আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে অংশ নেবেন নাহিদ, কাজ করবেন অবহেলিতদের শিক্ষায়
Published: 1st, October 2025 GMT
বাংলাদেশের তরুণ দৌড়বিদ ও ব্যাংকার নাহিদুল ইসলাম নাহিদ আগামী ৯ নভেম্বর ভিয়েতনামের হ্যানয়ে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে অংশ নিতে যাচ্ছেন। তিনি কয়েক বছর ধরে দেশের বিভিন্ন দৌড় প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করছেন। এবার দেশের সীমানা পেরিয়ে ভিয়েতনামের হ্যানয় আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নাহিদের এই অংশগ্রহণ কেবল তাঁর ব্যক্তিগত সাফল্যের দিক নয়; বরং বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি অনুপ্রেরণার উৎস। বিশ্বব্যাপী আয়োজিত এ ধরনের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ দেশের ক্রীড়াচর্চার প্রসার ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলবে।
নাহিদুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘দেশের মাটিতে দৌড়ানোর অভিজ্ঞতা দারুণ, কিন্তু আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেকে যাচাই করার সুযোগ পাওয়া এক ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের দৌড়বিদেরা বিশ্বমানের। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমি আমাদের সম্ভাবনা তুলে ধরতে চাই। কাজ করতে চাই অবহেলিতদের শিক্ষায়।’
নাহিদ মনে করেন, দৌড় কেবল শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যম নয়, এটি মানসিক দৃঢ়তা, শৃঙ্খলা ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরার সুযোগ পাওয়া তাঁর জন্য যেমন এক বিশাল প্রাপ্তি, তেমনই দেশের তরুণদের জন্য একটি অনুপ্রেরণাদায়ী দৃষ্টান্ত। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের তরুণেরা যে ক্রীড়া ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতা দেখাতে পারেন, নাহিদের এ অংশগ্রহণ তারই একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।
নাহিদ বলেন, ‘এরই মধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছি এবং আমার ব্যাংকের অনুমোদন ও স্পনসরশিপের জন্য আবেদনও করেছি। এতে আনুষঙ্গিক খরচসহ অন্যান্য ব্যয়ভার সহজে মেটাতে সক্ষম হব।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ শ র তর ণ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)