ভোট হবে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে, গোপন কক্ষেও থাকবে সিসিটিভি
Published: 12th, October 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে। ভোট দেওয়ার গোপন কক্ষও সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। আজ রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সিনেট কক্ষে এ সভা হয়েছিল।
অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, বিদ্যুৎ চলে গেলেও ফুটেজ সংরক্ষিত থাকবে। প্রতি কেন্দ্রে দুইটি করে মেডিকেল টিম থাকবে। ১৪ অক্টোবর থেকে পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভোটের দিনও কেবল পরিচয়পত্র নিয়েই ভোটকেন্দ্রে যাওয়া যাবে।
সভায় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় সব দাবি অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছি। নির্বাচনের দিন চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। তবে আমাদের আসল শক্তি শিক্ষার্থীরা। তাঁদের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, ‘ভোটের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি প্রবেশপথের মধ্যে ৭টি বন্ধ থাকবে। শিক্ষার্থীরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে ২৪টি পয়েন্টে নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা বাইরের নিরাপত্তা বিষয়টি দেখব। প্রিসাইডিং কর্মকর্তার অনুরোধ ছাড়া যে ভবনে ভোট হবে, সেখানে করব না।’
এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সব প্রার্থীর ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করেছি। এটি আমাদের মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। নির্বাচনের দিন শিক্ষার্থীদের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শাটল ট্রেনের সূচি বাড়ানো হয়েছে, পাশাপাশি অতিরিক্ত বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক মো.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী বুধবার আবার ভোট হতে যাচ্ছে। এবার মোট ভোটার প্রায় ২৭ হাজার, যার মধ্যে ছাত্রী প্রায় সাড়ে ১১ হাজার।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা
জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।
দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপটহাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’
এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)
আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।
দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকতএই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।
আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।
দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫