মহারণের শেষটা হাসবে কে, ভারত নাকি পাকিস্তান?
Published: 28th, September 2025 GMT
সূর্যকুমার যাদব নিজেদের নিয়ে গর্ব করতেই পারেন। তার দল যেভাবে খেলছে তাতে গর্ব না করার কারণ নেই। তবে প্রতিপক্ষ পাকিস্তানকে নিয়ে যেভাবে মূল্যায়ন করলেন তা ক্রিকেটীয় দিক থেকে খানিকটা দৃষ্টিকটু বটে।
“আমার মতে, দুটি দল যদি ১৫-২০ বার মুখোমুখি হয় এবং সেই লড়াইয়ের ফল থাকে ৭-৭ বা ৮-৭, তাহলে সেটাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বলে। কিন্তু যদি ১৩-০ বা ১০-১ হয়…তবে এটি এখন আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। তবে হ্যাঁ, আমরা ওদের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলেছি।”
এখানে এটি মানে, ভারত ও পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা। পরিসংখানের বিচারে পাকিস্তানকে নিয়ে ভারতের অধিনায়কের ভাবনা এমন। পরিসংখানও তা-ই। টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি লড়াইয়ে ভারতের জয় ১২টি, পাকিস্তানের মোটে ৩টি। এমন সমীকরণ মাথায় নিয়েই আজ সন্ধ্যায় এশিয়া কাপের ফাইনালে মাঠে নামতে যাচ্ছে দুই দল। এশিয়া কাপ ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান।
ভারতের জন্য এই ম্যাচটা আরেকটা ফাইনাল। পাকিস্তানের জন্য অনেক জবাব দেয়ার। টুর্নামেন্টে ভারত তাদের সাথে হাত মেলায়নি। এই নিয়ে কত কিছু হয়ে গেল। দুই মাচেই তাদের হার। সঙ্গে গতকাল তারা ফাইনাল পূর্ববর্তী ফটোসেশনেও আসেনি। মদ্দাকথা পাকিস্তানকে পুরপুরি এড়িয়ে চলছে ভারত। যা ভালো লাগছে না তাদের। সেই সবের জবাব দিতেই পাকিস্তান প্রস্তুত আছে।
বাংলাদেশকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করার পরই মনের জোর বেড়েছে সালমান আগার, “খুবই রোমাঞ্চিত (ফাইনাল নিয়ে)। আমরা জানি আমাদের কী করতে হবে (ফাইনালে)। আমরা যে কোনো দলকে হারানোর মতো ভালো দল এবং রোববার মাঠে নেমে চেষ্টা করব তাদেরকে হারাতে।”
মাঠে জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত পাকিস্তানের পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি, “তাকে যা ইচ্ছা বলতে দিন। তারা এখনও ফাইনালে ওঠেনি, আমরাও না। যখন দুই দল ফাইনালে উঠবে, তখন দেখা যাবে। আমরা এখানে ফাইনাল জিততে, এশিয়া কাপ জিততে এসেছি। যেকোনো প্রতিপক্ষের জন্য প্রস্তুত আমরা। তাদেরকে হারাব আমরা।”
ফাইনাল ম্যাচটা হতে পারে অভিষেক শর্মা বনাম শাহিন আফ্রিদি ও সূর্যকুমার যাদব বনাম হ্যারিস রউফের লড়াই। অভিষেকের বিরুদ্ধে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি ফর্মে থাকা শাহিন। দু’টি ম্যাচেই শাহিনের প্রথম বল মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন ভারতের তরুণ ওপেনার। স্বভাবতই ফাইনালে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করবেন শাহিন। পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসা রউফ। তাকে সামলাতে হবে সূর্যকুমারকে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটার সূর্যকুমার। যদিও তাকে সেরা ফর্মে দেখা যাচ্ছে না। ফাইনালে ভারতীয় ইনিংসের অনেকটুকু তার উপর নির্ভর করবে।
১৯৮৪ সালে শুরু হওয়া এশিয়া কাপের বয়স এখন ৪১ বছর। ভারত পাকিস্তানের প্রথম ফাইনাল নিশ্চিতভাবেই অনেক বড় আয়োজন। স্নায়ুকে পাশ কাটিয়ে সাড়ে তিন ঘণ্টার লড়াইয়ে কে ভালো করল, মুখ্য সেটিই। তারাই শেষ পর্যন্ত শিরোপার হাসি হাসবে।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)