চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) পোশাক কারখানায় লাগা আগুন তিন ঘণ্টাতেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর ১৬টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালাচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে পুড়তে থাকায় আট তলা ভবনটি ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো.

জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ষষ্ঠ তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়ে সপ্তম ও অষ্টম তলায় ছড়িয়ে পড়েছে। আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। আগুনের ভয়াবহতার কারণে ভবনের কাছে ও ভিতরে গিয়ে আগুন নেভানোর সুযোগ নেই।

আরো পড়ুন:

রূপনগরে কেমিক্যাল গোডাউন থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে

শ্রীনগরে ঘরে আগুন লেগে পক্ষাঘাতগ্রস্ত নারীর মৃত্যু 

তিনি জানান, আগুনে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ভবন থেকে ২০ থেকে ২৫ জনকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। কেউ নিখোঁজ আছেন কি না, তা জানা যায়নি।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, কারখানার যে ফ্লোরগুলোতে আগুন লেগেছে, সেগুলোতে প্রচুর পরিমাণে দাহ্য বস্তু আছে। ফলে, আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ভবনটি ধসে পড়তে পারে। 

আগুন লাগা কারখানাটির নাম অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড। এখানে মূলত চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত তোয়ালে ও অ্যাপ্রোন জাতীয় পোশাক তৈরি হয়।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগ ন আগ ন ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীর আরডিএ কমপ্লেক্সের ইজারা বাতিল করে সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র করার দাবিতে মানববন্ধন

রাজশাহীর আরডিএ কমপ্লেক্স একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে সেখানে বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র করার দাবিতে ‘রাজশাহী নগরবাসী’র ব্যানারে মানববন্ধন হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে নগরীর তালাইমারী মোড়ে অবস্থিত ওই কমপ্লেক্সের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র হিসেবে ভবনটি নির্মাণ করা হলেও এটি এখন সেই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে না। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) একটি জনবিরোধী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এটিকে লিজ দিয়েছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বক্তারা অবিলম্বে এই ইজারা বাতিল করে ভবনটিকে ‘বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তোলার দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, রাজশাহীতে জুলাই অভ্যুত্থানের আন্দোলনের সময় মতিহার চত্বর, তথা তালাইমারী মোড় ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যেখান থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েট, রাজশাহী কলেজ, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, নাগরিক সমাজ ও আমজনতা আন্দোলন সংঘটিত করে। ভবনটিকে জুলাই ইতিহাসসহ এই অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাস, বরেন্দ্র ভূমির ইতিহাস এবং ১৯৪৭ থেকে শুরু করে জুলাই অভ্যুত্থান পর্যন্ত বাংলার আন্দোলন–সংগ্রাম, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাস উপস্থাপন এবং সংরক্ষণ করে একটি পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে আরডিএ কমপ্লেক্স ভবনের জনবিরোধী ইজারা বাতিলের দাবি জানান এবং এর নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র’ করার দাবি জানান।

নদীগবেষক ও লেখক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নই। শিক্ষানগরীর ধারাবাহিকতা আমরা রাখতে চাই। কিন্তু ভবনটি নির্মিত হয়েছিল ইতিহাস সংরক্ষণ ও সংস্কৃতিচর্চার উদ্দেশ্যে, ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয়।’

জুলাই ৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী বলেন, ‘৫ আগস্ট পরিবর্তনের পর আমরা আশা করেছিলাম, দখলবাজি ও অন্যায়ের অবসান হবে। কিন্তু ভবনটি নানা কৌশলে বেদখল হয়ে যাচ্ছে। আমরা রাজশাহীবাসীর পক্ষ থেকে এখানে ইতিহাস সংরক্ষণ ও সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় ছাত্র-জনতা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’

রাজশাহী মহানগর ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নাদিম সিনা বলেন, ‘ভবনটি হওয়ার কথা ছিল একটি পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, যেখানে অডিটরিয়াম, আর্ট গ্যালারি, ও নাট্যশালা থাকবে। রাজশাহীতে এ ধরনের সুযোগ-সুবিধার অভাব আছে। অথচ এটিকে একটি বেসরকারি স্কুলকে লিজ দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, এটি তার মূল উদ্দেশ্যে ফিরে আসুক।’

আরডিএ সূত্রে জানা গেছে, নগরীর তালাইমারী মোড়ে ১২ হাজার ৫১৮ বর্গমিটার জমিতে ৬০ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এটি ‘বঙ্গবন্ধু স্কয়ার’ নামে শুরু হলেও পরে নাম পরিবর্তন করে ‘আরডিএ কমপ্লেক্স’ রাখা হয়। সম্প্রতি ২৯ হাজার ৫০০ বর্গফুট স্পেস মাসে ৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকায় ১০ বছরের জন্য দেবাশীষ প্রামাণিক নামের এক ব্যক্তিকে ইজারা দেওয়া হয়, যিনি পরবর্তী সময়ে এটি একটি স্কুলকে ভাড়া দেন। ইতিমধ্যে স্কুলটি তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।

বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক হোসেন আলী পিয়ারা, নারীনেত্রী ঈশিতা ইয়াসমিন, ইয়ুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাসের সভাপতি শামীউল আলীম, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনকর্মী ওয়ালিউর রহমান প্রমুখ।

এর আগে ৫ নভেম্বর ৩৬ জুলাই ছাত্র পরিষদ নামে একটি সংগঠন ইজারা বাতিল চেয়ে মানববন্ধন করে।

আরডিএ কমপ্লেক্স স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল তারিক বলেন, ‘আজ কারা কর্মসূচি পালন করেছেন, তা মাত্র জানলাম। এ বিষয়ে জেনে পরে মন্তব্য করতে পারব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজশাহীর আরডিএ কমপ্লেক্সের ইজারা বাতিল করে সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র করার দাবিতে মানববন্ধন