দেশের জনপ্রিয় খল অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলের নামে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী কাইয়ুম হোসেন নয়ন।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাশিদা আক্তারের স্বামী আব্দুল মজিদ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম মিজবাহ উর রহমানের আদালতে মামলাটি করেন।

আরো পড়ুন:

ছাত্রীকে অপহরণ-ধর্ষণের মামলায় প্রধান শিক্ষকের যাবজ্জীবন

যশোরে বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা

এ সময় আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ডের পর অভিযোগের ব্যাপারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।  

এর আগে, গত ৮ জুলাই অ্যাসিড নিক্ষেপ ও মারধরের অভিযোগে রাশিদা আক্তার বাদী হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলমের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ভুক্তভোগী নারীর স্বামীকে মেরে বস্তাবন্দি করে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।  

মামলার নথিতে বাদী উল্লেখ করেছেন, আগের মামলা করার পর ডিপজল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেয়। ভয়ে রাশিদা আক্তার দারুস সালাম থানা এলাকা থেকে যাত্রাবাড়ী চলে আসে। গত ৪ সেপ্টেম্বর তারা বাসা থেকে কাজে গেলে তাদের মেয়ে বাসায় একা ছিল। তখন ডিপজলের সন্ত্রাসী বাহিনীর ১০/১২ জন বাসায় প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায় এবং ৫০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। মেয়েকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেন। এতে ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করা হয়। 

এ ছাড়া আব্দুল মজিদ গত ১ নভেম্বর যাত্রাবাড়ী থানার পেছনে হোটেলে খাবার খেতে গেলে দুজন তাকে কথা আছে বলে ডেকে নেয়। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে তাকে শনির আখড়ায় একটি বিল্ডিংয়ের ৫ম তলায় নেয়। সেখানে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেয়। ডিপজলের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আব্দুল মজিদকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। 

মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে ডিপজলের সহযোগী মো.

ফয়সাল তাকে রড দিয়ে মারধর করে। অন্যারাও মারধর করতে থাকে। ফলে মারাত্মক আহত হন তিনি। ডিপজল আব্দুল মজিদের কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করতে যায়। পরে ডিপজলের পা ধরে জীবন ভিক্ষা চায় আব্দুল মজিদ এবং মামলা তুলে নেবে বলে জানায়। 

এ সময় আব্দুল মজিদের কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা এবং বিকাশে থাকা সাড়ে তিন হাজার টাকা নিয়ে নেয় তারা। আর দুই দিনের মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের শর্তে তাকে আহত অবস্থায় ফেলে চলে যায়। পরবর্তীতে রাশিদা আক্তার তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়। গত ৩ নভেম্বর মামলা করার জন্য যাত্রাবাড়ী থানায় যান তারা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ মামলা নেয়নি। 

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম মল চলচ চ ত র ড পজল র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকে প্রেম, গোপনে বিয়ে, এরপর হত্যার ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড

ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রে প্রেম। পরে বন্ধুদের উপস্থিতিতে ব্যাংক কর্মকর্তা রেজাউল করিম রেজার সঙ্গে বিয়ে হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকার। বিয়ের দুই বছর পরে জন্মদিন পালনের কথা বলে তাঁকে একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান রেজাউল। সম্পর্ক নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে জান্নাতুলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন তিনি।

প্রায় তিন বছর আগের এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার রেজাউলের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। জান্নাতুলের বাবা শফিকুল আলমের করা মামলায় এই রায় দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. সাব্বির ফয়েজ। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি রেজাউলকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে এ মামলায় গত ২২ মে হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর পলাতক রয়েছেন আসামি রেজাউল।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন জানান, আদালত তাঁর বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে সেখানে গাইনি অ্যান্ড অবস বিষয়ে একটি কোর্সে অধ্যয়নরত ছিলেন জান্নাতুল। ২০১৯ সালের শেষের দিকে রেজাউলের সঙ্গে তাঁর প্রেম হয়। ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বন্ধুদের উপস্থিতিতে তাঁরা বিয়ে করেন। বিয়ের পরদিন উভয়ে পরিবারকে বিষয়টি জানান। উভয়ের পরিবার জান্নাতুলের বড় বোনের বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে অপেক্ষা করতে সম্মত হয়।

মামলার নথিতে আরও বলা হয়েছে, রেজা মাঝেমধ্যে জান্নাতুলদের বাসায় যেতেন। আবার কখনো হোটেলে একসঙ্গে থাকতেন। ২০২২ সালের ১০ অগাস্ট জান্নাতুলের জন্মদিন পালনের জন্য রাজধানীর পান্থপথের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যান রেজাউল। সেখানে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কথা–কাটাকাটি, বাগ্‌বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে জান্নাতুলকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করেন তিনি। পরে গলা কেটে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

ঘটনার পরদিন ১১ আগস্ট রেজাউলকে আসামি করে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন জান্নাতুলের বাবা শফিকুল আলম।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান কলাবাগান থানার পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ মাহফুজুল কবির। ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রেজাউলকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তিনি। ২০২৪ সালের ৭ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।

আসামি পলাতক হওয়ায় রায়ের সময় আজ তাঁর পক্ষে কোনো আইনজীবীও উপস্থিত ছিলেন না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ