শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা ফটকে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ মঙ্গলবার সকালে ‘মতিহারের সচেতন এলাকাবাসী’র ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এ সময় তাঁরা বলেন, অভিযুক্ত সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তাঁকে প্রতিহত করা হবে।

সালাহউদ্দিন আম্মার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে তিনি জিএস (স্বতন্ত্র) ও সিনেটে ছাত্রপ্রতিনিধি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, অনুসারীদের নিয়ে গত শনিবার তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মাঈন উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ও ছাপাখানা কর্মকর্তা রবিউল ইসলামকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন।

আরও পড়ুনসহ-উপাচার্যকে আটকে বিক্ষোভ, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বিক্ষোভ সমাবেশে কাজলা কেডি ক্লাবের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হুঁশিয়ার করতে চাই, আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যে যা খুশি করবেন—তা হবে না। আমরা এক থাকলে কী হয়, তা আপনারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেছেন। আপনারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে কলুষিত করলে এর দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।’

ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল বাবু বলেন, ‘শিক্ষক লাঞ্ছনার পর কয়দিন কেটে গেল, ছাত্র নামের যে সন্ত্রাসী জড়িত তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে আমরা বিচার নিজের হাতেই তুলে নিতে পারব। আমরা ঘুমন্ত বাঘ, আমাদের জাগাবেন না।’

স্থানীয় বাসিন্দা প্রকৌশলী আমজাদ আলী বলেন, ‘শিক্ষক লাঞ্ছনার এমন ঘটনা দেখে নীরবে বসে থাকা যায় না। কর্তৃপক্ষ এ ধরনের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আমরা ছাত্র নামধারী এই সন্ত্রাসীকে প্রতিরোধ করব।’

এলাকার সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলামও এ ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেন। আরেক সাবেক কাউন্সিলর আনসার আলী বলেন, ‘এই শিক্ষার্থী একজন শিক্ষকের গায়ে হাত তুলেছেন। ৫ আগস্টের পর কোটি কোটি টাকা চাঁদা তুলেছেন। আমরা তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

আরও পড়ুনশিক্ষকেরা ‘পিতৃতুল্য’, তাঁদের গায়ে হাত তোলা হয়নি, দাবি আম্মারের২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কর্মচারী আলমগীর হোসেন। পরিচালনা করেন হায়দার আলী। এর আগে গতকাল বিকেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে একই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলেও বিনোদপুর বাজারে তাঁদের কর্মসূচি আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আম্মার প্রথম আলোকে বলেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এই ইস্যুতে স্থানীয় লোকজন কেন আসবে? এটা প্রশাসনের দেউলিয়াত্বের কারণেই হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস থ আম ম র

এছাড়াও পড়ুন:

হাসিনার গুলির সামনে ভয় পাই নাই, ছোড়া ডিমে কিছু যায় আসে না: আখতার হোসেন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বিমানবন্দরে যুবলীগ নেতার ডিম ছোড়ার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

আখতার হোসেন বলেছেন, ‘আমরা সেই প্রজন্ম যারা হাসিনার গুলির সামনে দাঁড়াতে ভয় পাই নাই। অতএব কারও ছোড়া ডিমে আমাদের কিছু যায় আসে না। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আওয়ামী লীগ জন্মগতভাবে ও প্রকৃতিগতভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা সন্ত্রাস করবে।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ডায়াসপোরা অ্যালায়েন্সের ফেসবুক পেজে প্রচারিত এক ভিডিওতে আখতার হোসেনকে এসব কথা বলতে শোনা যায়। এ ছাড়া নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি এ সম্পর্কিত একটি পোস্ট দিয়েছেন। অ্যাকাউন্টটি আখতার হোসেনের বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

আখতার হোসেন বলেন, ‘এয়ারপোর্টে আজকে আওয়ামী লীগ হুংকার দিয়ে আসছিল, অশ্রাব্য গালিগালাজ করছিল, বিশেষ করে তাসনিম জারাকে (এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক) উদ্দেশ্য করে। এটাই আওয়ামী লীগের চরিত্র।’

ভিডিওতে আখতারকে বলতে শোনা যায়, ‘বাংলাদেশের যারা স্বাধীনতাকামী মানুষ, জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির মানুষ তাদের ওপর এভাবে হামলে পড়বে- এতে আমরা অবাক হই না। বরং আমরা মনে করি এই এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য যে প্রক্রিয়া শুরু করার কথা ছিল সেটা সামান্য অগ্রসর হয়েছে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী যারা পালিয়ে এসেছে, তারা বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস করছে।’

দেশে এবং দেশের বাইরে আওয়ামী লীগ ও তাঁদের দোসর, যাঁরা সন্ত্রাস করছে, তাদের ফিরিয়ে নিয়ে বিচারের আওতায় নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান আখতার হোসেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে আখতার হোসেন নিউইয়র্কে পৌঁছান।

নিউইয়র্কের ঘটনায় জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ স্ট্রিট থেকে আটক করা হয় যুবলীগ কর্মী মিজানুর রহমানকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ