রংপুর-গাইবান্ধায় জনস্বাস্থ্য নিয়ে নতুন উদ্বেগ
Published: 8th, October 2025 GMT
উত্তরবঙ্গে রংপুর ও গাইবান্ধার মতো জেলায় মানুষের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপস্থিতি শনাক্তের ঘটনায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এর আগে দেশের ১৪টি জেলায় অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হলেও রংপুরে এই প্রথম সংক্রমণ দেখা দিল। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এই জীবাণু ছড়ানোর কারণ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সময়োপযোগী। তবে এটিও বলতে হয় যে অ্যানথ্রাক্সের মতো পুরোনো রোগ মোকাবিলায় আমাদের নজরদারি, সতর্কতা ও সমন্বিত উদ্যোগ এখনো যথেষ্ট নয়।
অ্যানথ্রাক্সের মতো রোগ সাধারণত মেহেরপুর বা সিরাজগঞ্জের মতো কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। এখন রংপুরের পীরগাছা, মিঠাপুকুর এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অর্ধশতাধিক মানুষের শরীরে উপসর্গ দেখা যাওয়ার ঘটনা এ অঞ্চলের জনস্বাস্থ্যঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে, অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু ১০০ বছর পর্যন্ত মাটিতে টিকে থাকতে পারে। যখন গরু, ছাগল বা মহিষ চারণের সময় কচি ঘাসের সঙ্গে মাটি গ্রহণ করে, তখন তারা সংক্রমিত হয়। এরপর এই আক্রান্ত প্রাণীর মাংস, রক্ত বা পশমের সংস্পর্শে এলেই মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্সের সংক্রমণ ঘটে। ওই সব এলাকায় গবাদিপশু কোথা থেকে আসছে, সেটি জানার চেষ্টা করছেন রোগতত্ত্ববিদেরা। এর মাধ্যমে হয়তো সংক্রমণের উৎস এবং তা নতুন এলাকায় ছড়ানোর কারণ জানা সম্ভব হবে।
অ্যানথ্রাক্স যেহেতু প্রাথমিকভাবে একটি প্রাণিজ রোগ, তাই এর মোকাবিলায় শুধু স্বাস্থ্য বিভাগ নয়, প্রাণিসম্পদ বিভাগকেও সমানভাবে সক্রিয় হতে হবে। রংপুর-গাইবান্ধা অঞ্চলে গবাদিপশু কোথা থেকে আসে, সেই সরবরাহ শৃঙ্খলে কঠোর নজরদারি এবং নতুন এলাকায় প্রবেশের আগে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। আক্রান্ত প্রাণীর লক্ষণ (যেমন জ্বর, শ্বাসকষ্ট, আলকাতরার মতো কালো রক্ত বের হওয়া) এবং মানুষের ত্বকের ক্ষতে সংক্রমণ (কালো ঘা) দেখা দেওয়ার পর দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এই রোগ দ্রুত প্রাণী থেকে মানুষে ছড়ায়, তাই আক্রান্ত পশুর দ্রুত টিকাদান ও চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য জরুরি সাধারণ জনগণ, কৃষক ও পশু পালনকারীদের মধ্যে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা। অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত পশু জবাই না করা এবং তার মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্যও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
অ্যানথ্রাক্স নিয়ে আমাদের আতঙ্কিত হওয়ার চেয়ে সতর্ক ও সচেতন হওয়া জরুরি। দেশের পুরোনো ও নতুন অ্যানথ্রাক্স-প্রবণ এলাকায় নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ যথেষ্ট নয়। নতুন করে সংক্রমণের কারণ অনুসন্ধানের ফলাফল দ্রুত প্রকাশ করে সে অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে কার্যকর প্রতিরোধব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এর জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ বিভাগকে সমন্বিতভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে। তা করতে গিয়ে সময়ক্ষেপণ করার সুযোগ নেই।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুর-গাইবান্ধায় জনস্বাস্থ্য নিয়ে নতুন উদ্বেগ
উত্তরবঙ্গে রংপুর ও গাইবান্ধার মতো জেলায় মানুষের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপস্থিতি শনাক্তের ঘটনায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এর আগে দেশের ১৪টি জেলায় অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হলেও রংপুরে এই প্রথম সংক্রমণ দেখা দিল। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এই জীবাণু ছড়ানোর কারণ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সময়োপযোগী। তবে এটিও বলতে হয় যে অ্যানথ্রাক্সের মতো পুরোনো রোগ মোকাবিলায় আমাদের নজরদারি, সতর্কতা ও সমন্বিত উদ্যোগ এখনো যথেষ্ট নয়।
অ্যানথ্রাক্সের মতো রোগ সাধারণত মেহেরপুর বা সিরাজগঞ্জের মতো কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। এখন রংপুরের পীরগাছা, মিঠাপুকুর এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অর্ধশতাধিক মানুষের শরীরে উপসর্গ দেখা যাওয়ার ঘটনা এ অঞ্চলের জনস্বাস্থ্যঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে, অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু ১০০ বছর পর্যন্ত মাটিতে টিকে থাকতে পারে। যখন গরু, ছাগল বা মহিষ চারণের সময় কচি ঘাসের সঙ্গে মাটি গ্রহণ করে, তখন তারা সংক্রমিত হয়। এরপর এই আক্রান্ত প্রাণীর মাংস, রক্ত বা পশমের সংস্পর্শে এলেই মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্সের সংক্রমণ ঘটে। ওই সব এলাকায় গবাদিপশু কোথা থেকে আসছে, সেটি জানার চেষ্টা করছেন রোগতত্ত্ববিদেরা। এর মাধ্যমে হয়তো সংক্রমণের উৎস এবং তা নতুন এলাকায় ছড়ানোর কারণ জানা সম্ভব হবে।
অ্যানথ্রাক্স যেহেতু প্রাথমিকভাবে একটি প্রাণিজ রোগ, তাই এর মোকাবিলায় শুধু স্বাস্থ্য বিভাগ নয়, প্রাণিসম্পদ বিভাগকেও সমানভাবে সক্রিয় হতে হবে। রংপুর-গাইবান্ধা অঞ্চলে গবাদিপশু কোথা থেকে আসে, সেই সরবরাহ শৃঙ্খলে কঠোর নজরদারি এবং নতুন এলাকায় প্রবেশের আগে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। আক্রান্ত প্রাণীর লক্ষণ (যেমন জ্বর, শ্বাসকষ্ট, আলকাতরার মতো কালো রক্ত বের হওয়া) এবং মানুষের ত্বকের ক্ষতে সংক্রমণ (কালো ঘা) দেখা দেওয়ার পর দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এই রোগ দ্রুত প্রাণী থেকে মানুষে ছড়ায়, তাই আক্রান্ত পশুর দ্রুত টিকাদান ও চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য জরুরি সাধারণ জনগণ, কৃষক ও পশু পালনকারীদের মধ্যে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা। অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত পশু জবাই না করা এবং তার মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্যও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
অ্যানথ্রাক্স নিয়ে আমাদের আতঙ্কিত হওয়ার চেয়ে সতর্ক ও সচেতন হওয়া জরুরি। দেশের পুরোনো ও নতুন অ্যানথ্রাক্স-প্রবণ এলাকায় নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ যথেষ্ট নয়। নতুন করে সংক্রমণের কারণ অনুসন্ধানের ফলাফল দ্রুত প্রকাশ করে সে অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে কার্যকর প্রতিরোধব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এর জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ বিভাগকে সমন্বিতভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে। তা করতে গিয়ে সময়ক্ষেপণ করার সুযোগ নেই।