চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে আবার মানববন্ধন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
Published: 12th, January 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। আজ রোববার দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন হয়। এতে বক্তারা পোষ্য কোটা বহালের দাবি জানিয়েছেন।
একই দাবিতে বৃহস্পতিবারও মানববন্ধন করেছিলেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। ওই দিন পোষ্য কোটা বহাল না রাখলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আজ সকালে এ কর্মসূচি হচ্ছে। পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে সম্প্রতি এই প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি আন্দোলন পরিচালনায় ১৪ সদস্যর একটি সমন্বয়ক দলও গঠন করা হয়েছে।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো.
প্রকৌশল দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার খালেদুর রহমান বলেন, ছাত্ররা পোষ্য কোটা বাতিলে অবস্থান নিচ্ছেন। ছাত্রদের সঙ্গে তাঁদের অবস্থান সাংঘর্ষিক নয়। ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম নিয়ে কর্মসূচি পালন করলে তাঁরা সঙ্গে থাকবেন। কোটার আসন আর সাধারণ আসন এক নয়। আলাদা মেধাতালিকায় তাঁদের সন্তানেরা ভর্তি হয়ে থাকেন। তাঁরা মেধাহীন নন। পাস করার পর ভর্তি হচ্ছে।
এর আগে গত বুধবার দুপুরে পোষ্য কোটা বাতিলে দাবিতে অনশন শুরু করেছিলেন সাত শিক্ষার্থী। পরে তাঁরা দিবাগত রাত দেড়টার দিকে অনশন প্রত্যাহার করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের আশ্বাসে এ কর্মসূচি থেকে সরে আসেন তাঁরা। রোববারের মধ্যে পোষ্য কোটা বাতিল না করা হলে আবার অনশন করার ঘোষণাও দিয়েছেন তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পোষ্য কোটা বাতিলের আন্দোলন শুরু হয়েছিল ২৯ ডিসেম্বর। ওই দিন শিক্ষার্থীরা এই কোটা বাতিল, আবেদন ফি কমানো, চাকসু নির্বাচন দেওয়াসহ ৯ দাবিতে মানববন্ধন করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলনের ব্যানারে এ কর্মসূচি হয়। আন্দোলনের এক পর্যায়ে ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে প্রশাসন দাবি না মানায় গত রোববার আবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে সোমবার শিক্ষার্থী, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নিয়ে আবার বৈঠকে বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বৈঠকে পোষ্য কোটা বাতিল না করে কমানোর সিদ্ধান্তের কথা শিক্ষার্থীদের জানানো হয়। পরে ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিরা এতে সম্মতি দেন। তবে এ সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে মঙ্গলবার থেকে আবার আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুর রোডম্যাপসহ ৩ দাবিতে অনশনে জবি শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে এ অনশন শুরু করেন তারা।
আরো পড়ুন:
শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে চেয়ারম্যান শূন্য জবির সিএসই বিভাগ, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
এর আগে, সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ এ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল।
অনশনে অংশ নেওয়া জবি শাখা গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ অভিযোগ করে বলেন, “মন্ত্রণালয়ের সব শিকল ভাঙলেও আমাদের অধিকার জবি প্রশাসনের কাছে আটকে আছে। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে না পারার কারণেই আমরা আজো বঞ্চিত। এখন আবার বিভিন্নভাবে বৃত্তি কাটছাঁটের চেষ্টা চলছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।”
সংগঠনের আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, “আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত। সিদ্ধান্ত এখন প্রশাসনের হাতে। সম্পূরক বৃত্তি নিয়ে যে নাটক শুরু হয়েছে, তার দ্রুত সমাপ্তি চাই।”
অন্যদিকে জবি ছাত্রঅধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, “অবস্থানসহ নানা কর্মসূচি দিয়েও প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশন ছাড়া আমাদের আর উপায় ছিল না। দাবি আদায় না হলে এর দায়ভার পুরোপুরি প্রশাসনকেই নিতে হবে।”
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি কার্যকরের সময়সীমা নির্দিষ্ট করে ঘোষণা; কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ; ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিকে আধুনিকায়ন ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু।
শিক্ষার্থীরা জানান, জকসু নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর অধিকার হলেও প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি ও লাইব্রেরির আধুনিকায়নের দাবিও দীর্ঘদিন ধরে জানানো হলেও প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে। প্রয়োজনে প্রাণ দিতে হলেও কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী