যান বলেন, ‘আইনের কথা হচ্ছে একজন নিরপরাধকে বাঁচাতে প্রয়োজনে দশজন দোষীকে ছেড়ে দাও। কিন্তু এখন কী হচ্ছে? একজন দোষীকে শাস্তি দিতে দশজন নিরাপদ মানুষকে শাস্তি দিচ্ছে। বাড়িঘর ও অফিসে আগুন দিয়ে, মামলা হামলা করে আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা বর্তমান সরকারের অপকর্মের বিরোধিতা করছি, ঝুঁকি নিয়ে জনগণের পক্ষে কথা বলছি।’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের মানুষের মুখে হাসি নেই। দেশের মানুষ অতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে। এখন যারা যা খুশি করতে পারে, তারা তো নির্বাচন চাইবে না। নির্বাচন যত পিছিয়ে যাবে, ততই তাদের লাভ। জনগণের কথা তাদের বিবেচনায় নেই। নির্বাচন চাই না, এটা বলার আপনি কে? সবাইকে বলতে দিন, এটাই তো গণতন্ত্র। স্বৈরাচার হবেন? থাকতে পারবেন না। এ দেশের মানুষ স্বৈরতন্ত্র মেনে নেয় না।’

জি এম কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার আইনের মারপ্যাঁচে আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এখন এই সরকারও আইনের মারপ্যাঁচে আমাকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। দেশীয় রাজনীতিবিদ ও বিদেশি কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে একটি সফল সম্মেলনে আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে। চেয়ারম্যান হিসেবে আমি যাকে নিয়োগ দিয়েছি, তাকে বাদ দেওয়ার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ক্ষমতাও আছে। আওয়ামী লীগ সরকার যা করেছে, বর্তমান সরকারও তা–ই করছে, পরিবর্তন কী হলো?’

জি এম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার বলা হয়, একই কাজ যদি বর্তমান সরকারও করে, তাকে কী বলবেন? আমাদের দলীয় প্রতীক অন্যদের দেওয়া হবে, এমন ভয় দেখিয়ে আমাদের ব্ল্যাকমেল করেছিল আওয়ামী লীগ, এখন আবার সেই খেলা শুরু হয়েছে। সরকার আমাদের পিছে লেগে রয়েছে। সুবিধা তো দূরের কথা, আমরা আমদের সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করতে পারি না। জনগণের চোখে এখন আমরাই মজলুম।’

জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ইকবাল হোসেন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিল প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রকৃত সংখ্যাগরিষ্ঠের রাজনীতি কোথায়
  • ‘মাঠ ও পার্কের দখলদারির কোনো পরিবর্তন আসেনি’
  • নিজের নয়, জনগণের ইচ্ছায় সরকারপ্রধানের পদে বসেছি: সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস
  • নতুন সংবিধানের জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি নিয়ে এগোবে এনসিপি
  • গণতন্ত্রের গভীর অসুখ!
  • শেখ মুজিব জাতির জনক নন, তবে তার ত্যাগ স্বীকার করি: নাহিদ
  • ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা চ্যালেঞ্জের
  • লাঙ্গল কাউকে দিতে চাইলেই আন্দোলন: জি এম কা‌দের
  • আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না: জি এম কাদের