ফিলিস্তিনিকে এখনই স্বীকৃতি দেবে না নিউজিল্যান্ড
Published: 27th, September 2025 GMT
ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো নিউজিল্যান্ডও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনিকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে বলে ধারণা হয়েছিল।
তবে দেশটি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছে, নিউজিল্যান্ড এই মুহূর্তে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে না, তবে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রতি তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরো পড়ুন:
ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট, ভিসা বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র
ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি লজ্জাজনক, গাজায় যুদ্ধ চলবে: নেতানিয়াহু
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স বলেন, “তীব্র যুদ্ধের মধ্যে, হামাস গাজার কার্যত সরকার হিসেবে রয়ে গেছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে কোনো স্পষ্টতা না থাকায় ফিলিস্তিনের ভবিষ্যত রাষ্ট্র সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে। তাই নিউজিল্যান্ডের পক্ষে এই মুহূর্তে স্বীকৃতি ঘোষণা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা আরো উদ্বিগ্ন যে, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বীকৃতির উপর জোর দেওয়া হলে, ইসরায়েল এবং হামাসকে আরো বেশি একগুঁয়ে অবস্থানে ঠেলে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা জটিল হতে পারে।”
রয়টার্স বলছে, নিউজিল্যান্ডের এই অবস্থান দেশটির ঐতিহ্যবাহী অংশীদার অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। দেশগুলো গত রবিবার ফিলিস্তিনি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও যুক্তরাজ্য এই পদক্ষেপ মাধ্যমে জাতিসংঘের ১৪০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে একত্রিত হয়েছে, যারা অধিকৃত অঞ্চল থেকে একটি স্বাধীন আবাসভূমি গঠনের ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে।
শুক্রবার নিউজিল্যান্ড সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “নিউজিল্যান্ড এমন এক সময়ে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আশা করছে যখন বর্তমান পরিস্থিতি শান্তি ও আলোচনার জন্য আরো বেশি সম্ভাবনা তৈরি করবে।”
নিউজিল্যান্ডের বিরোধী দল লেবার পার্টি সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছে, এটি দেশকে ইতিহাসের ভুল দিকে ঠেলে দেবে।
লেবার পার্টির বিদেশ বিষয়ক মুখপাত্র পিনি হেনারে বলেন, “সরকারের এমন সিদ্ধান্তে পুরো নিউজিল্যান্ড আজ হতাশ।” তার মতে, “ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিলে মধ্যপ্রাচ্যে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বা স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল য ক তর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)