ব্রিটিশরা জ্বালিয়ে দেওয়ার পরই কি আসলে নাম হয়েছে ‘হোয়াইট হাউস’
Published: 13th, October 2025 GMT
হোয়াইট হাউস—যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন। তবে এটা নিছকই শুধু একটি আবাসস্থল নয়, বরং এ ভবন গণতন্ত্র, নেতৃত্ব ও ক্ষমতার প্রতীক। দুই শতাব্দীর বেশি সময় ধরে এ ভবন ক্ষমতার পালাবদল, উৎসব, সংকট, যুদ্ধ, চুক্তি ও ইতিহাসের মোড় ঘোরানো নানা মুহূর্তের স্মৃতি আঁকড়ে দাঁড়িয়ে আছে।
নতুন নতুন প্রেসিডেন্ট এসেছেন, হোয়াইট হাউসে থেকেছেন, চলেও গেছেন—সাদা রঙের এ ভবন ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হয়ে রয়ে গেছে। পরাশক্তি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে ঐতিহাসিক এ ভবন বিশ্বনেতৃত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
১৭৯২ সালের ১৩ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি আবাসস্থলের নির্মাণকাজ। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের হাত ধরে এ কাজের শুরু।
নতুন রাজধানী, নতুন ভবন
তখন সদ্যস্বাধীন দেশ যুক্তরাষ্ট্র। জর্জ ওয়াশিংটন দেশের জন্য নতুন একটি রাজধানী গড়তে চাইলেন। বেছে নেওয়া হলো পটোম্যাক নদীর তীরে একটি জায়গাকে। সেখানে গড়ে তোলা হবে আস্ত একটি নতুন শহর। সেটি হবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাজধানী। শহর গড়ার দায়িত্ব পান ফরাসি–আমেরিকান শিল্পী ও নগর–পরিকল্পনাবিদ পিয়েরে চার্লস এনফ্যান্ট।
জর্জ ওয়াশিংটনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নতুন রাজধানী গড়তে পুরোদমে নেমে পড়েন পিয়েরে চার্লস। প্রেসিডেন্টের নামে নতুন শহরটির নাম রাখা হয় ‘ওয়াশিংটন ডিসি’। নতুন রাজধানী হবে, সেখানে প্রেসিডেন্টের থাকার জন্য বড়সড় একটি ভবন থাকবে না, তা কী করে হয়!
হোয়াইট হাউস শুধু মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি আবাস নয়, এখানে আছে প্রেসিডেন্টের দপ্তর। নাম ওভাল অফিস। ছয়তলা আবাসিক ভবনটিতে আছে ১৩২টি কক্ষ, ৩৫টি বাথরুম, ৪১২টি দরজা, ১৪৭টি জানালা। ৮টি সিঁড়ি, ৩টি লিফট আর ২৮টি ফায়ারপ্লেস আছে এ ভবনে।শুরু হলো প্রেসিডেন্ট ভবনের নির্মাণের জন্য জমি খোঁজা। গর্ব করার মতো নকশাও দরকার। এ কাজেও এগিয়ে এলেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন। সঙ্গে পিয়েরে চার্লস। ১৭৯১ সাল, এখন যেটা ১৬০০ পেনসিলভানিয়া অ্যাভিনিউ, সেখানে জায়গা পছন্দ হলো।
জর্জ ওয়াশিংটন এমন একটি জায়গায় প্রেসিডেন্টের বসবাসের জন্য বেছে নেন, সেখান থেকে পেনসিলভানিয়া অ্যাভিনিউ দিয়ে মার্কিন পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে সরাসরি যাওয়া যায়।
নকশা খোঁজা ও নির্মাণ
প্রেসিডেন্ট ভবনের জন্য স্থপতিদের কাছ থেকে নকশা আহ্বান করা হয়। শুরু হয় প্রতিযোগিতা। জমা পড়ে নয়টি নকশা। যাচাই–বাছাইয়ের পর আইরিশ বংশোদ্ভূত আমেরিকান স্থপতি জেমস হোবানের নজরকাড়া নকশা স্বর্ণপদক পায়।
জেমস হোবানের নকশা মেনে প্রায় আট বছর ধরে নতুন প্রেসিডেন্ট ভবনের নির্মাণকাজ চলে। অবশেষে ১৮০০ সালের ১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শেষ হয়; যদিও টুকটাক কিছু কাজ তখনো বাকি ছিল।
জর্জ ওয়াশিংটনের আগ্রহ আর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নতুন রাজধানীতে প্রেসিডেন্টের সরকারি এ আবাসস্থল নির্মাণ করা হলেও তিনি কখনোই সেখানে থাকতে পারেননি। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার বছরখানেক আগেই ১৭৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ৬৭ বছর বয়সে মারা যান জর্জ ওয়াশিংটন।
নতুন প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রথম ওঠেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডামস ও তাঁর স্ত্রী ফার্স্ট লেডি অ্যাবিগেল অ্যাডামস। এর পর থেকে যতজন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, প্রায় সবার আবাসস্থল হয়েছে শ্বেতশুভ্র এ ভবন।
পাখির চোখে হোয়াইট হাউস.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র স ড ন ট র সরক র প র স ড ন ট ভবন য ক তর ষ ট র র র জন য এ ভবন
এছাড়াও পড়ুন:
মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মির্জা আব্বাস, রিজভীসহ ১৬৭ জন
সাত বছর আগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ ১৬৭ ব্যক্তি।
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী।
মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকার সড়ক বন্ধ করে মিছিল করা, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি ও পুলিশকে মারধরের অভিযোগে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর মামলাটি করা হয়। পল্টন থানায় মামলাটি করে পুলিশ। মামলায় মির্জা আব্বাস, তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাসসহ অন্যদের আসামি করা হয়। মামলায় সম্প্রতি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। এতে মামলা থেকে ১৬৭ জনকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মির্জা আব্বাসসহ অন্যদের মামলা থেকে অব্যাহতির আদেশ দেন।
আরও পড়ুনমাকে ৩৬ কোটি টাকার শেয়ার উপহার দিলেন মির্জা আব্বাসের ছেলে০৫ অক্টোবর ২০২৫মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া অন্যদের মধ্যে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কফিল উদ্দিন, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব প্রমুখ।
আরও পড়ুননির্বাচন সামনে রেখে আরও অনেক কিছু দেখতে পাবেন: মির্জা আব্বাস০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫