পাকিস্তানে বন্যা-ভূমিধসে ৩৪৪ জনের মৃত্যু
Published: 17th, August 2025 GMT
পাকিস্তানে প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে গতকাল শনিবার থেকে আগের ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ৩৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৩২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১২০ জন। গতকাল দেশটির কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রাদেশিক উদ্ধারকারী সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে মরদেহ উদ্ধারে প্রায় দুই হাজার উদ্ধারকর্মী কাজ করছেন। এ ছাড়া তাঁরা ৯টি ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। খাইবার পাখতুনখাওয়ার উদ্ধারকারী সংস্থার মুখপাত্র বিলাল আহমেদ ফয়েজি বলেন, প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত, বিভিন্ন স্থানে ভূমিধস ও রাস্তা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে বড় বাধা সৃষ্টি হয়েছে। ভারী যন্ত্রপাতি ও অ্যাম্বুলেন্স পরিবহনে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে। বেশির ভাগ এলাকার সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে উদ্ধারকর্মীরা পায়ে হেঁটে দুর্গম অঞ্চলে তৎপরতা চালাচ্ছেন।
এমন অবস্থায় বুনের, বাজৌর, সোয়াত, শাংলা, মানসেহরা, বাট্টাগ্রামসহ গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি জেলাগুলোকে দুর্যোগপ্রবণ এলাকা ঘোষণা করেছে প্রাদেশিক সরকার। পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে জনগণকে ‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা’ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘পুরো এলাকা কাঁপছে, যেন পৃথিবীর শেষ সময় এসে গেছে’
পাকিস্তানে প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে গত ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ৩৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৩২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১২০ জন। আজ শনিবার দেশটির কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের উদ্ধারকারী সংস্থা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে মরদেহ উদ্ধারে প্রায় দুই হাজার উদ্ধারকর্মী কাজ করছেন। তাঁরা নয়টি ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বৃষ্টির কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।
খাইবার পাখতুনখাওয়ার উদ্ধার সংস্থার মুখপাত্র বিলাল আহমেদ ফয়েজি বলেন, প্রবল বৃষ্টি, বিভিন্ন স্থানে ভূমিধস ও সড়ক পানির তলে চলে যাওয়ায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে বড় বাধার সৃষ্টি হয়েছে। ভারী যন্ত্রপাতি ও অ্যাম্বুলেন্স পরিবহনে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে। বেশির ভাগ এলাকার সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে উদ্ধারকর্মীরা পায়ে হেঁটে দুর্গম অঞ্চলে তৎপরতা চালাচ্ছেন।
এমন অবস্থায় বুনের, বাজৌর, সোয়াত, শাংলা, মানসেহরা, বাট্টাগ্রামসহ গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি জেলাগুলোকে দুর্যোগপ্রবণ এলাকা ঘোষণা করেছে প্রাদেশিক সরকার।
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে জনগণকে ‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা’ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএ) জানিয়েছে, পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ১১ জন এবং উত্তরাঞ্চলীয় গিলগিট বালতিস্তানে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন পাইলট ছিলেন।
এনডিএর প্রতিনিধি সৈয়দ মোহাম্মদ তায়েব শাহ বলেন, এ বছর মৌসুমি বৃষ্টি স্বাভাবিকের তুলনায় আগে শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বৃষ্টি শেষ হতেও সময় লাগবে। তিনি বলেন, আগামী ১৫ দিন...মৌসুমি বৃষ্টির তীব্রতা আরও বাড়বে।
বুনের জেলায় ইতিমধ্যে অসংখ্য মানুষ হতাহত হয়েছেন। সেখানকার বাসিন্দা আজিজুল্লাহ বলেন, তিনি ভেবেছিলেন ‘কেয়ামত নেমে এসেছে।’
আজিজুল্লাহ বলেন, ‘আমি প্রচণ্ড শব্দ শুনলাম, যেন পাহাড়টা ধসে পড়ছে। আমি দৌড়ে বাইরে গিয়ে দেখি, পুরো এলাকা কাঁপছে, যেন পৃথিবীর শেষ সময় এসে গেছে। মনে হচ্ছিল, মৃত্যু আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।’
সোয়াত জেলা থেকে এএফপির এক আলোকচিত্রী জানিয়েছেন, সেখানকার সড়ক কাদাপানিতে ডুবে গেছে। বিদ্যুতের খুঁটি মাটিতে পড়ে গেছে। অনেক গাড়ির অর্ধেক কাদার নিচে চাপা পড়ে আছে।
পাকিস্তানে বর্ষা মৌসুমে যে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ সেটিকে ‘অস্বাভাবিক’ বলে বর্ণনা করেছে। এতে এখন পর্যন্ত ৬৫০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮৮০ জনের বেশি।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি পাকিস্তান। দেশটির মানুষকে প্রতিনিয়ত চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া মোকাবিলা করতে হচ্ছে। ২০২২ সালের মৌসুমি বন্যায় পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। এতে ওই বছর প্রায় ১ হাজার ৭০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।