বন্দরে ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী সর্বস্ব লুট করে নিল দুর্বৃত্তরা
Published: 5th, October 2025 GMT
বন্দরে ভাঙ্গারী মালামাল বিক্রয় করার কথা বলে ভাঙ্গারী বিক্রেতা জুয়েল (২৮)কে নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে বেদম ভাবে পিটিয়ে নগদ টাকা, ভেনগাড়ী ও একটি এনড্রয়েট মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
স্থানীয়রা আহত ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেছে।
এ ঘটনায় আহত ব্যবসায়ী পক্ষে শরিফ মিয়া বাদী হয়ে ঘটনার ওই দিন দুপুরে অজ্ঞাত নামা ৪/৫ জনকে আসামী করে বন্দর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এর আগে রোববার (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় বন্দর থানার ২৬ নং ওয়ার্ডের ঢাকেরশ্বরী ঈদগাহ সামনে এ ঘটনাটি ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে, আহত ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী জুয়েল দীর্ঘ দিন ধরে ভাঙ্গারী মালামাল ক্রয় করে সোনারগাঁ থানার কাঁচপুরস্থ চাঁদ মহল সিনেমা হলের পাশে শরিফ মিয়া দোকানে বিক্রি করে আসছিল। প্রতিদিনের ন্যায় রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী জুয়েল ভাঙ্গারী মালামাল ক্রয় করার উদ্দেশ্য বন্দর থানার ২৬ নং ওয়ার্ডের ঢাকেরশ্বরী ঈদগাহ সামনে আসে।
পরে ৪/৫ দুঃস্কৃতিকারি ভাঙ্গারী মালামাল বিক্রি করার কথা বলে নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে বেদম ভাবে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে মালামাল ক্রয়ের নগদ ৯ হাজার টাকা, ১টি ব্যাটারী চালিত ভেনগাড়ী ও ১টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তার চিৎকারের শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে আহতকে উদ্ধার করে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব যবস য় ন র য়ণগঞ জ ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত সুদানের এল-ফাশার, ৮৯ হাজার মানুষ বাস্তুচু
সুদানের উত্তর দারফুর প্রদেশের রাজধানী এল-ফাশার এখন এক মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) দখলে নেওয়ার পর শহরটিতে শুরু হয়েছে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের তথ্যমতে, শত শত নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, নারীরা হয়েছেন যৌন সহিংসতার শিকার, ঘরবাড়ি ও শরণার্থী ক্যাম্পে চলছে অগ্নিসংযোগ।
একসময় প্রাণচঞ্চল এই শহর এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় হাসপাতাল, স্কুল, এমনকি আশ্রয়কেন্দ্রও আরএসএফের হামলা থেকে রেহাই পায়নি। শুধু একটি হাসপাতালেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত পাঁচ শতাধিক মানুষ। খবর আলজাজিরা ও আনাদোলুর।
সুদানে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে, আরএসএফ গত মাসে এল-ফাশার দখল করার পর থেকে ‘নৃশংস হামলা’ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত শনিবার (৮ নভেম্বর) সুদানে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিনিধি লি ফাং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে বলেন, “এল-ফাশার শোকের শহরে পরিণত হয়েছে।”
তিনি বলেন, “১৮ মাস ধরে অবরোধ ও যুদ্ধে বেঁচে থাকা বেসামরিক নাগরিকরা এখন অকল্পনীয় মাত্রার নৃশংসতা সহ্য করছে।”
এই সতর্কতা এমন সময় এলো যখন সাহায্যকারী গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে যে, এল-ফাশার থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার মানুষ তাওয়িলা শহরে ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। অনেকেরই খাদ্য, ওষুধ, আশ্রয় সামগ্রী এবং মানসিক সহায়তার তীব্র প্রয়োজন।
রবিবার (৯ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, এল-ফাশার শহর থেকে নতুন করে আরো ৭ হাজারেরও বেশি বেসামরিক মানুষ পালিয়েছে। যার ফলে গত মাসে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ কর্তৃক শহরটি দখলের পর থেকে মোট বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮৯ হাজারে পৌঁছেছে।
জাতিসংঘের সংস্থাটির তথ্যানুসারে, ৫ থেকে ৮ নভেম্বরের মধ্যে এল-ফাশার থেকে আরো ৭ হাজার ৭৫ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বাস্তুচ্যুতরা উত্তর দারফুরের তাওয়িলা, মেলিট এবং সারাফ ওমরা সহ একাধিক এলাকায় পালিয়ে গেছে।
আইওএম জানায়, ২৬ অক্টোবর আরএসএফ এল-ফাশার দখলের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮৮ হাজার ৮৯২ জন লোক শহর ছেড়ে পালিয়েছে। আরএসএফের দখলের আগে শহরটির জনসংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার ছিল।
গত ২৮ অক্টোবর ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক গবেষণাগারের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, এল-ফাশারে ‘গণহত্যার’ প্রমাণ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে স্যাটেলাইট ছবিতে দৃশ্যমান রক্তের স্রোতও রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক গত শুক্রবার বলেন, এখনও আটকে থাকা বেসামরিক নাগরিকদের শহরটি থেকে বের হতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমি আশঙ্কা করছি যে, শহরের মধ্যে হত্যযজ্ঞ, ধর্ষণ ও জাতিগতভাবে সহিংসতার মতো জঘন্য নৃশংসতা অব্যাহত রয়েছে।”
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদানের সেনাবাহিনী (এসএএফ) ও আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের মধ্যে ক্ষমতা দখল নিয়ে সংঘাত শুরু হয়, যা পরিণত হয় পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধে। জাতিসংঘ এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২০ হাজারেও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং দেড় কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
দুর্ভোগের মাত্রা এতটাই বিস্তৃত যে জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মহলের বেশ কয়েকটি মধ্যস্থতা সংঘাত শেষ করতে ব্যর্থ হয়েছে।