আপনি কিসের তৈরি স্যুপ খাচ্ছেন, মূলত তার ওপরই নির্ভর করছে স্যুপ খেলে আপনার ওজন বাড়বে, নাকি কমবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে আপনাকে ক্যালরি হিসাব করে স্যুপ তৈরি করতে হবে। আর এমন স্যুপ বেছে নিতে হবে, যা খেলে বেশ লম্বা একটা সময় আপনার ক্ষুধা লাগবে না। অবশ্য পেট ভরার মতো খাবার না হলেও কিন্তু ক্লিয়ার স্যুপ খাওয়া যেতে পারে কোনো কোনো বেলায়। ওজন কমাতে কোন স্যুপ খাওয়া যাবে আর কোন স্যুপ খাওয়া যাবে না, এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানালেন ঢাকার গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান

যে স্যুপে ক্যালরি কম

সাধারণভাবে স্যুপকে হালকা খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে স্যুপেও ক্যালরির মাত্রা হতে পারে বেশি। যে স্যুপ ঘন করতে কর্নফ্লাওয়ার বা অ্যারারুট–জাতীয় উপকরণ যোগ করা হয়, তাতে ক্যালরির পরিমাণ বেশি। মাখনের মতো উপকরণ দেওয়া হলেও ক্যালরির পরিমাণ বেড়ে যায়। ক্রিমজাতীয় স্যুপ উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন খাবার। তবে ক্রিমটা যদি কেবল সবজি দিয়ে তৈরি করা হয়, তাহলে অবশ্য ভিন্ন কথা।

যদি আপনার লক্ষ্য হয় ওজন নিয়ন্ত্রণ, তাহলে আপনি যে স্যুপ খাচ্ছেন, তাতে ক্যালরির মাত্রা যেন বেশি না হয়। স্যুপে টপিং হিসেবে উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন উপকরণ, যেমন ক্রিম যোগ করা উচিত নয়। সব ধরনের প্রক্রিয়াজাত মাংসই এড়িয়ে চলুন। স্যুপে সস বা কেচাপও যোগ করবেন না। স্বাস্থ্যকর টপিং হিসেবে ডিম, মটরদানা, নানান ধরনের বাদাম, সুস্বাদু মসলা বা পাতা যোগ করা যেতে পারে। টপিং হিসেবে খানিকটা পনিরও মন্দ নয়।

আরও পড়ুনমনো ডায়েট কী, তারকারা কীভাবে এই ডায়েট মেনে ওজন কমান০৬ জানুয়ারি ২০২৫যে স্যুপে পেট ভরা থাকবে

এমন স্যুপ বেছে নিন, যা খেলে সহজে ক্ষুধা পাবে না। স্যুপে যদি গোটা বা আধভাঙা সবজি, শাক কিংবা বীজ, অর্থাৎ আঁশসমৃদ্ধ উপকরণ থাকে বেশ ভালো পরিমাণে, তাহলে তা খাওয়ার পর পেট ভরা থাকবে লম্বা সময়। একইভাবে উপকরণ হিসেবে বেশ ভালো পরিমাণে বার্লি বা ওটসের মতো কোনো গোটা শস্য (অর্থাৎ যা পরিশোধিত নয়) থাকলে সেই স্যুপ খাওয়ার পরও সহজেই ক্ষুধা পাবে না। স্যুপে খানিকটা আমিষ যুক্ত হলেও তা খাওয়ার পর পেট ভরা থাকে অনেকক্ষণ। সে হিসেবে মসুর ডালের স্যুপ দারুণ।

তবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনি কিন্তু নুডলস স্যুপও খেতে পারেন। কারণ, কেবল নুডলস খেলে আপনি যতটা শর্করা গ্রহণ করবেন, নুডলস দেওয়া স্যুপ খেলে সহজেই তার চেয়ে কম পরিমাণে শর্করা গ্রহণ করতে পারবেন। কারণ, স্যুপের জলীয় অংশ দিয়ে সহজেই পেট ভরে যাবে আপনার। নুডলসের পরিমাণ কম রেখে পানির পরিমাণ বাড়ালে আপনি খাবারের স্বাদটাও পাবেন, আবার ক্যালরি গ্রহণও হবে নিয়ন্ত্রিত।

আরও পড়ুনতেঁতুলপানি খেলে কি ওজন কমে০৩ জানুয়ারি ২০২৫যে স্যুপে পেট ভরবে না

ক্লিয়ার স্যুপ খেলে অল্প সময় পরই আপনার আরও কিছু খেতে ইচ্ছা করবে। কিন্তু ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে আপনি কোনো বেলার নাশতায় ক্লিয়ার স্যুপও খেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ক্লিয়ার স্যুপ খাওয়ার পর আপনি এমন কিছু খাবেন, যা খুব একটা সুস্বাদু না হলেও স্বাস্থ্যকর। যেমন স্যুপ খাওয়ার পর আপনি সালাদ খেতে পারেন কিংবা খেতে পারেন পানসে বা টক স্বাদের ফল। তাহলে কিন্তু আর সহজে ক্ষুধা পাবে না।

তবে বারবার স্যুপ নয়

খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে আপনি দু–এক বেলা স্যুপ খেতেই পারেন। যে স্যুপ খেলে পেট ভরা থাকে, তা আপনি উচ্চ ক্যালরিযুক্ত নাশতার বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন। খেতে পারেন রাতের খাবার হিসেবেও। এমন অভ্যাসে ওজন কমবে। তবে প্রতি বেলাতেই স্যুপ খাওয়াও আবার ভালো নয়। প্রায় সারা দিন কেবল তরল খাবার না খেয়ে অন্তত সকাল আর দুপুরে স্বাভাবিক অন্যান্য খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

আরও পড়ুনজিমে না গিয়েও যেভাবে ওজন কমাতে পারেন১১ জানুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ ফিউশন খাবার উপস্থাপনা

মানজু রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক ব্যতিক্রমধর্মী খাবার আয়োজন, যেখানে দেশি স্বাদের সাথে ছিল আন্তর্জাতিক রান্নার কৌশল ও উপকরণ। আয়োজনে ঐতিহ্য ও আধুনিকতা একসূত্রে গাঁথা হয়েছে।

সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, এ আয়োজনের মূল আকর্ষণ ছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রন্ধনশিল্পী ইনারা জামাল, যিনি ফুড স্টাডিজে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর এবং ইনস্টিটিউট অব কালিনারি এডুকেশন, নিউইয়র্ক থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।

ইনারা জামাল বলেন, ‘খাবার শুধু স্বাদের বিষয় নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গ। আমি চাই বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারকে ভিন্ন দেশের উপকরণ ও কৌশলের সঙ্গে মিশিয়ে বিশ্বদরবারে নতুন রূপে উপস্থাপন করতে। সৃজনশীল উদ্ভাবনের মাধ্যমে বাংলাদেশি খাবারকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা। একইসঙ্গে, তার লক্ষ্য বাংলাদেশের খাদ্যসংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে গবেষণার আলোয় তুলে ধরা, যেন এই সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষিত থাকে। খাবারে তিনি সবসময় প্রাধান্য দেন প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান এবং টেকসই উপস্থাপনাকে।

এই আয়োজনকে আরও রঙিন করে তোলে রন্ধনশিল্পী মালিহার বাহারি পরিবেশনা, যেখানে দেশি উপাদান ব্যবহার করে তৈরি করা হয় নানান স্বাদের সুস্বাদু খাবার।

আয়োজকরা জানান, এই আয়োজনের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশি খাদ্যসংস্কৃতিকে আধুনিক উপস্থাপনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা এবং ভোজনরসিকদের সামনে এক নতুন স্বাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে আসা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা খাবারের স্বাদ, গন্ধ ও পরিবেশনায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা রক্ষার ওপর জোর দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আহারে চার পদ
  • মাটির গুণগত বৃদ্ধিতে ‘বিনা বায়োচার’ উদ্ভাবন
  • সুন্দর ভবনে পরিত্যক্ত কক্ষ, কমেছে শিক্ষার্থী, ঢিমেতালে চলে কার্যক্রম
  • ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ ফিউশন খাবার উপস্থাপনা