ভারতীয় উপমহাদেশে ঐতিহ্যবাহী খেলা স্কোয়াশ। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছিল সেই ঐতিহ্য। ঐতিহ্যকে ফেরাতেই এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরা। 

দেশে ক্রীড়াবিদদের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভূমিকা রাখতে আগামী পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশ স্কোয়াশ ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা গ্রুপের এই উদ্যোগে স্কোয়াশ খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংগ্রহণের সুযোগ পাবেন। তারা বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির সব সুবিধা পাবেন। 

সে লক্ষ্যেই বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির সহায়তায় বাংলাদেশ স্কোয়াশ ফেডারেশন আয়োজন করতে যাচ্ছে ‘৫ম জাতীয় স্কোয়াশ চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৫’। উর্মি গ্রুপ ও তুরাগ একটিভের পৃষ্ঠপোষকতায় এবারের আসরের রাউন্ড রবিন লীগ পদ্ধতিতে চূড়ান্ত পর্বের খেলা আয়োজন করা হবে। 

বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির পাশাপাশি ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ আর্মি স্কোয়াশ কমপ্লেক্স, শাহীন কলেজ ও আর্মি অফিসার্স মেসে প্রতিযোগিতা করবেন খেলোয়াড়রা। 

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির জুলকান ইনডোর এরিনায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

পরে বসুন্ধরা গ্রুপ ও বাংলাদেশ স্কোয়াশ ফেডারেশনের মধ্যে পাঁচ বছরের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষে বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর মোহসিনুল করিম ও বাংলাদেশ স্কোয়াশ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জি এম কামরুল ইসলাম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। 

জি এম কামরুল ইসলাম বলেছেন, “বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিসহ পৃষ্ঠপোষক উর্মি গ্রুপ ও তুরাগ একটিভকে ধন্যবাদ আমাদের পাশে থাকার জন্য। আপনাদের সহায়তায় আমরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দেশের সুনাম বয়ে আনব। দেশের তরুণদের মেধা ও প্রতিভাকে মূল্যায়ন করার মধ্য দিয়ে আমরা ইতোমধ্যে চারশ’র বেশি খেলোয়াড় তৈরি করেছি। আসন্ন এসএ গেমসেও আমাদের প্রতিযোগীরা অংশগ্রহণ করবে। আমাদের রিসোর্স কম। এবার আমরা বসুন্ধরা গ্রুপকে সঙ্গে নিয়ে দেশে স্কোয়াশের একটা বিপ্লব করতে চাই।” 

বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির পরিচালক মোহসিনুল করিম বলেন, “এটি বাংলাদেশের খেলার জগতে বড় একটি আয়োজন। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের উদ্যোগেই মূলত এ আয়োজন। দেশের ফুটবলের মতো স্কোয়াশকেও আমরা এগিয়ে নিতে চাই। সে লক্ষ্যেই চুক্তিটি হয়েছে।” 

১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া দেশব্যাপী আঞ্চলিক পর্বে ২৫টি প্রতিষ্ঠানের ১৮০ জনের অধিক প্রতিযোগী এ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে বিজয়ী ও নির্বাচিত ৮০ জন প্রতিযোগী নিয়ে ৯টি গ্রুপে শিরোপার চূড়ান্ত লড়াই শুরু হবে সোমবার থেকে। 

চূড়ান্ত পর্বের গ্রুপগুলো হলো—উন্মুক্ত নারী, উন্মুক্ত পুরুষ, উন্মুক্ত মেম্বার এবং ১১ বছরের কম, ১২ থেকে ১৩ বছর, ১৪ থেকে ১৫ বছরের ছেলে ও মেয়েদের পৃথক গ্রুপ।

ঢাকা/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প র টস স ট র বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা

জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।

দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপট

হাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’

এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)

আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।

দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকত

এই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯

আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।

আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।

দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ