বিশ্বখ্যাত ফুটবল খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নিজেকে ভালো রাখার জন্য ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে যান। নিয়ম করে প্রত্যেক ভোরে আধা ঘণ্টা মেডিটেশন করেন, সকালের খাবার নিজ হাতে তৈরি করেন। সকালে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করেন তিনি, যাতে সারাদিন এনার্জি পাওয়া যায়। তিনি মনে করেন স্বপ্ন পূরণের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা জরুরি। একদিনে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা যায় না, দিনে দিনে এই অভ্যাস রপ্ত করতে হয়। 

ভোরে ঘুম থেকে ওঠা
ভোরে ঘুম থেকে উঠলে সারাদিনে কখন কোন কাজ করবেন, সব ঠিক করে নিতে পারবেন। মেডিটেশন বা ব্যায়াম করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া পাবেন। দিনটি সুন্দর ও সাবলীলভাবে কাটাতে চাইলে ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

আরো পড়ুন:

লিভার ডিটক্সিফিকেশনের জন্য সাপ্লিমেন্ট খাওয়া কী জরুরি?

আজ বিশ্ব ফুসফুস দিবস: ফুসফুস ভালো রাখতে যা করতে পারেন

ব্যায়াম
নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য ব্যায়ামে মনোযোগ দিন। ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে অনেক ক্ষতিকর উপাদান অপসারণে সহায়তা করে ব্যায়াম। ব্যায়ামের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো শরীরের পর্যাপ্ত রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। 

সকালের নাস্তা
অনেকে সকালে নাস্তা করেন না। আবার কেউ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খেয়ে ফেলেন।দুই অভ্যাসই খারাপ। সুস্থতার জন্য সকালে নাস্তা গ্রহণ করুন। তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কখনোই খাবেন না। 

হাইড্রেটেড থাকা
শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কারণ, শরীরের কোষের সঠিক কার্যকারিতা, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়া এবং সংক্রমণ প্রতিরোধের হাইড্রেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ।

কাজের তালিকা তৈরি করে নিন
সারাদিনের কাজ কী কী-তার একটি তালিকা তৈরি করে নিন। তালিকা অনুসরন করে সময়ের কাজ সময়ের শেষ করুন।

স্বাস্থ্যকর পানীয়
শরীর সুস্থ রাখতে গ্রিন টির মতো স্বাস্থ্যকর পানীয় বেছে নিতে পারেন। গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। স্ট্রেস দূর করতে এটি দারুণ উপকারী।

সক্রিয় থাকুন
সারাদিন নিজেকে সক্রিয় রাখার চেষ্টা করতে পারেন। হাঁটা-দৌড়ানো, লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করা; এসব অভ্যাস আপনাকে সুস্থ থাকতে সহায়তা দেবে। 

ঘরে রান্না করা খাবার গ্রহণ করুন
ঘরে রান্না করা খাবার গ্রহনের চেষ্টা করুন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ করতে না চাইলে অল্প তেলে রান্না করা খাবার খান। 

ভালো ঘুম
মস্তিষ্কের জন্য একটানা ৭ ঘণ্টা ঘুম খুব জরুরি। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঘুমালে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ে। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ যকর জ বন স ব স থ যকর গ রহণ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ