নৌকা ডুবিয়ে ৩ জেলেকে ফেলে দেওয়া হয় সমুদ্রে
Published: 13th, January 2025 GMT
গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জাল পাতা নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই দল জেলের সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। এ সময় এক পক্ষের নৌকা ডুবিয়ে জেলেদের সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। তারা পরে অন্য জেলেদের সহায়তায় তীরে ফেরেন। রোববার রাত ১০টার দিকে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা থেকে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের চর বিজয় এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়।
আহত জেলেদের মধ্যে মম্বিপাড়ার বাসিন্দা মো.
আহত জেলে ও কুয়াকাটার আড়তদাররা জানান, উপজেলার নিজামপুর এলাকার সোবহান মাঝির নেতৃত্বে শত শত ট্রলারে করে বেহুন্দি জাল নিয়ে যাওয়া হয় বঙ্গোপসাগরে। এর মধ্যে কিছু জাল তারা গঙ্গামতি এলাকায় ইলিয়াস ও নাসিরদের ফেলা ইলিশের জালের ওপরে ফেলে। এতে ইলিশের জালের ক্ষতি হয়। বিষয়টি নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সোবহান মাঝির নেতৃত্বে সাতটি ট্রলারের ১৫-২০ জন ইলিয়াসের পক্ষের ওপর হামলা করে। এ সময় তাদের মাছ ধরার ট্রলার ডুবিয়ে সবাইকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়। পরে তারা অন্য ট্রলারের সহায়তায় তীরে আসেন।
আহত জেলে ইলিয়াস ফকির বলেন, ‘ওরা আমাদের জাল নষ্ট করেছিল। এ কারণে তাদের ডেকে তীরে এসে এ নিয়ে সমাধানের প্রস্তাব দেই। তারা প্রথমে রাজি হয়। পরে হঠাৎ হামলা চালায়। আমার নাক ও কপাল ফেটে গেছে। আমি সাগরে পড়ে গেলে আমার ভাই অন্য ট্রলার নিয়ে উদ্ধার করে।’ এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে সোবহান মাঝির সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। রোববার রাতের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন কুয়াকাটা পৌর মেয়র বাজারের আড়তদার সমিতির সভাপতি মো. আবদুর রহিম খান। তিনি বলেন, তারা অবৈধ বেহুন্দি জাল নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরে। ইলিশ শিকারি বৈধ জেলেদের ক্ষতি করে। রোববার কোনো রকম মীমাংসার সময় না দিয়েই তারা জেলেদের ওপর হামলা করেছে। তাদের লাগাম না টানলে সমুদ্রে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কলাপাড়া উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, আহত জেলেরা আইনের আশ্রয় নিলে বিষয়টি নৌ-পুলিশ খতিয়ে দেখবে। এ ছাড়া তাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। অবৈধ বেহুন্দি জাল বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
এ বিষয়ে সংবাদ পেয়েছেন বলে জানান কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, আহত জেলেরা যদি আইনের আশ্রয় নেন, তাহলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ