৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী পুলিশের কাছ থেকে সহজে সেবা পান না
Published: 12th, January 2025 GMT
পুলিশের কাছ থেকে সহজে সেবা পান না ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী। প্রায় ৩৮ শতাংশ শিক্ষার্থী সেবা নিতে গিয়ে হেনস্তার মুখে পড়েন। প্রায় ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী সরকার বা রাজনৈতিক নেতার সুপারিশ এবং ঘুষের মাধ্যমে সেবা নেন। বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের শিক্ষার্থীর ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘জনবান্ধব এবং দায়বদ্ধ পেশাদার পুলিশি ব্যবস্থা বিনির্মাণ : শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা এবং সুপারিশ’ শীর্ষক আয়োজিত এক সেমিনারে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড.
গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৬৮ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পুলিশকে আরও বেশি জবাবদিহির আওতায় আনতে স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের পক্ষে মত দিয়েছেন। পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষে মত দেন ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী।
গবেষণায় উঠে এসেছে, পুলিশ প্রশাসন অধিকাংশ সময় ক্ষমতাসীন দলের আদেশ ও ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করে। তারা সরকারের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় জবাবদিহি হারিয়েছে। ফলে একটি জনশুনানি এবং একটি স্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সেল গঠনের মাধ্যমে পুলিশকে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধ করা সম্ভব। এ ছাড়া একটি স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করলে তাদের জবাবদিহির মধ্যে আনা যেতে পারে।
৮০ শতাংশ উত্তরদাতা রাজনীতিমুক্ত স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের সুপারিশ করেন। পুলিশের বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করেন ৪০ শতাংশ উত্তরদাতা। প্রায় ৩৮ শতাংশ উত্তরদাতা পুলিশের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সুবিধা বাড়ানোর কথা বলেন।
উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক তৈয়েবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্যের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইয়ান-হেনরিক মায়ার-শ্যালিং, ইউএনডিপির পলিটিক্যাল গভর্ন্যান্সের উপদেষ্টা শীলা তাসনিম হক প্রমুখ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলামী শ্রম আইন বাস্তবায়নের দাবি
শ্রমিক সমাজের মুক্তির জন্য ইসলামী শ্রমনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে র্যালি, আলোচনা সভা ও সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।
মহান মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল থেকে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
গাজীপুরে শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, ইসলামী শ্রমনীতি ছাড়া যে শ্রমিকের মুক্তি সম্ভব না, তা আজ প্রমাণিত। স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরও বিদ্যমান শ্রম নীতিমালাই বাস্তবায়ন করা যায়নি। দেশের অর্থনীতির আকার বড় হয়েছে, জিডিপির আকার বড় হয়েছে, কিন্তু শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। টাকার অংকে শ্রমিকের বেতন বাড়লেও মূল্যস্ফীতির কারণে প্রকৃত মজুরি বরং আরো কমেছে। এই বাস্তবতায় রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামকে ভিত্তি বানাতে না পারলে শ্রমিকের ভাগ্য কোনোদিনই পরিবর্তন হবে না।
ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান নোয়াখালীর সেনবাগে তার নির্বাচনি এলাকায় শ্রমিক-জনতা সমাবেশে বলেছেন, ইসলামী শ্রম আইন বাস্তবায়নে সামগ্রিক আন্দোলন করা ছাড়া শ্রমিকের সামনে আর কোনো পথ নেই। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন সে পথেই হাঁটবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস কেবল একটি দিন নয়, বরং শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, মর্যাদা ও ন্যায্যতার প্রতীক। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ শুরু থেকেই এ চেতনাকে ধারণ করে শ্রমজীবী জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এবারের দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী যে উদ্দীপনা ও অংশগ্রহণ আমরা দেখেছি, তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ও অনুপ্রেরণাদায়ক।
মে দিবসে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, নড়াইল, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, মাগুরা, মেঘনাঘাটসহ সাংগঠনিক জেলাগুলো সভা-সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক