‘সংস্কার কমিশনের’ একঘেয়েমির কারণেই আমরা রাজপথে: আতাউর
Published: 26th, September 2025 GMT
পিআর পদ্ধতি নিয়ে সংস্কার কমিশনের একঘেয়েমির কারণে ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা দলগুলো বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমেছে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আওতাধীন ঢাকা-৮ আসনে ফকিরাপুল কালভার্ট রোডে আয়োজিত গণ-সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
দলটির মুখপাত্র বলেছেন, “আমাদের পক্ষে থেকে পিআর নিয়ে বারবার সংস্কার কমিশনকে আলোচনা পর্যালোচনার আহ্বান জানানো হলেও সংস্কার কমিশন বারবার জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে উপেক্ষা করার কারণেই রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি।”
“যে সিস্টেমের কারণে দেশে বারবার স্বৈরাচার তৈরি সে সিস্টেমকে জিইয়ে রাখতে জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রজনতা জীবন বিসর্জন দেয়নি। এই সিস্টেম পরিবর্তন করাই জুলাই বিপ্লবের চাহিদা। প্রচলিত পদ্ধতির নির্বাচন মানেই স্বৈরাচার তৈরির আয়োজন।”
২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে নতুন করে স্বৈরাচার তৈরির সব পথ বন্ধ করতে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের বিকল্প নাই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, “জুলাই সনদ এক বছর পর ঘোষণা করলেও এখন পর্যন্ত আইনি ভিত্তি দেওয়া হয়নি। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান করে এর ভিত্তিতে আগামী জাতীয় নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনের আগে পতিত স্বৈরাচারের বিচার দৃশ্যমান করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।”
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে গণ-সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন নগর সেক্রেটারি আলহাজ্ব আবদুল আউয়াল মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম শরীয়তুল্লাহ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা নজরুল ইসলাম, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মুহাম্মদ গোলামুর রহমান আজমসহ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও থানা শাখার নেতারা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।
পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।
কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।
আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগেপরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগেবিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’
গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে