আর্জেন্টিনার উৎসবের রাতে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ ব্রাজিল, ইতিহাসে প্রথম
Published: 5th, October 2025 GMT
জয় ছাড়া বিকল্প ছিল না। আর গোল ছাড়া জেতাও যায় না।
স্পেনের বিপক্ষে ‘বাঁচা-মরার’ ম্যাচে এই গোলটাই পেল না ব্রাজিল। উল্টো হজম করেছে। গতকাল রাতে চিলির সান্তিয়াগোয় ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে স্পেনের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে ব্রাজিল।
এই হারে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছে ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২০ দল। আসরের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নিল এই প্রথম। একই রাতে গ্রুপসেরা হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দল।
চিলির ন্যাশিওনাল জুলিও মার্তিনেজ স্টেডিয়ামে ব্রাজিল ‘সি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচটি খেলতে নেমেছিল দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায়। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর সঙ্গে ২-২ ড্র আর মরক্কোর কাছে ২-১ ব্যবধানের হারে হাতে ছিল মাত্র এক পয়েন্ট। স্পেনও এক ড্র এক হারে খাদের কিনারে দাঁড়িয়েছিল। দুই দলের জন্যই ছিল ‘ডু অর ডাই ম্যাচ’।
খেলায় দুই দলই ছিল আক্রমণাত্মক। ব্রাজিল ১৪টি এবং স্পেন মোট ১৩টি শট নিয়েছে। তবে ব্রাজিলের (৩) তুলনায় স্পেনের শট লক্ষ্যে ছিল বেশি (৬)। ৪৭তম মিনিটে তেমনই এক শটে স্পেন এগিয়ে যায় ইকার ব্রাভোর গোলে। শেষ পর্যন্ত এই গোল সম্বল করেই ম্যাচ জিতেছে স্পেন।
ম্যাচ জিতেও অবশ্য স্পেনের পরের পর্বে ওঠা নিশ্চিত হয়নি। ‘সি’ গ্রুপ থেকে ৬ ও ৫ পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে মরক্কো ও মেক্সিকো। ২৪ দলের টুর্নামেন্টে ৬ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপের সঙ্গে পরের পর্বে খেলবে সেরা চার তৃতীয় স্থানধারী। স্পেন আপাতত সেই তালিকায় থেকে অপেক্ষায় থাকল।
ব্রাজিলের সবচেয়ে বাজেব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিচ্ছে তিন ম্যাচে দুই হার এক ড্রয়ের হতাশাকে সঙ্গী করে। ১৯৭৭ সালে ফিফা যুব চ্যাম্পিয়নশিপ হিসেবে চালু হওয়া অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে এবার নিয়ে ২০তম বার খেলল ব্রাজিল। আগের ১৯ অংশগ্রহণে ৫ বার চ্যাম্পিয়ন এবং চারবার রানার্সআপ হয়েছে দলটি। সবচেয়ে বাজে ফল ছিল ২০০৭ আসরে—দ্বিতীয় রাউন্ড। এবার তা ছাপিয়ে গ্রুপ পর্বে চতুর্থ হয়ে বিদায়।
আর্জেন্টিনা গ্রুপসেরা‘ডি’ গ্রুপে থাকা আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দল প্রথম ম্যাচে কিউবাকে ৩-১ আর দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে আগেই শেষ ষোলোর পথে এগিয়েছিল।
গতকাল রাতে ইতালিকে ১-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপসেরা হয়েছে দলটি। ৭৪ মিনিটে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন গোরোসিতো।
‘ডি’ গ্রুপে আর্জেন্টিনার পয়েন্ট ৯, দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইতালির ৪। অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ৬ বারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা সর্বশেষ দুই আসরে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিল। দলটি সর্বশেষ শিরোপা জিতেছে ২০০৭ সালে।
এ ছাড়া ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে ‘এ’ গ্রুপ থেকে জাপান ও চিলি এবং ‘বি’ গ্রুপ থেকে ইউক্রেন ও প্যারাগুয়ে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
নবান্নের যে মেলায় এক দিনে কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়
রঙিন কাপড়ের বিশাল প্যান্ডেল বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। প্যান্ডেলের নিচে থরে থরে সাজানো বড় বড় রুই, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, বোয়ালসহ নানা প্রজাতির মাছ। কেউ মাছের দরদাম করছেন, কেউবা কিনছেন। নবান্ন উৎসব উপলক্ষে জয়পুরহাটের কালাই পৌর শহরের পাঁচশিরা বাজারে এই মাছের মেলা বসেছে।
প্রতিবছরের মতো আজ মঙ্গলবার এক দিনের জন্য এ মাছের মেলা বসে। এবার মেলায় প্রচুর মাছের আমদানি হয়। দাম একটু চড়া বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা জানান, এক দিনের মেলায় প্রায় কোটি টাকার মাছ বেচাবিক্রি হয়। মেলা ঘিরে সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন ভিড় করেন মেলা প্রাঙ্গণে। মেলার দিনে এলাকার লোকজন জামাইদের আমন্ত্রণ করা হয়। এ জন্য মেলাটি ‘জামাই মেলা’ নামেও পরিচিত।
মেলার আয়োজক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০০ সাল থেকে প্রতিবছর পঞ্জিকা অনুযায়ী অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম দিনে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে এ মেলা বসে। পাঁচশিরা বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরাই মূলত এ মেলার আয়োজন করেন। মেলাকে কেন্দ্র করে কালাই পৌর শহরে মূলগ্রাম, দুরঞ্জ, আঁওড়া, সড়াইলসহ উপজেলার পুনট, মাদাই, পাঁচগ্রাম, মাদারপুর, বেগুনগ্রাম, হতিয়ার, ঝামুটপুর, হাতিয়র, মাত্রাইসহ আশপাশের ২৫ থেকে ৩০টি গ্রামে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। মেলা উপলক্ষে এসব গ্রামের জামাই ও স্বজনদের আগে থেকেই নিমন্ত্রণ জানানো হয়। জামাইদের মধ্যে বড় মাছ কেনার প্রতিযোগিতা চলে। এ ছাড়া দূরদূরান্ত থেকে লোকজন মেলায় মাছ কিনতে আসেন।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার মাছের আমদানি বেশি। দামও একটু বেশি। আকারভেদে সিলভার কার্প প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৯০০ টাকা, বিগহেড কার্প ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, রুই ৪০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা এবং কাতলা প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মেলায় সর্বোচ্চ ৩০ কেজি ওজনের সিলভার কার্প মাছ উঠেছে।
মেলায় মাছ কিনতে এসেছেন কালাই পৌর শহরের মূলগ্রামের সুরেষ চন্দ্র। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর মেলায় আসি। পছন্দসই মাছ কিনে নিয়ে যাই। এবার মেলায় মাছের দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। আমি ১৯ কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ ২৪ হাজার ৭০০ টাকা দিয়ে কিনেছি।’
উপজেলার আহমেদাবাদের হাতিয়র গ্রাম থেকে মেলায় বেড়াতে এসেছেন নার্গিস বেগম। তিনি বলেন, ‘পাঁচশিরা বাজারের মাছের মেলার নাম অনেক আগে থেকেই জানি। কিন্তু কখনো আসা হয়নি। এবার স্বামীকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। বড় বড় মাছ দেখছি। অনেক ভালো লাগছে। মেলা থেকে পছন্দের একটি বড় মাছ ৭ হাজার ৩০০ টাকায় কিনেছি।’
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার শফিকুল ইসলামের শ্বশুরবাড়ি কালাইয়ের মাত্রাই গ্রামে। তিনি বলেন, ‘আমি শ্বশুরবাড়িতে এসেছি। এবার মেলায় বড় বড় মাছ উঠেছে। আমি মেলা থেকে ৬ কেজি ওজনের একটি কাতলা মাছ কিনেছি।’
মেলা ঘিরে সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন ভিড় করেন মেলা প্রাঙ্গণে। মঙ্গলবার সকালে পাচশিরা বাজারে