অপ তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ শিবিরের সমর্থিত প্যানেলের
Published: 13th, October 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু) নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য (মিস ইনফরমেশন), অপ তথ্য (ডিজ ইনফরমেশন) ও সাইবার বুলিং আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’।
আজ সোমবার বেলা একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ তোলেন প্যানেলের প্রার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী সাঈদ বিন হাবিব লিখিত বক্তব্যে বলেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন প্রার্থী ও সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ভুয়া পোস্ট ও বিকৃত তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
সাঈদ বিন হাবিব আরও বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের একাধিক অভিযোগ প্রশাসনের কাছে দাখিল করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নির্বাচনের দিন জরুরি অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির জন্য ‘ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম’ গঠনেরও দাবি জানান তিনি। এতে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের পাশাপাশি প্রার্থীদের প্রতিনিধিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে বলে মত দেন জিএস প্রার্থী সাঈদ বিন হাবিব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্যানেলের ভিপি (সভাপতি) প্রার্থী ইব্রাহীম হোসেন (রনি) বলেন, ‘নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবে, সেটি বুঝেই আমরা মাঠে নেমেছি। যারাই বিজয়ী হয়ে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করবে, আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সহযোগিতা করব। আমরা যদি বিজয়ী না হই, তখনো ফলাফল মেনে নেব। আর আমরা বিজয়ী হলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এজিএস প্রার্থী সাজ্জাদ হোছেন মুন্না, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী মোনায়েম শরীফ, সমাজকল্যাণ ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী তাহসিনা রহমানসহ প্যানেলের অন্য প্রার্থীরা।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ভোটকেন্দ্র
এদিকে চাকসু নির্বাচন কমিশন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ভোটকেন্দ্র রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ দুপুরে নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী জানান, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভোটকেন্দ্রটি হবে চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায়।
৭৬ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর আবেদন বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। কমিশনের সভায় নির্ধারিত হয়, এই বিশেষ কেন্দ্রে দুজন নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থেকে পুরো ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করবেন, যাতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।
অধ্যাপক আরিফুল হক সিদ্দিকী বলেন, সবার ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে এটি একটি মানবিক উদ্যোগ।
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা ভোট গ্রহণের সময় বিশেষ ব্যবস্থাসহ চার দফা দাবি জানান। তারা ব্রেইল ব্যালট পদ্ধতি, হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য প্রবেশগম্যতা ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের জন্য দোভাষীসহ বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক চেয়েছিলেন।
নির্বাচন কমিশনের প্রধান অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রতিটি কক্ষে সর্বোচ্চ ৫০০ শিক্ষার্থীর ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য ২৬টি এবং হল সংসদের জন্য ১৪টি, মোট ৪০টি ভোট দিতে হবে। আমরা যাচাই করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ১০ মিনিট সময় বরাদ্দ করেছি। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ৭০০টি বুথ করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সপ্তম চাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে প্রায় তিন দশক পর। একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে হল সংসদ নির্বাচনও। ইতিমধ্যে ১৩ টি প্যানেলের মধ্যে ১২টি প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু ‘সর্বজনীন ছাত্র ঐক্য পরিষদ’ প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা করা হয়নি।
আগামী বুধবার সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত চাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। এরপর শুরু হবে গণনা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
অপ তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ শিবিরের সমর্থিত প্যানেলের
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (চাকসু) নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য (মিস ইনফরমেশন), অপ তথ্য (ডিজ ইনফরমেশন) ও সাইবার বুলিং আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’।
আজ সোমবার বেলা একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ তোলেন প্যানেলের প্রার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী সাঈদ বিন হাবিব লিখিত বক্তব্যে বলেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন প্রার্থী ও সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে ভুয়া পোস্ট ও বিকৃত তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
সাঈদ বিন হাবিব আরও বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের একাধিক অভিযোগ প্রশাসনের কাছে দাখিল করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নির্বাচনের দিন জরুরি অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির জন্য ‘ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম’ গঠনেরও দাবি জানান তিনি। এতে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের পাশাপাশি প্রার্থীদের প্রতিনিধিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে বলে মত দেন জিএস প্রার্থী সাঈদ বিন হাবিব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্যানেলের ভিপি (সভাপতি) প্রার্থী ইব্রাহীম হোসেন (রনি) বলেন, ‘নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবে, সেটি বুঝেই আমরা মাঠে নেমেছি। যারাই বিজয়ী হয়ে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করবে, আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সহযোগিতা করব। আমরা যদি বিজয়ী না হই, তখনো ফলাফল মেনে নেব। আর আমরা বিজয়ী হলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এজিএস প্রার্থী সাজ্জাদ হোছেন মুন্না, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী মোনায়েম শরীফ, সমাজকল্যাণ ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী তাহসিনা রহমানসহ প্যানেলের অন্য প্রার্থীরা।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ভোটকেন্দ্র
এদিকে চাকসু নির্বাচন কমিশন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ভোটকেন্দ্র রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ দুপুরে নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী জানান, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভোটকেন্দ্রটি হবে চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায়।
৭৬ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর আবেদন বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। কমিশনের সভায় নির্ধারিত হয়, এই বিশেষ কেন্দ্রে দুজন নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত থেকে পুরো ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করবেন, যাতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন।
অধ্যাপক আরিফুল হক সিদ্দিকী বলেন, সবার ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে এটি একটি মানবিক উদ্যোগ।
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা ভোট গ্রহণের সময় বিশেষ ব্যবস্থাসহ চার দফা দাবি জানান। তারা ব্রেইল ব্যালট পদ্ধতি, হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য প্রবেশগম্যতা ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের জন্য দোভাষীসহ বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক চেয়েছিলেন।
নির্বাচন কমিশনের প্রধান অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রতিটি কক্ষে সর্বোচ্চ ৫০০ শিক্ষার্থীর ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য ২৬টি এবং হল সংসদের জন্য ১৪টি, মোট ৪০টি ভোট দিতে হবে। আমরা যাচাই করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ১০ মিনিট সময় বরাদ্দ করেছি। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ৭০০টি বুথ করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সপ্তম চাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে প্রায় তিন দশক পর। একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে হল সংসদ নির্বাচনও। ইতিমধ্যে ১৩ টি প্যানেলের মধ্যে ১২টি প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু ‘সর্বজনীন ছাত্র ঐক্য পরিষদ’ প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা করা হয়নি।
আগামী বুধবার সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত চাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। এরপর শুরু হবে গণনা।