পুঁজিবাজারে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে তালিকাভুক্ত ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

মিউচুয়াল ফান্ড খসড়া বিধিমালার ওপর বিএসইসির মতামত আহ্বান

বিএসআরএম ও বিএসআরএম স্টিলের পর্ষদ সভা ১৮ অক্টোবর

রবিবার (১২ অক্টোবর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে শনিবার (১১ অক্টোবর) ডেসকোর পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেওয়ার জন্য কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ১৭ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় করা হবে। এজন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ নভেম্বর।

২০২৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে ডেসকোর শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে (৩.

১৫) টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল (১২.৭২) টাকা।

এদিকে, সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৫.৯৩ টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে কোম্পানির এনওসিএফপিএস ছিল ১৫.৪৯ টাকা।

২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে ডেসকোর শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৫.৩৩ টাকা।

এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেনের কোনো মূল্য সীমা থাকবে না।

ঢাকা/এনটি/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ স ববছর র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্ব ডিম দিবস-২০২৫: ডিম দশে দশ

‘ডিমে আছে প্রোটিন, ডিম খাই প্রতিদিন’—এ স্লোগান সামনে রেখে প্রতিবছরের মতো এ বছরও অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডিম দিবস-২০২৫। এই দিবসের উদ্দেশ্য হলো, মানুষকে ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সচেতন করা, নিয়মিত ডিম খাওয়ায় উৎসাহ দেওয়া এবং ডিম নিয়ে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণাগুলো দূর করা।

১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা শহরে আন্তর্জাতিক ডিম কমিশন অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবারকে বিশ্ব ডিম দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকে সারা পৃথিবীতে দিনটি উদ্‌যাপিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল এবং ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন (বাংলাদেশ শাখা) নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আমাদের শরীর প্রতিদিন প্রতি কেজি ওজনের জন্য প্রায় এক গ্রাম আমিষ চায়। সেই আমিষের সবচেয়ে সহজ, নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী উৎস হলো ডিম। চলুন দেখি কেন বলা হয় ‘ডিম দশে দশ’।

১. ডিম এককথায় পরিপূর্ণ খাবার

একটি ডিম থেকে সাধারণত ৭৭ কিলো ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। সকালের নাশতায় একটি ডিম সারা দিনের পুষ্টি চাহিদার অনেকখানি পূরণে সহায়তা করে। একটি ডিমে থাকে প্রায় ৬ দশমিক ৩ গ্রাম উৎকৃষ্ট মানের আমিষ এবং ১৩টির বেশি পুষ্টি উপাদান। ভিটামিন এ, ডি, ই, কে, বি৬, বি১২, ফলিক অম্ল, কোলিনসহ নানা ভিটামিনের পাশাপাশি ডিমে আছে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। হৃদ্‌যন্ত্র, মস্তিষ্ক ও ত্বকের জন্য এ উপাদানগুলো খুবই উপকারী। ডিমের মধ্যে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিংকের মতো কিছু খনিজ পদার্থও রয়েছে। এসব বিশেষ পুষ্টি উপাদান থাকার কারণেই ডিমকে বলা হয় পরিপূর্ণ খাবার বা ‘সুপারফুড’।

২. ডিম প্রাকৃতিক আমিষের উৎকৃষ্ট উৎস

মানবদেহ গঠনকারী প্রধান উপাদান হলো আমিষ। তাই প্রতিদিনের খাদ্যে পর্যাপ্ত আমিষ থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিম আমিষের একটি চমৎকার উৎস। ডিমে ৯‍টি অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিডসহ (আমিষের মূল উপাদান) ১৮টি গুরুত্বপূর্ণ অ্যামিনো অ্যাসিড সঠিক অনুপাতে বিদ্যমান। এই আমিষ শরীরে নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হাড় মজবুত রাখে।

৩. ডিম হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করে

উচ্চ ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন (এইচডিএল) প্রায়ই ভালো কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত। যাঁদের এইচডিএলের মাত্রা বেশি, তাঁদের সাধারণত হৃদ্‌রোগ ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি কম থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ছয় সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন দুটি ডিম খাওয়ার ফলে এইচডিএলের মাত্রা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণত খারাপ কোলেস্টেরল হলো নিম্ন ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন (এলডিএল)। ২ লাখ ৬৩ হাজার ৭৩৮ জনের ওপর করা ১৭টি গবেষণা রিপোর্টে দেখা গেছে যে ডিম খাওয়ার সঙ্গে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকির কোনো সম্পর্ক নেই।

৪. ডিম ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎকৃষ্ট উৎস

ওমেগা-৩ হলো একধরনের ভালো চর্বি। এটি হৃদ্‌যন্ত্র, মস্তিষ্ক ও চোখের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মানবশরীর নিজ থেকেই সীমিত পরিমাণে ওমেগা-৩ উৎপাদন করে, তাই বিভিন্ন খাদ্য উৎসের মাধ্যমে এটি সক্রিয়ভাবে সেবন করা প্রয়োজন। ডিম হলো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের প্রাকৃতিক ও ভোজ্য উৎস। তৈলাক্ত মাছ ওমেগা-৩–এর অন্যতম সুপরিচিত উৎস, তবে যাঁরা মাছ খেতে পারেন না, তাঁদের জন্য ডিম এই স্বাস্থ্যকর ধরনের চর্বির উপকারী উৎস।

৫. মস্তিষ্কের বন্ধু কোলিনের উৎস ডিম

একটি ডিমে থাকে প্রায় ১০০ মিলিগ্রাম কোলিন। এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা, স্মৃতি ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কোলিন শরীরের কোষের গঠন ঠিক রাখে এবং স্নায়ুতন্ত্রে বার্তা আদান–প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারী।

৬. ডিম ভিটামিন ‘ডি’র সহজ উৎস

যাঁরা সূর্যের আলো কম পান, তাঁদের জন্য ডিমের কুসুম হতে পারে ভিটামিন ডির চমৎকার উৎস। দুটি ডিমেই মেটে দৈনিক চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশ। এটি হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত রাখে, ক্যালসিয়াম শোষণ বাড়ায় এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা উন্নত করে।

৭. ডিম ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক একটি খাবার

ডিমে ক্যালরি কম, কিন্তু আমিষ বেশি। ফলে এটি পেট ভরায় এবং দীর্ঘ সময় ক্ষুধা লাগে না। ৩০ জন অতিরিক্ত ওজনের নারীর ওপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালের নাশতায় ইস্টযুক্ত রোলের পরিবর্তে ডিম খেলে পেট ভর্তির অনুভূতি বাড়ায় এবং পরবর্তী ৩৬ ঘণ্টার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্যালরি গ্রহণ কমে যায়। আট সপ্তাহ যাবৎ করা অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ডিম সন্তোষজনকভাবে দিনের পর দিন ক্যালরি গ্রহণ কমাতে পারে। ফলস্বরূপ ওজন কমতে থাকে।

৮. বয়স বাড়লেও শক্তি ধরে রাখে ডিম

রান্না করা সহজ হওয়ায় বয়স্ক মানুষের জন্য ডিম একটি রক্ষাকবচ। এতে থাকা লিউসিন নামের অ্যামিনো অ্যাসিড পেশি শক্তি ধরে রাখে, আর ভিটামিন ডি ও ওমেগা-৩ শরীরের কর্মক্ষমতা বজায় রাখে। ডিমে থাকা কোলিন তাদের মস্তিষ্কও সক্রিয় রাখে।

৯. চোখের সুরক্ষায় ডিম

ডিমে রয়েছে ভিটামিন এ, ই, সেলেনিয়াম ও লুটিন নামের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। এগুলো চোখকে ছানি ও বয়সজনিত দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। উদ্ভিজ্জ উৎসের তুলনায় ডিমের এসব উপাদান শরীর সহজে গ্রহণ করতে পারে। তাই চোখের যত্নে প্রতিদিনের ডিম অত্যন্ত উপকারী।

১০. মানসিক সুস্থতার সহায়ক

ডিমে থাকা ট্রিপটোফ্যান, ভিটামিন বি২, বি১২, আয়রন ও কোলিন মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। ট্রিপটোফ্যান থেকে উৎপন্ন সেরোটোনিন মন ভালো রাখে ও ঘুমের মান বাড়ায়। নিয়মিত ডিম খেলে মন থাকে প্রশান্ত ও চনমনে।

ডিম নিয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারণা

ডিম নিয়ে সমাজে বিভিন্ন ভুল ধারণা রয়েছে, যা অনেককে নিয়মিত ডিম খাওয়া থেকে বিরত রাখে। ডিমের কুসুমের রং নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা হলো, গাঢ় কুসুমের ডিম বেশি পুষ্টিকর। বাস্তবে কুসুমের রং নির্ভর করে মুরগির খাদ্যে থাকা রঞ্জকের ওপর, পুষ্টিগুণের ওপর নয়। একইভাবে সাদা বা বাদামি খোসার ডিমের পুষ্টিতে কোনো পার্থক্য নেই।

অনেকে মনে করেন, দেশি মুরগির ডিম বেশি পুষ্টিকর, কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে দেশি ও ফার্মের মুরগির ডিমের পুষ্টির মৌলিক পার্থক্য নেই। সবচেয়ে বড় বিভ্রান্তি হলো নকল ডিম। বাস্তবে বাংলাদেশে কোনো নকল ডিম নেই। সংরক্ষণের জন্য ডিপ ফ্রিজে রাখা বা তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে ডিমের সাদা অংশ আংশিকভাবে বেরিয়ে আসতে পারে। অনেক সময় এ অবস্থাকে ভুলভাবে নকল ডিম মনে করা হলেও এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

অধ্যাপক মো. ইলিয়াস হোসেন পোলট্রিবিজ্ঞান বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শাখা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চবির ভর্তি পরীক্ষা শুরু ২ জানুয়ারি
  • যবিপ্রবিতে এআইএস স্পোর্টস কার্নিভাল শুরু
  • উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএড প্রোগ্রামের সুযোগ, যোগ্যতা স্নাতক পাস
  • একঝলক (১২ অক্টোবর ২০২৫)
  • লাভেলোর প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে ১২ শতাংশ
  • সমালোচনাকারীরা কার পক্ষে বলছেন: ফয়েজ আহমদ
  • লাভেলো আইসক্রিমের ১৬ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • বিশ্ব ডিম দিবস-২০২৫: ডিম দশে দশ
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১০ অক্টোবর ২০২৫)