খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া বাজারে আগুন লেগে অন্তত ১৩টি দোকান পুড়ে গেছে। গতকাল শনিবার গভীর রাতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফায়ার সার্ভিসের মাটিরাঙ্গা স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে বাজারে আগুন লাগার খবর আসে। এরপর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে।

ফায়ার সার্ভিস মাটিরাঙ্গা স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

হারুন বলেন, পুড়ে যাওয়া দোকানগুলো জ্বালানি, আসবাব, গাড়ির যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন পণ্যের। দোকানগুলোর মধ্যে একটি পাকা, দুটি আধা পাকা এবং বাকিগুলো কাঁচাঘরে ছিল।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ফেসবুক পেজেও পোস্ট দিয়ে আগুনের বিষয়টি জানানো হয়। বিজিবি জানায়, ঘটনার পরপর স্থানীয় বাসিন্দা, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস যৌথভাবে আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। আগুনে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিজিবির ধারণা, বাজারে থাকা একটি গাড়ির ওয়ার্কশপ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট বা সিগারেটের আগুন থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, আগুনে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মালামালসহ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আগ ন ন

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্ঘটনায় মা হারানো শিশুটির কান্না থামছে না

‘রাতে হঠাৎ ঘুমঘুম চোখে কান্না শুরু করে। একবার কান্না শুরু হলে তা আর থামতেই চায় না। তখন মাঝরাতে তাকে বাইরে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করতে হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত না ঘুমায়, ততক্ষণ নিজের সঙ্গে রাখতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে কোনোরকমে মাকে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করি। তবে কান্না থামাতে পারছি না।’

কথাগুলো বলছিলেন এক বছরের শিশু সাফওয়ান ইসলামের বাবা মো. ইমন ইসলাম। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সীতাকুণ্ড পৌর সদরের মৌলভীপাড়া এলাকায় রেললাইনে বিকল হয়ে পড়া একটি সিএনজি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয় একটি ট্রেন। এ সময় শিশু সাফওয়ানের মা সানজিদা সুলতানা (২৫) ও নানি মাহমুদা বেগমের (৪৫) মৃত্যু হয়। এর পর থেকে সাফওয়ানকে সারাক্ষণ নিজের কাছে রাখছেন তার বাবা ইমন।

ইমনের বাড়ি সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের ঘাটগড় এলাকায়। তিনি একটি রড তৈরির কারখানায় ট্রান্সপোর্ট সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত। যে জায়গাটিতে দুর্ঘটনা হয়েছিল তা ইমনের শ্বশুরবাড়ি থেকে মাত্র চার শ গজ দূরে। পুলিশ জানায়, রেলক্রসিংটি অবৈধ। ঘটনার দিন সেখানে কোনো গেটম্যানও ছিল না।

আমরা কত আনন্দ করে ছেলের জন্মদিন পালন করেছি।  অথচ এক মাস না যেতেই আমার ছেলেটি তার মাকে হারাল। গোছানো সংসারটা যেন তছনছ হয়ে গেল।শিশু মো. ইমন ইসলামের বাবা।

গতকাল শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ইমনের বাড়িতে স্বজনদের ভিড়। এক পাশে ছেলে সাফওয়ানকে কোলে নিয়ে বসে আছেন তিনি। অনেকেই ছেলের এ অবস্থা দেখে ইমনকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিচ্ছেন। সাফওয়ান চোখ মেলে আশপাশে তাকিয়ে দেখছে। আর কিছুক্ষণ পরপরই কান্না করছে।

ইমন প্রথম আলোকে বলেন, মা মারা যাওয়ার দিন বাড়িতে অনেক লোকের ভিড় থাকায় সাফওয়ান তেমন কান্না করেনি। তবে রাত হতেই মাকে না পেয়ে কান্না শুরু করে। এর পর থেকে প্রতি রাতেই কান্না করে। দিনের বেলায় বাড়িতে মানুষের ভিড় থাকায় তেমন কান্না করে না। তবে যখন বুকের দুধ খাওয়ার সময় হয়, তখন আর কান্না থামিয়ে রাখা যায় না।

ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশাটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের মৌলভী পাড়া এলাকায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ