জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ২ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৩২৪ টাকার সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগে সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার দুদকের উপসহকারী পরিচালক আবু মোহাম্মদ আনোয়ারুল মাসুদ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানের নামে ৬টি ব্যাংকের ৮টি হিসাবে মোট ২৪ কোটি ৮৯ লাখ ৭১ হাজার ৬৫৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এর মধ্যে ১২ কোটি ৮৯ লাখ ১ হাজার ১৪৪ টাকা জমা এবং ১২ কোটি ৭০ লাখ ৫০৯ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক বলেন, এই অর্থ লেনদেনের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে।

দুদক বলছে, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর মোট বৈধ সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৬ টাকা। আর তাঁর জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৩২৪ টাকা।

এদিকে উবায়দুল মোকতাদিরের স্ত্রী ফাহিমা খাতুন, সাবেক মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের বিরুদ্ধেও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৫০ লাখ ২ হাজার ৬০১ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। ফাহিমা খাতুনের নামে–বেনামে আরও সম্পদ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে দুদক। তাই তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪–এর ২৬(১) ধারায় সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারির অনুমোদন দিয়েছে দুদক।

উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত বছরের ৩১ অক্টোবর রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পর থেকে কারাগারে বন্দী আছেন তিনি। উবায়দুল মোকতাদিরের বিরুদ্ধে ঢাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হত্যাসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

লিও তলস্তয়ের গ্রামে

আমি এখন যে গ্রামে এসেছি, সেই গ্রামে ১৮২৮ সালে লেখক লিও তলস্তয় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রাশিয়ার ইয়াস্নায়া পলিয়ানা নাম গ্রামটির। এটি আসলে তাঁদের পারিবারিক জমিদারির একটি অংশ। এখানে তিনি জীবনের অনেকখানি সময় কাটিয়েছেন। এখানেই লিখেছেন অমর উপন্যাস ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’, ‘আনা কারেনিনা’ এবং অসংখ্য গল্প।

তলস্তয়কে আইন পড়তে কাজান শহরে পাঠানো হয়েছিল কিন্তু পড়তে তাঁর ভালো লাগেনি। জমিদারি ছিল, তাই রোজগারের চিন্তাও করতে হয়নি। মাঝখানে সন্তানদের পড়ালেখার জন্য আট বছর মস্কোতে একটি বাড়ি কিনে বসবাস করেছিলেন।

লিও তলস্তয় শেষ জীবনে আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকেছিলেন এবং খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন। একসময় গৃহত্যাগ করেছিলেন। ১৯১০ সালে ৮২ বছর বয়সে আস্তাপোভো রেলস্টেশনে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে একাকী, আত্মীয়, বন্ধু থেকে দূরে, নীরবে তিনি দেহত্যাগ করেন। এরপর তাঁকে ইয়াস্নায়া পলিয়ানায় এনে সমাহিত করা হয়।

ইয়াস্নায়া পলিয়ানা গ্রামে আমি যখন পৌঁছালাম, তখন রোদ ঝলমল করছে। গত কয়েক দিন খুব বৃষ্টি পড়েছে মস্কো শহরে। মস্কো থেকে আমাকে পাড়ি দিতে হয়েছে ২২০ কিলোমিটার। সরাসরি মস্কো থেকে তলস্তয়ের গ্রামে আসার কোনো ট্রেন বা বাস নেই। আমাকে ট্রেনে করে আসতে হয়েছে প্রথমে তুলা শহরে৷

ট্রেনে করে আসার পথে রাশিয়ার সবুজ গ্রামের যে রূপ আমি দেখেছি, তার তুলনা হয় না। পথের পাশে ফুটে আছে হলুদ বুনো ফুল আর হঠাৎ হঠাৎ করে একটা বা দুটো দোচালা বাড়ি। মাঝে পড়ে গেল একটা নদী, আবার এসে গেল ঘন সবুজ জঙ্গল। এমন অসামান্য প্রকৃতি যে দেশের আছে, সে দেশের প্রতি এমনিতেই মায়া জন্মে যায়।

রাশিয়ার ইয়াস্নায়া পলিয়ানা গ্রামে ১৮২৮ সালে লেখক লিও তলস্তয় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এটি তাঁদের পারিবারিক জমিদারির একটি অংশ। এখানে তলস্তয় জীবনের অনেকখানি সময় কাটিয়েছেন। এখানেই লিখেছেন অমর উপন্যাস ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’, ‘আনা কারেনিনা’।মাঝখানে ধূসর লম্বা পথ আর দুপাশে ঘন বনানী

সম্পর্কিত নিবন্ধ