ভারত নয়, বাংলাদেশের দিকেই নজর পাকিস্তানের
Published: 25th, September 2025 GMT
পাকিস্তান দলটাই তো এমন—কখন কী করে ফেলে বলা মুশকিল। এই এশিয়া কাপের শুরু থেকে ছন্নছাড়া দলটাই যেমন এখন ফাইনাল থেকে এক ধাপ দূরে দাঁড়িয়ে। সেই পথে তাদের বাধা আজ বাংলাদেশ। যে ম্যাচটাকে অলিখিত সেমিফাইনাল বলাই যায়।
ভারতের কাছে হেরে সুপার ফোর শুরু করা পাকিস্তান পরশু হারিয়েছে এশিয়া কাপের টি–টোয়েন্টি সংস্করণের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে। বাংলাদেশও লঙ্কানদের হারিয়েছে নিজেদের প্রথম ম্যাচে। তবে কাল নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে ভারতের কাছে। আর এই জয়ে প্রথম দল হিসেবে ভারত উঠে গেছে ফাইনালে, ছিটকে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। এখন বাংলাদেশ না পাকিস্তান, কারা ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ হবে সেটি নির্ধারিত হবে আজকের বাংলাদেশ–পাকিস্তান ‘সেমিফাইনালে’।
এমন ম্যাচের আগে ছন্দ খুঁজে পাওয়া পাকিস্তান বেশ আত্মবিশ্বাসীই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়ে তাদের জয়ের নায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি তো বলছেন, তাঁরা এবারের এশিয়া কাপে এসেছেন চ্যাম্পিয়ন হতেই। তবে সেই পথে এগোতে আপাতত তাঁদের মনোযোগ বাংলাদেশ ম্যাচেই।
বাংলাদেশ ভালো দল। সাম্প্রতিক সময়ে তারা ভালো ক্রিকেট খেলছে। আপনি যখন ওদের বিপক্ষে খেলবেন, প্রথমে নিজেদের দিকেই নজরটা রাখতে হবে। এমনভাবে খেলতে হবে যেন ওরা কোনো সুযোগ না পায়।শাহিন আফ্রিদি, ক্রিকেটার, পাকিস্তানপরশু রাতে আবুধাবিতে পাকিস্তান শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর দুটি সংবাদ সম্মেলন করতে হয়েছে পাকিস্তান দলকে। একটি শ্রীলঙ্কা ম্যাচ নিয়ে ম্যাচ–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন, যেখানে হাজির ছিলেন সাহিবজাদা ফারহান। আরেকটি বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়ে। ম্যাচ–পূর্ব সেই সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন শাহিন আফ্রিদি। সেখানেই পাকিস্তানের বাঁহাতি পেসার কথা বললেন বাংলাদেশ দল নিয়ে, ‘বাংলাদেশ ভালো দল। সাম্প্রতিক সময়ে তারা ভালো ক্রিকেট খেলছে। আপনি যখন ওদের বিপক্ষে খেলবেন, প্রথমে নিজেদের দিকেই নজরটা রাখতে হবে। এমনভাবে খেলতে হবে যেন ওরা কোনো সুযোগ না পায়। সব বিভাগেই আমাদের ভালো খেলতে হবে। আমাদের চোখ এখন বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের দিকেই।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩ উইকেট নিয়েছেন পাকিস্তানের বাঁহাতি পেসার শাহিন আফ্রিদি (ডানে).উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দাওয়াতের ভাষা হবে মিষ্টি ও সুন্দর
দাওয়াত মানে ডাকা বা আহ্বান করা। মানুষকে আল্লাহর পথে ডেকে আনা, দুনিয়ার শান্তি ও আখিরাতের মুক্তির দিকে আহ্বান করাই এর মূল উদ্দেশ্য। এটি কেবল একটি ধারণা নয়; বরং প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব ও কাজ।
যেমন ডাক্তারি বিদ্যা ছাড়া চিকিৎসা করলে রোগীর প্রাণহানি হতে পারে, তেমনি দাওয়াতের জ্ঞান ছাড়া ময়দানে নামলে মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
ভরা মজলিশে অশালীন ভাষা ব্যবহার বা কটু কথা বলা দাওয়াতের সঠিক পদ্ধতি নয়। এতে সাধারণ মুসলমান, বিশেষত কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণেরা ইসলাম ও আলেমদের থেকে দূরে সরে যেতে পারেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইসলামবিদ্বেষীরা সরল মুসলমানদের ইমান নিয়ে খেলতে পারে এবং নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে পারে।
‘আপনার প্রভুর পথে দাওয়াত দিন জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সুন্দর নীতিসম্পন্ন উপদেশ দিয়ে। তাদের সঙ্গে বিতর্ক করো এমনভাবে, যা সবচেয়ে সুন্দর।সুরা নাহল, আয়াত: ১২৫আরও পড়ুননারীর প্রতি সহিংসতা নিয়ে কী বলে ইসলাম২৮ আগস্ট ২০২৫পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা আমাদের দাওয়াতের পদ্ধতি স্পষ্টভাবে শিখিয়েছেন, ‘আপনার প্রভুর পথে দাওয়াত দিন জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সুন্দর নীতিসম্পন্ন উপদেশ দিয়ে। তাদের সঙ্গে বিতর্ক করো এমনভাবে, যা সবচেয়ে সুন্দর।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ১২৫)
এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, দাওয়াত মানে কেবল আহ্বান নয়; বরং শালীন, সদয় ও প্রজ্ঞাপূর্ণ ভাষায় মানুষকে আল্লাহর পথে আনা। ঝগড়া বা কটু ভাষার পরিবর্তে সৌজন্য ও সদাচার দাওয়াতকে কার্যকর করে।
রাসুল (সা.) দাওয়াতের কাজে সর্বদা নম্রতা ও ভালোবাসার পরিচয় দিয়েছেন। কাফের-মুশরিকরা তাঁকে বিদ্রূপ করে ‘রাইনা’ (আমাদের দিকে তাকান) শব্দটির ভিন্ন উচ্চারণ করে (যার অর্থ হতো ‘আমাদের রাখাল’) ডাকত। তবু তিনি কখনো কটু কথা বলেননি; বরং শান্তভাবে ভালোবাসার ভাষায় দাওয়াত চালিয়ে গেছেন।
হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘সহজ করে দাও, কঠিন করো না। সুসংবাদ দাও, ভয় দেখিয়ে মানুষকে দূরে সরিও না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৯; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৭৩৪)
আরও পড়ুননিজেকে অযোগ্য মনে হলে ইসলাম কী বলে১৭ আগস্ট ২০২৫সহজ করে দাও, কঠিন করো না। সুসংবাদ দাও, ভয় দেখিয়ে মানুষকে দূরে সরিও না।সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৯এ হাদিসে দাওয়াত ও শিক্ষা প্রদানের মূলনীতি শেখানো হয়েছে। মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকতে হবে সহজ ও বোধগম্য ভাষায়, যাতে তারা আকৃষ্ট হয়। কঠোরতা, জটিল নিয়ম বা ভয় দেখিয়ে কাউকে দূরে ঠেলে দেওয়া ইসলামের শিক্ষা নয়। ভালোবাসা, দয়া ও আশার বার্তাই সফল দাওয়াতের প্রকৃত পথ।
আমাদের দাওয়াতি মজলিশ হোক ভালোবাসা ও প্রজ্ঞার আলোকধারা, যেখানে ছড়িয়ে পড়বে সহনশীলতা ও সৌজন্য, হিংসা-বিদ্বেষের কোনো ছাপ থাকবে না। কোমল ও মমতাভরা আহ্বানে মানুষ আকৃষ্ট হবে, হৃদয় উন্মুক্ত হবে আল্লাহর স্মরণে।
আসুন আমরা এমন দাওয়াতের পরিবেশ গড়ে তুলি, যাতে আমাদের ভালোবাসার পরশে দূরে সরে যাওয়া মানুষেরাও ফিরে আসে প্রতিপালকের পথে, ইসলামের পথে।
শাব্বির আহমাদ খান: শিক্ষার্থী, আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম খিলগাঁও, ঢাকা।
আরও পড়ুনউপহার দেওয়া সম্পর্কে ইসলাম১৩ আগস্ট ২০২৫