তিন দফা দাবিতে আজ মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাঁরা শিক্ষা উপদেষ্টার ‘আলোচনার প্রস্তাব’ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে তাঁরা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর অনুরোধে আজ বিকাল চারটা পর্যন্ত সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি পিছিয়েছেন। তাঁরা বিকেল চারটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে তাঁরা সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি করবেন।

শিক্ষকনেতারা বলেন, আজ সকালে শিক্ষা উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে তাঁরা আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। সচিবালয় অভিমুখে আজ লংমার্চ করার বিষয়ে অনড় আছেন।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনকারী ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’-এর সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষা উপদেষ্টার পক্ষ থেকে দেওয়া আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি আমরা। আমাদের একটাই দাবি, প্রজ্ঞাপন দিতে হবে। কোনো আলোচনার আর সুযোগ নেই।’

দুপুর পৌনে ১২টায় পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলমসহ একটি দল শহীদ মিনারে আসে। তারা শিক্ষকদের লংমার্চ পেছানোর জন্য অনুরোধ করে। এ সময় শিক্ষকনেতা দেলোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে একটি কল আসে। পরে তিনি বলেন, এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁকে কল করে লংমার্চ কর্মসূচি পেছানো অনুরোধ জানিয়েছেন।

দেলাওয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের প্রশাসন জানিয়েছে, তারা দাবি মেনে নেবে। তবে প্রজ্ঞাপন জারি হতে কিছুটা সময় লাগবে। আমরা যাতে লংমার্চ কর্মসূচি পালন না করি। বিষয়টি নিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহও আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তবে আমরা জানিয়েছি, প্রজ্ঞাপন ছাড়া লংমার্চ প্রত্যাহারের সুযোগ নেই।’

এই শিক্ষকনেতা আরও বলেন, তাঁরা প্রশাসনকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। এর মধ্যে দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে তাঁরা সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি পালন করবেন।

আজ সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে দেখা যায়, হাজারো শিক্ষক-কর্মচারী অবস্থান করছেন। আন্দোলনকারীদের তিনটি দাবি হলো—মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম তিন হাজার টাকা) বাড়িভাড়া। শিক্ষক ও কর্মচারী উভয়ের জন্য চিকিৎসা ভাতা দেড় হাজার টাকা করা। কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করা।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে খুলনা থেকে আসা সুদাস চন্দ্র দাস নামের এক কলেজশিক্ষক বলেন, ‘শিক্ষকেরা ন্যায়ের পথে চলেন। তাঁরা শ্রম দেন সৎ পথে। কিন্তু সে অনুযায়ী তাঁদের যে পারিশ্রমিক, তা দিয়ে সংসার চলে না। পেটে খিদে থাকলে পাঠদান হবে কেমন করে? তাই সরকারের উচিত, শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কারো হৃদয়ভাঙা একদম পছন্দ নয়, এটাকে ঘৃণা করি: ইধিকা

দেশসেরা চিত্রনায়ক শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন ওপার বাংলার অভিনেত্রী ইধিকা পাল। ‘প্রিয়তমা’ সিনেমায় অভিনয়ের পর ভারতীয় বাংলা সিনেমায় নাম লেখান।  

‘খাদান’, ‘রঘু ডাকাত’ সিনেমার বদৌলতে ইধিকা এখন টলিউডের অন্যতম চর্চিত অভিনেত্রী। ফলে, কার সঙ্গে প্রেম করছেন অথবা কবে বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন তা নিয়ে জল্পনাকল্পনার শেষ নেই। ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইধিকা তার প্রেমজীবন নিয়ে কথা বলেছেন।  

আরো পড়ুন:

শাকিবের নায়িকা রহস্য

বৃদ্ধাশ্রমে বুবলীর জন্মদিন

এ আলাপচারিতায় ইধিকার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কখনো মন ভেঙেছিল কি না? জবাবে এ অভিনেত্রী বলেন, “হ্যাঁ। ভেঙেছিল।” পরিস্থিতি কীভাবে সামলেছিলেন? সঞ্চালকের এ প্রশ্নের উত্তরে ইধিকা পাল বলেন, “কারো মন ভাঙা আমার একদম পছন্দ নয়। সবাই বলে এটা থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। কিন্তু আমি এটা চাই না; এটাকে ঘৃণা করি।” 

এটা কী কলেজ জীবনে ঘটেছিলে? ইধিকা বলেন, “হ্যাঁ, কলেজ লাইফে মন ভেঙেছিল। পছন্দ না করলেও কিছু করার নেই। সবসময় সঠিক মানুষের সঙ্গে থাকা সম্ভব নয়। সবসময় সঠিক মানুষটাকে বেছে নিতে পারব সেটাও সম্ভব না। আবার সবসময় এটাও সঠিক নয় যে, উল্টো দিকের মানুষটা খারাপ। সে হয়তো তার জায়গায় ঠিক, আমি হয়তো আমার জায়গায় ঠিক। কিন্তু দুজন একসঙ্গে ঠিক না। দুজন ভালো মানুষও একসঙ্গে নাই থাকতে পারেন।” 

“যাইহোক, তখনকার পরিস্থিতি তখনকার মতো সামলেছিলাম। আমার কিছু বন্ধু-বান্ধব আছে, যারা সবসময় আমার পাশে থাকে। কখনো দুঃখ হলে তাদের ডাকি, তারা আমার হিউম্যান ডক্টর আরকি! তাদের সাথে আইসক্রিম খাই, ঠিক হয়ে যায়।” বলেন ইধিকা।  

অল্প বয়সে প্রেম করে হৃদয় ভাঙলেও সম্পর্কে এখনো বিশ্বাস করেন ইধিকা। সম্পর্কের ভিত্তি বলতে তিনটি বিষয়কে বুঝেন এই অভিনেত্রী। তার ভাষায়, “সম্পর্কের ভিত্তি হলো—সম্মান, বিশ্বাস, ভালোবাসা।” 

২৭ বছরের ইধিকা এখন একা। এর আগে ভারতীয় গণমাধ্যমে দেওয়া অন্য একটি সাক্ষাৎকারে বিয়ের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন ইধিকা পাল। তার মতে, “এই মুহূর্তে বিয়ে নিয়ে ভাবছি না। বিয়ে মানেই প্রচুর দায়িত্ব, তাই এখন বিয়ে করার কোনো পরিকল্পনা নেই। সেই চিন্তা-ভাবনা এখন অনেক দূর।”  

বিয়ে নয়, কাজে ডুব দিতে চান ইধিকা। তার ভাষায়—“আগামী ১০ বছরে অনেক অনেক কাজ করতে চাই। একজন ভীষণ ব্যস্ত অভিনেত্রী হতে চাই, যার সারাটা বছর কাজ নিয়ে কেটে যাবে। এখন আমার মূল উদ্দেশ্য নিজের কাজে ফোকাস করা। এছাড়া ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এখন চিন্তা করার সময় নেই।” 

কলকাতার মডেল ও টিভি অভিনেত্রী ইধিকা পালের নৃত্যশিল্পী হিসেবেও খ্যাতি রয়েছে। তার অভিনীত প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘কপালকুণ্ডলা’। স্টার জলসায় প্রচারিত এ ধারাবাহিকে ‘পদ্মাবতী’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান। 
পরবর্তীতে ‘রিমলি’ ধারাবাহিকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। তা ছাড়াও দুটি জনপ্রিয় ধারাবাহিকে খলনায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইধিকা। তবে ২০২৩ সালে ‘প্রিয়তমা’ সিনেমায় অভিনয় করে রাতারাতি তারকা বনে গিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

গত বছর ‘খাদান’ সিনেমার মাধ্যমে ভারতীয় বাংলা সিনেমায় অভিষেক ঘটে ইধিকার। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন টলিউড সুপারস্টার দেব। এরপর একই নায়কের বিপরীতে ‘রঘু ঢাকাত’ সিনেমায় অভিনয় করেন এই অভিনেত্রী। ‘প্রজাপতি টু’ ও ‘কবি’ নামে দুটো সিনেমার কাজ এখন ইধিকার হাতে রয়েছে।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ