বাটা বাংলাদেশের প্রথম নারী এমডি ফারিয়া ইয়াসমিন, স্বাধীনতার পর প্রথম বাংলাদেশি এমডি তিনি
Published: 13th, October 2025 GMT
বহুজাতিক কোম্পানি বাটা শু বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ফারিয়া ইয়াসমিন। বাংলাদেশে বহুজাতিক এ কোম্পানির ৬৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো নারী শীর্ষ পদে দায়িত্ব পেলেন। শুধু তা-ই নয়, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে কোম্পানিটির এমডির দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ফারিয়া ইয়াসমিন।
সম্প্রতি বাটা শু কোম্পানি বাংলাদেশের শীর্ষ পদে এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটি। আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আগামী মাসে এমডির দায়িত্ব নেবেন ফারিয়া ইয়াসমিন। তিনি বাটা শু কোম্পানি বাংলাদেশের বর্তমান এমডি দেবব্রত মুখার্জির স্থলাভিষিক্ত হবেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেবব্রত মুখার্জি আগামী ২০ নভেম্বর বাটা শু বাংলাদেশের এমডির দায়িত্ব ছেড়ে ভারতের একটি বহুজাতিক কোম্পানির এমডি হিসেবে যোগ দেবেন। আর বাটাতে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হবেন ফারিয়া ইয়াসমিন।
এদিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে বাটা শু আজ তাদের শীর্ষ পর্যায়ে এই পরিবর্তনের কথা বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে। পরে সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে কোম্পানিটি এ তথ্য সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফারিয়া ইয়াসমিনের বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় ব্র্যান্ড মার্কেটিং, পোর্টফোলিও ম্যানেজমেন্ট এবং ব্যবসা পরিচালনায় ২৩ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাটা শুর এমডি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী এসিআইয়ের প্রধান ব্যবসায় কর্মকর্তা বা চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও)। এ ছাড়া তিনি বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট বেনকাইজার, ম্যারিকো ও নেসলের উচ্চপদে কাজ করেছেন।
বাটা শু বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় একটি সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, ফারিয়া ইয়াসমিন হতে যাচ্ছেন কোম্পানিটির এ দেশের প্রথম নারী এমডি। পাশাপাশি স্বাধীন বাংলাদেশে বাটার প্রথম এদেশীয় এমডি। স্বাধীনতার আগে বাটা শু বাংলাদেশে একজন বাংলাদেশি শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তখন অবশ্য এ দেশে বাটা শু শীর্ষ পদটি এমডির ছিল না।
বাটা শু বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬২ সালে এটি বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৮৫ সালে এটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে টঙ্গী ও ধামরাইয়ে বাটা শুর দুটি কারখানা রয়েছে। কারখানা দুটির প্রতিদিন ১ লাখ ৬০ হাজার জোড়া জুতা তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। কোম্পানিটির বার্ষিক জুতা বিক্রির পরিমাণ প্রায় তিন কোটি জোড়া।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক এ কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) ৫১৭ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। এ সময়ে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ২৭ কোটি টাকার বেশি। গত বছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের ৭০ শতাংশের মালিকানা ছিল বিদেশি উদ্যোক্তাদের হাতে। ১৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ শেয়ার ছিল প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর হাতে। ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ শেয়ার ছিল ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারী ও ১ দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ার বিদেশি বিনিয়োগকারীর হাতে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আজ কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৮৭৩ টাকা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প রথম ব যবস র এমড এমড র
এছাড়াও পড়ুন:
জকসু নির্বাচন না পেছানোর দাবিতে ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের স্মারকলিপি
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২২ ডিসেম্বরেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন চায় ছাত্রদল-ছাত্র অধিকার-সাধারণ শিক্ষার্থী নিয়ে গঠিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’। এ দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে প্যানেলটি।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পজনিত জরুরি পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ পরিবর্তনের উদ্যোগ আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করেছি।’
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, জকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে উৎসাহ, আগ্রহ ও অংশগ্রহণের প্রস্তুতি গড়ে উঠেছে, তা সময়সূচি পরিবর্তনের মাধ্যমে ব্যাহত হবে। জরুরি পরিস্থিতি কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাচনী পরিবেশও উৎসবমুখরভাবে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব। এটি পূর্ববর্তী বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞতায়ও প্রমাণিত।
‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের তিন দাবি হলো—
১. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনের পূর্বনির্ধারিত তারিখ ২২ ডিসেম্বর কোনো অবস্থাতেই পেছানো যাবে না।
২. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করে নির্ধারিত তারিখেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
৩. শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রাখতে নির্বাচন আয়োজনে কোনো ধরনের বিলম্ব বা অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করা যাবে না।
‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচন এটি। একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য আগামী ২২ ডিসেম্বরই নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে কোনো যদি–কিন্তু ছাড়াই।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৩ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের কথা রয়েছে। এরপর ৪ ডিসেম্বর, ৭ ডিসেম্বর ও ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রত্যাহার করা প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ৯ ডিসেম্বর। এরপর ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা তাঁদের নির্বাচনী প্রচারণা করবেন। তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনের দিনই ভোট গণনা ও ২২-২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ফল ঘোষণা হবে।