ইউনিক ইস্টার্নের মালিকসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 29th, September 2025 GMT
মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির নামে সংঘবদ্ধ প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ৪০ কোটি ৭১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ঘটনায় ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক নূর আলীসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সিআইডি জানায়, মানিলন্ডারিং অনুসন্ধানকালে জানা গেছে, ইউনিক ইস্টার্নের মালিক নূর সংঘবদ্ধভাবে প্রতি কর্মীর কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়াও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে।
২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দুই বছরে তারা সর্বমোট ৩ হাজার ৭৮৭ জন কর্মীকে মালয়েশিয়ায় প্রেরণ করে তারা। সরকার নির্ধারিত ফি ছিল ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা, কিন্তু অভিযুক্তরা জনপ্রতি প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায় করে। পাসপোর্ট খরচ, কোভিড-১৯ টেস্ট, মেডিকেল ফি ও পোশাক বাবদ অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার তথ্য পেয়েছে।
সিআইডির হিসাবে, অভিযুক্ত চক্রটি যোগসাজশে প্রতারণা করে সর্বমোট ৪০ কোটি ৭১ লাখ ৪০ হাজার ৩৭০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, যা আইন অনুযায়ী মানিলন্ডারিং অপরাধ।
মামলাটির তদন্ত বর্তমানে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগ পরিচালনা করছে। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অজ্ঞাত সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানায় সিআইডি।
ঢাকা/এমআর ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)