পাকিস্তানের ঘূর্ণিতে দিশেহারা দক্ষিণ আফ্রিকা
Published: 13th, October 2025 GMT
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের ২২ গজ যেন স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য। সেখানে পাকিস্তানের ঘূর্ণি জালে জড়িয়ে ধুঁকছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে মার্করামদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২১৬। এখনো ১৬২ রানে পিছিয়ে প্রোটিয়ারা।
প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান থেমেছিল ৩৭৮ রানে। সেই রান তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপ যেন হারিয়ে ফেলেছিল ছন্দের তাল। শুরুতে রায়ান রিকেলটন (৭১) ও টনি ডি জর্জির (৮১*) ৯৪ রানের জুটি কিছুটা আশার আলো দেখালেও সেটি টিকল না বেশিক্ষণ। বাবর আজমের অসাধারণ ক্যাচে ভাঙে গুরুত্বপূর্ণ সেই জুটি। স্লিপে দাঁড়িয়ে বিদ্যুতের গতিতে ডানদিকে ডাইভ দিয়ে বল মুঠোয় পুরে নেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
আরো পড়ুন:
চার ফিফটিতে প্রথম দিন পাকিস্তানের
জয়ের পর জরিমানা গুনলেন পাকিস্তানের তিন ক্রিকেটার
এরপর থেকেই প্রোটিয়া ব্যাটিংয়ে নামে ধস। ওপেনার মার্করাম নোমান আলির ঘূর্ণিতে ২০ রানে বোল্ড হন। তিন নম্বরে নামা উইয়ান মুলডার (১৭)–ও টিকতে পারেননি সেই স্পিনের সামনে। ৩৯ বছর বয়সী অভিজ্ঞ স্পিনার নোমান একাই নিয়েছেন ৮৫ রানে ৪ উইকেট। তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন সাজিদ খান ও সালমান আলী আগা। দুজনের ঝুলিতে একটি করে উইকেট।
পাকিস্তানের ইনিংসের গোড়াপত্তন হয়েছিল ইমাম-উল-হকের দৃঢ়তা ও মধ্যভাগে রিজওয়ান-সালমানের জুটিতে। দ্বিতীয় দিন সকালে রিজওয়ানের ব্যাট থেকে আসে ৭৫ রান, আর সালমান হাতছাড়া করেন শতরান। আউট হওয়ার আগে করেন ৯৩। তবে নিচের দিকের ব্যাটাররা আর দাঁড়াতে পারেননি। চারজন ফেরেন শূন্য হাতে। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন সেনুরান মুথুস্বামী, ১১৭ রানে নিয়েছেন ৬ উইকেট।
ব্যাট হাতে ৯৩ রানের ইনিংস খেলার পর সমালোচকদের উদ্দেশে জবাব দিয়েছেন ওপেনার ইমাম-উল-হক। প্রায় দুই বছর পর টেস্টে ফেরা এই ব্যাটার বলেন, “আমি সবসময় নিজের খেলা নিয়ে কাজ করেছি। অনেকে বলেছে আমার শৃঙ্খলার অভাব আছে। কিন্তু আমি কখনও এমনটা ভাবিনি। পাকিস্তানের হয়ে খেলা নিজেই এক সৌভাগ্যের ব্যাপার, সুযোগ পেলে সেটাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে চাই।”
এখন চোখ লাহোরের তৃতীয় দিনের দিকে। পাকিস্তান ঘূর্ণির ধার ধরে এগোবে, নাকি জর্জি-মুথুস্বামীদের লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ঘুরে দাঁড়াবে। সে উত্তরই দেবে মঙ্গলবার সকালের প্রথম ঘণ্টা।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মাদাগাস্কারে বিক্ষোভের মুখে গোপনে দেশ ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট
মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা দেশ ছেড়েছেন। ফ্রান্সের সম্প্রচারমাধ্যম রেডিও আরএফআই আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে এক গোপন চুক্তি করেন রাজোয়েলিনা। এরপর একটি ফরাসি সামরিক বিমানে করে তাঁকে দেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
প্রেসিডেন্ট দেশত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন মাদাগাস্কারের পার্লামেন্টের বিরোধীদলীয় নেতা সিতেনি রান্দ্রিয়ানাসোলোনিয়াইকোও। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পর রোববার প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা দেশ ছেড়েছেন। প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিদ্যুৎ ও পানির সংকটকে কেন্দ্র করে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে মাদাগাস্কারে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছিল। এর মধ্যেই রোববার বিদ্রোহী একটি সেনা ইউনিটের পক্ষ থেকে মাদাগাস্কারের পুরো সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পর থেকে প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা মূলত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভের মধ্যে রাজোয়েলিনার জন্য আরও একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছিল দেশটির বিরোধী দল। সোমবার বিরোধীদলীয় নেতা সিতেনি র্যানদ্রিয়ানাসোলোনিয়াইকে রয়টার্সকে জানান, মাদাগাস্কারের জাতীয় পরিষদের বিরোধীদলীয় সদস্যরা প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসনপ্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছেন।
অভ্যুত্থানের বিষয়ে সতর্ক করেন রাজোয়েলিনা
রাজোয়েলিনা রোববার ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চলছে। মাদাগাস্কারের যে বিদ্রোহী সেনা ইউনিট সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, সেটি ক্যাপস্যাট নামে পরিচিত। সেনাবাহিনীর অভিজাত এই ইউনিটটি ২০০৯ সালের অভ্যুত্থানে তাঁকে ক্ষমতায় আসতে সহায়তা করেছিল।
এদিকে সোমবার প্রেসিডেন্টের পালানোর খবর পাওয়ার আগে মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভোর একটি চত্বরে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হন। তাঁরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবি জানান। হোটেল কর্মী এড্রিয়ানারিভনি ফানোমেগানৎসো (২২) বলেন, তাঁর মাসিক বেতনের পুরোটাই খাবারের খরচের পেছনে ব্যয় হয়। এ কারণেই তিনি বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি আরও বলেন, ১৬ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট ও তাঁর সরকার নিজেদের উন্নতি ছাড়া আর কিছু করেনি। মানুষজন গরিবই থেকে গেছে। সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী তরুণ প্রজন্ম, জেন-জিরা।