চট্টগ্রামে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: দগ্ধ আরেক ব্যক্তির মৃত্যু বার্ন ইনস্টিটিউটে
Published: 22nd, September 2025 GMT
চট্টগ্রামে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ আরেক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এই ঘটনায় দগ্ধ তিন ব্যক্তির মৃত্যু হলো।
সবশেষ মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মাহবুবুর রহমান (৪৫)। তিনি রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মাহবুবুর মারা যান। তাঁর শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
মাহবুবুরের বাড়ি চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায়। তাঁর বাবার নাম কবির আহামেদ ভূঁইয়া।
একই ঘটনায় দগ্ধ রিয়াজ নামের এক ব্যক্তি বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকেরা বলছেন, রিয়াজের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ দুই শ্রমিকের মৃত্যু২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫এই ঘটনায় আগে ইউসুফ ও ইদ্রিস নামের দুই ব্যক্তি মারা যান। গত শনিবার রাতে বার্ন ইনস্টিটিউটে তাঁদের মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী সৈয়দাবাদ এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের একটি গুদামে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার রাতে ঢাকার জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তাঁদের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে গ্যাস সিলিন্ডারের গুদামে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ১০১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫গত বুধবার ভোরে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী সৈয়দাবাদ এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের একটি গুদামে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়িয়ে গুদামটি পুড়ে যায়। গুদামটিতে অবৈধভাবে বড় সিলিন্ডার থেকে ছোট সিলিন্ডারে গ্যাস ভরা (রিফিল) হতো বলে জনপ্রতিনিধিদের সূত্রে জানা গেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আফসোস নিয়েও বিশ্বকাপে আরও বেশি ম্যাচ জিততে চান নিগাররা
শ্রীলঙ্কার বিমান ধরতে হবে আগামীকাল। উদ্দেশ্য নারী বিশ্বকাপ। তার আগে আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনের পর হওয়া সফর-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে একটা আফসোসই শোনা গেল বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানার কণ্ঠে। আফসোসটা বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টের আগে কোনো আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলতে না পারা।
কোচ সারওয়ার ইমরানের পাশে বসেই সেই আফসোসের কথাটা বললেন নিগার, ‘অবশ্যই বড় দলের সঙ্গে খেলতে পারলে ভালো হতো। আদর্শ প্রস্তুতি হয়তো হয়নি।’
সঙ্গে অবশ্য বলেছেন, অনুশীলন ক্যাম্পের ঘাটতিটা দূর করার চেষ্টা করেছেন তাঁরা, ‘বাংলাদেশে যত ধরনের ফ্যাসিলিটি আছে, সব কটি আমরা পেয়েছি। এখন পর্যন্ত আমরা যতগুলো ক্যাম্প করেছি, সব সুযোগ-সুবিধা পেয়েছি। যেটা হয়নি, সেটা নিয়ে চিন্তা করছি না। যেভাবে প্রস্তুত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি, আমার মনে হয় ক্রিকেটাররা সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করেছে।’
বড় দলের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে না পারা নিয়ে যদিও–বা আক্ষেপ থেকে যাচ্ছে, তবু বিশ্বকাপে কিছু ম্যাচ জিততে চায় বাংলাদেশ নারী দল।
কোচ সারওয়ার ইমরান তাঁর দলের লক্ষ্যের কথা জানাতে গিয়েই বললেন সেটা, ‘আমাদের লক্ষ্য ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলা ও ভালো খেলা। আমাদের দুটি ম্যাচে ভালো সুযোগ আছে, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। এ ছাড়া অন্যান্য দলের সঙ্গেও…। আমরা কাউকে বড় করে দেখছি না। প্রতিটি ম্যাচই জেতার জন্য খেলব। গত বিশ্বকাপে আমরা পাকিস্তানকে হারিয়েছি। এবার আরও কিছু ম্যাচ জেতার জন্য যাচ্ছি।’
বিশ্বকাপের প্রস্তুতি পর্বে ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৫ দলের বিপক্ষে হেরেছে নিগারের দল। নিগার অবশ্য বলেছেন, তাঁরা অনূর্ধ্ব-১৫ ছেলেদের দলের বিপক্ষে পূর্ণশক্তির দল নামাননি। সঙ্গে স্বীকার করেছেন, তাঁরা নিজেরাও পারেননি প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে।
তবে কোচ সারওয়ার বলেন, ‘আমরা কিন্তু ওদের সঙ্গে ৪৯ রানেও অলআউট হয়েছি, বিকেএসপিতে। দিনে দিনে আমাদের উন্নতি হয়েছে। অনূর্ধ্ব-১৫ দলের যে ফিল্ডিং, সেখানে আমরা ধরা খেয়েছি বলা যায়। ওদের বোলিং, ফিল্ডিং খুব ভালো ছিল।’
খুব বেশি আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলতে না পারার হতাশাটা নিগার বলেছেন অন্য এক প্রসঙ্গেও, ‘আমরা একটি সিরিজ খেলেছি, এরপর তিন-চার মাস আর খেলিনি। একটি ব্যাটিং ইউনিটকে ভালো উইকেটে নিয়মিত প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলতে হয়। পাকিস্তানে যখন খেলেছিলাম, এক ম্যাচ বাদে আমরা সব ম্যাচে দুই শর বেশি রান করেছি, যদিও সাধারণত আমাদের গড় ১৮০।’
নিগারের চোখে এর অর্থ—বাংলাদেশের ব্যাটারদের ভালো উইকেটে বড় রান করার সামর্থ্য আছে। সঙ্গে দলের বোলিং আক্রমণের ওপরও ভরসা রাখছেন তিনি। ‘সামনে চ্যালেঞ্জ আছে, কিন্তু আইসিসি টুর্নামেন্টে ভালো উইকেটে খেলার জন্য এটা দারুণ সুযোগ’, বলেছেন অধিনায়ক।
৩০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু নারী বিশ্বকাপ এবার হবে ভারত ও শ্রীলঙ্কায়। ২ অক্টোবর কলম্বোয় পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশের মেয়েরা। লিগ পর্বে বাংলাদেশের বাকি ছয়টি ম্যাচই ভারতে। মূল বিশ্বকাপ শুরুর আগে শ্রীলঙ্কা আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন মেয়েরা।
কোচ বলেছেন, ‘সেখানে আমরা দলকে আবার পর্যালোচনা করতে পারব, ভিন্ন কম্বিনেশন চেষ্টা করতে পারব। আমরা দলের প্রতিটি দিক নিয়ে আলোচনা করছি। আমরা দুর্বলতাগুলো কাটানোর চেষ্টা করছি। অধিকাংশ ট্রেনিং সেশনে ম্যাচ সিনারিও নিয়েও কাজ করেছি।’
বিশ্বকাপ সামনে রেখে বিসিবির পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উডের সঙ্গেও কাজ করার সুযোগ হয়েছে মেয়েদের। নিগার ইতিবাচকভাবেই নিচ্ছেন সেটাকে, ‘এত অল্প সময়ে অত বেশি কাজ করা যায় না। তবু বলব যে ভালো অভিজ্ঞতা। উনি পাওয়ার হিটিং শেখাতে চেয়েছেন। তবে এত অল্প সময়ে আসলে মানিয়ে নেওয়াটা কঠিন। আমরা যে ফরম্যাট খেলতে যাচ্ছি, অবশ্যই সেখানেও পাওয়ার হিটিং দরকার আছে। ছোট-ছোট কিছু কাজ, যেগুলো তিনি করে গেছেন, ক্রিকেটাররা সেগুলো ব্যবহার করতে পারলে অবশ্যই ম্যাচে অনেক কাজে লাগবে।’
বিশ্বকাপের দল থেকে অফ স্পিনার সুমনার বাদ পড়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। কোচ আজ সেটারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘সুমনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে অনেক দিন লেগেছে আমাদের। নির্বাচকদের সঙ্গে আমি এবং অধিনায়কও ছিলাম। পাকিস্তানের সঙ্গে যখন আমরা খেলি, তখন ওদের বাঁহাতি ব্যাটার অপরাজিত ছিল। ওই সময় অধিনায়ক যখন সুমনাকে বল করতে বলল, সুমনা বোলিং করেনি। ঢাকাতে হোক বা প্রস্তুতি ম্যাচে হোক, বাঁহাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে ও বোলিং করতে পারে না। আমাদের মূল খেলা হলো পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। আমাদের একজন অফ স্পিনার লাগবে, যে বাঁহাতি ব্যাটারকে বল করতে পারে।’
এ ব্যাপারে নিগারের কথা, ‘আমরা সুমনা আর নিশিতাকে অনুশীলন ও প্রস্তুতি ম্যাচে পর্যবেক্ষণ করেছি। নিশিতাকে এগিয়ে রাখা হয়েছে, কারণ, সে আমাদের কাছে ভালো মনে হয়েছে। সে খুব নির্ভুল অফস্পিনার। দলের যা চাহিদা, তা দিতে পারে। এটা নয় যে সুমনা ভালো খেলোয়াড় নয়, তার সামনে আরও অনেক সুযোগ আছে।’