যে শর্তে সূর্যকুমারদের ট্রফি ফিরিয়ে দেবেন নাকভি
Published: 30th, September 2025 GMT
এশিয়া কাপের ফাইনাল শেষ হয়েছে গত রোববার রাতে। তবে মাঠের লড়াই থেমে গেলেও ভারত–পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব থামেনি।
দুবাইয়ে ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জেতে ভারত। কিন্তু আসল নাটক শুরু হয় পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে। নিয়ম অনুযায়ী এসিসির চেয়ারম্যান এবং পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভির হাত থেকেই ট্রফি নেওয়ার কথা ছিল ভারতের। কিন্তু সূর্যকুমার যাদবের দল তাঁর কাছ থেকে ট্রফি নিতে রাজি হয়নি। ফলে নাকভিও সোজা জানিয়ে দেন, সভাপতি হিসেবে তিনিই ট্রফি দেবেন, না হলে ট্রফি দেওয়া হবে না।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায়, ব্যক্তিগত পুরস্কার বিতরণের পর নাকভিসহ অতিথিরা মঞ্চ ছেড়ে চলে যান। ট্রফিটি তখন পড়ে ছিল একপাশে। পরে একজন সেটি হাতে নিয়ে ভেতরে চলে যান।
এরপর বিসিসিআই অভিযোগ তোলে, তাদের জেতা ট্রফি আর খেলোয়াড়দের পদক নাকভি হোটেলে নিয়ে গেছেন। বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া দাবি করেন, ট্রফি ও পদক যত দ্রুত সম্ভব ফিরিয়ে দিতে হবে। এখন বড় প্রশ্ন—ভারত আসলে কবে, কীভাবে পাবে নিজেদের প্রাপ্য ট্রফি আর পদক?
আরও পড়ুনসূর্যকুমার বললেন ‘ওরা ট্রফি নিয়ে পালিয়ে গেছে’৫ ঘণ্টা আগেএই প্রশ্নের কোনো আনুষ্ঠানিক উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি। তবে জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট ‘ক্রিকবাজ’ তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ট্রফি ও পদক ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নাকভি একটি শর্ত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে, যেখানে তিনি অতিথি হিসেবে ভারতের খেলোয়াড়দের হাতে ট্রফি ও পদক তুলে দেবেন। এই শর্ত মানলেই সূর্যকুমাররা ট্রফি পাবেন। তবে ক্রিকবাজের মতে, এমন আয়োজন আলোর মুখ দেখার সম্ভাবনা খুবই কম।
ক্রিকেট মাঠে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। কিন্তু এবারের এশিয়া কাপের ফাইনালে মাঠের লড়াই ছাপিয়ে বিতর্কই যেন বেশি আলোচনায় এল। দুবাইয়ে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। কিন্তু ফাইনালের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যা ঘটল, তা দেখে সবার চোখ কপালে ওঠার জোগাড়!
ট্রফি ছাড়াই উদ্যাপন করেছে ভারত.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)