ইরানের কাছে এখনও অস্ত্র তৈরির উপযোগী ইউরেনিয়াম আছে, দাবি ইসরায়েলের
Published: 11th, July 2025 GMT
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের বাঙ্কার বিধ্বংসী বোমা হামলার পরও তেহরানের কাছে কিছু সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়ে গেছে বলে মনে করে ইসরায়েল। তেল আবিবের আশঙ্কা, এসব ইউরেনিয়াম পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এ খবর জানায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা শুরু থেকেই দাবি করে আসছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনাই ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ হয়ে গেছে। গত ২২ জুন ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বিশেষ বাঙ্কার বিধ্বংসী বোমার মাধ্যমে ইরানে এ হামলা চালানো হয়।
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের মুখপাত্র শন পারনেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে অন্তত এক থেকে দুই বছর পেছনে ঠেলে দিয়েছি। অন্তত প্রতিরক্ষা দপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের পর্যালোচনায় এমনটাই মনে করা হচ্ছে। যদিও শন পারনেল তাঁর এ দাবি প্রমাণে কোনো তথ্য উপস্থাপন করেননি। পারনেল বলেন, গোয়েন্দা বিশ্লেষকদের হিসাব অনুযায়ী, আসল সময়টা সম্ভবত দুই বছরের কাছাকাছি।
ইসরায়েলের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে থাকা ১৮ হাজার সেন্ট্রিফিউজের বেশির ভাগই ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ সব ইউরেনিয়াম নষ্ট হয়নি। কিছু ইউরেনিয়াম বিশেষ পাত্রে আলাদা করে সংরক্ষণ করা ছিল, যা এখনও ইরানি বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করতে পারেন। তবে ওই ইসরায়েলি কর্মকর্তা হুঁশিয়ার করে বলেন, কেউ যদি সে ইউরেনিয়াম সংগ্রহের চেষ্টা করে, তবে ইসরায়েল তা ধরে ফেলবে এবং আবার হামলা চালাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েলের বিশ্বাস, ১০ মাস আগে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর ইরান যে জোরেশোরে পরমাণু বোমা বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, তার যথেষ্ট প্রমাণ ইসরায়েলের হাতে আছে। নাসরাল্লাহ ছিলেন ইরানের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।
তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাসচিব রাফায়েল গ্রোসি বলেন, হামলার আগেই ইরান তাদের অনেক ইউরেনিয়াম মজুত সরিয়ে ফেলেছিল। তবে ইসরায়েলের ওই কর্মকর্তা বলেন, এটা সম্ভব নয়। কারণ, এমনটা করা খুবই কঠিন।
ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণের উদ্দেশ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেই ভিন্ন ভিন্ন মত দেখা গেছে। দেশটির গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড বলেছিলেন, ইরান কোনো পরমাণু বোমা বানাচ্ছে না। কিন্তু ইসরায়েল বারবার দাবি করে ইরান বোমা বানানোর কাছাকাছি রয়েছে। গত তিন দশকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একাধিকবার ইরানের বিরুদ্ধে এ দাবি করেন। তাঁর বিরুদ্ধে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে টেনে আনার অভিযোগ রয়েছে।
গত ১৩ জুন থেকে ইরানের ওপর হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে একের পর এক হামলা চালায় তারা। জবাবে ইসরায়েলের হাইফা, তেল আবিবসহ বিভিন্ন বড় শহরের দিকে ইরান টানা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। এগুলোর কিছু কিছু স্পর্শকাতর এলাকায় আঘাত হানে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইসর য় ল র ইউর ন য় ম কর মকর ত পরম ণ
এছাড়াও পড়ুন:
টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২০
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের মধ্যাঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২০ জনে পৌঁছেছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১৭১ জন। গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪ জুলাই টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের স্যান অ্যান্টোনিও শহরে প্রবল বৃষ্টির কারণে গুয়াডালুপ নদীর পানি বেড়ে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যার পানিতে কের কাউন্টির নদীতীরবর্তী সামার ক্যাম্প ‘মিস্টিক’ প্লাবিত হয়। এতে বন্যার পানিতে ভেসে যান ক্যাম্পে অংশ নেওয়াদের মধ্যে অন্তত ৩২ মেয়ে ও দু’জন মেন্টর। তাদের মধ্যে ২৭ মেয়ে ও ক্যাম্পের পরিচালক ৭০ বছর বয়সী রিচার্ড ইস্টল্যান্ড মারা গেছেন। এ ছাড়া আরও পাঁচজন ক্যাম্পার ও ১৯ বছর বয়সী একজন মেন্টর এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কের কাউন্টি। এখানে কমপক্ষে ৯৬ জনের প্রাণ গেছে, যার মধ্যে ৩৬ জনই শিশু। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এই অঞ্চলের কমপক্ষে ১৬১ জনের এখনও সন্ধান মেলেনি। এ ছাড়া ট্রাভিস, বার্নেট, কেন্ডাল, উইলিয়ামসন এবং টম গ্রিন কাউন্টিতেও প্রাণহানির খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো।