ইসলামী ব্যাংকের ফেসবুক পেজ উদ্ধার
Published: 3rd, October 2025 GMT
হ্যাকড হওয়ার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে পেজটি উদ্ধার সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগ।
আরো পড়ুন:
অর্থ মন্ত্রণালয়ের নথি চুরি করেছে চীনা হ্যাকার: যুক্তরাষ্ট্র
ব্যাংক হিসাব হ্যাকড করে টাকা স্থানান্তর, যুবকের ১০ বছর কারাদণ্ড
ব্যাংকটির জনসংযোগ বিভাগের প্রধান নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ভোরে পেজটি হ্যাক হয় এবং দিনভর ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের পর নিয়ন্ত্রণ ফেরত পাওয়া যায়। বর্তমানে পেজটি স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
হ্যাকড হওয়ার পর হ্যাকার গ্রুপ ‘এমএস ৪৭০ এক্স’ পেজের প্রোফাইল ও কভার ছবি পরিবর্তন করে নিজেদের লোগো যুক্ত করে। তারা একটি পোস্টে চাকরিচ্যুত কর্মীদের পুনর্বহালের দাবি তোলে, যদিও কিছু সময় পর পোস্টটি মুছে ফেলা হয়।
সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকে ব্যাপক ছাঁটাই কার্যক্রম চলছে। চার শতাধিক কর্মকর্তা বরখাস্ত হয়েছেন এবং প্রায় ৫ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পেজ হ্যাকড হওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনী ইশতেহারে জ্বালানি রূপান্তর রাখার দাবি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করছে। এসব ইশতেহারে জ্বালানি রূপান্তর রাখার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশের প্রতিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক কর্ম জোট বিডব্লিউজিইডি। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ন্যায্য রূপান্তরের দাবি তুলে ধরতে ১২ দফা নাগরিক ইশতেহার প্রকাশ করেছে তারা।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ইশতেহার প্রকাশ করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। বিডব্লিউজিইডি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সহ-আয়োজক হলো বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট ফর লেবার স্টাডিজ (বিলস), উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্ম জোট (ক্লিন), এথিক্যাল ট্রেড ইনিশিয়েটিভ (ইটিআই বাংলাদেশ), লইয়ার্স ফর এনার্জি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (লীড), মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও রিগ্লোবাল।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দলগুলো সাহসী, দীর্ঘমেয়াদি অঙ্গীকার গ্রহণ করুক, যাতে করে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানো যায়। সরকার ও রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার ও ভূমিকার ওপরই জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ইতিবাচক পরিবর্তন নির্ভর করে।
নাগরিক ইশতেহারে বলা হয়, দেশে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে ৯৯ দশমিক ২৫ শতাংশ পরিবারে। কিন্তু দীর্ঘদিনের অযৌক্তিক জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভরতা, অস্বচ্ছ চুক্তি এবং অবাস্তব মহাপরিকল্পনার কারণে দেশ বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি, পরিবেশগত অবনতি এবং জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে পড়েছে। ইশতেহারটি পাঠ করেন ক্লিনের নেটওয়ার্ক অ্যাডভাইজার মনোয়ার মোস্তফা। তিনি বলেন, কার্বন নিঃসরণ দ্বিগুণ হয়েছে। এতে বাংলাদেশের বায়ুর মান বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণের মধ্যে পড়ে গেছে।
বিডব্লিউজিইডির সদস্যসচিব হাসান মেহেদী বলেন, গত ১৬ বছরে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ক্ষতি হয়েছে ২ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা, যার ফলে সরকারকে ২ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে। সাধারণ মানুষের অর্থ মূলত জীবাশ্ম জ্বালানিতে যুক্ত স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর হাতে চলে গেছে।
নাগরিক ইশতেহারের ১২ দফার মধ্যে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক অভিঘাত মোকাবিলা, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘জাতীয় জ্বালানি নীতি’ প্রণয়ন করতে হবে। সব ধরনের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) ও বাস্তবায়ন চুক্তি (আইএ) তথ্য অধিকার আইনের আওতায় উন্মুক্ত করতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানি, বিশেষত কয়লা, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের ভর্তুকি ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে হবে, যাতে শিল্পকারখানা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসিক খাত দ্রুততর সময়ে সাশ্রয়ী নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারে উৎসাহিত হয়। কয়লা, গ্যাস ও তেলভিত্তিক (জীবাশ্ম জ্বালানি) নতুন কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া যাবে না। পুরোনো ও অকার্যকর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, নতুন কোনো এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া যাবে না। ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ, ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করার বিষয়টি সব নীতিমালা, খাতভিত্তিক পরিকল্পনা ও পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দেশের জ্বালানি ব্যবহার ও দূষণের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উৎস হলো পরিবহন খাত। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ খাতের সবুজায়নের উদ্দেশ্যে বৈদ্যুতিক যানবাহনের (ইভি) আমদানি শুল্ক ও অন্যান্য কর ইঞ্জিনচালিত যানবাহনের তুলনায় কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ কমাতে হবে। জাতীয় গ্রিডের আধুনিকায়ন করে স্মার্ট গ্রিডে রূপান্তরের উদ্দেশ্যে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি বিনিয়োগ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।