Samakal:
2025-05-01@05:34:46 GMT

নবজাতক যখন আইসিইউতে

Published: 13th, January 2025 GMT

নবজাতক যখন আইসিইউতে

নবজাতক আইসিইউ বলতে আমরা কী বুঝি? 
নবজাতক আইসিইউ হাসপাতালের এমন একটি বিশেষ অংশ যেখানে জন্মের পর থেকে শুরু করে ২৮ দিন বয়সী বিভিন্ন রকম অসুস্থ নবজাতককে চিকিৎসার জন্য রাখা হয়।
কী ধরনের শিশুকে আইসিইউতে রাখা হয়? 
যেসব নবজাতক অত্যন্ত স্বল্প ওজনের (আড়াই কেজির কম), সময়ের  অনেক আগে (৩৭ সপ্তাহের আগে) জন্মগ্রহণ করেছে, শ্বাসকষ্ট আছে, যেসব বাচ্চা জন্মের পরপর কান্না করেনি বা শ্বাস নেয়নি কিংবা গুরুতর ধরনের জন্ডিসে আক্রান্ত অথবা জীবাণু সংক্রমণে আক্রান্ত এবং যাদের বিভিন্ন ধরনের জন্মগত ত্রুটি বা জটিলতা আছে এবং অপারেশন প্রয়োজন তাদের নবজাতক আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। 
আইসিইউতে বাচ্চাদের কীভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়?
যেসব বাচ্চা সময়ের আগে জন্মগ্রহণ করে, ওজন কম এবং শ্বাসকষ্ট বা অন্য জটিলতা থাকে তাদের আমরা ওয়ার্মার বা ইনকিউবেটরে রাখি, যাতে শরীরে তাপমাত্রা বজায় থাকে। তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসে অক্সিজেনের মাত্রা বজায় আছে কিনা, তা মনিটর করা হয়। প্রয়োজনমতো অক্সিজেন বা কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া হয়। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ওষুধ দেওয়া হয়। যাদের জন্ডিস বেশি, তাদের জন্য ফটো থেরাপির ব্যবস্থা করা হয়। কোনো বাচ্চার যদি জন্মগত ত্রুটি থাকে তাহলে তাদের অপারেশনের ব্যবস্থা করা হয়। রক্তে জীবাণু সংক্রমণ বা নিউমোনিয়া থাকলে যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। এখানে উল্লেখ্য, আলোক নবজাতক আইসিইউতে (Aalok NICU) সব ধরনের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে। 
আইসিউতে কতদিন থাকা প্রয়োজন?
যদি সামান্য অসুস্থতা থাকে তাহলে দেখা গেছে কোনো বাচ্চাকে তিন-চার দিন পরই ছুটি দেওয়া সম্ভব। কোনো কোনো বাচ্চার ক্ষেত্রে বেশি সময় প্রয়োজন হতে পারে, সেটি বাচ্চার ওজন এবং তার শারীরিক জটিলতার ওপরে নির্ভর করে। 
আইসিউতে থাকাকালে বাচ্চার খাবার-দাবারের ব্যবস্থা কী?
সাধারণত প্রথম দুই-এক দিন বাচ্চার হজমশক্তি পর্যবেক্ষণ করতে হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে অল্প পরিমাণ করে মায়ের দুধ শুরু করা হয়, সঙ্গে পুষ্টির স্যালাইন চলতে থাকে। এক সময় বাচ্চার অবস্থা বুঝে তাকে  সরাসরি বুকের দুধ টেনে খেতে দেওয়া হয়। 
নবজাতক আইসিইউতে থাকলে ভবিষ্যতে কি তার কোনো সমস্যা হতে পারে?
নবজাতক অবস্থায় সঠিক সময়ে চিকিৎসা দিতে পারলে ভবিষ্যতে তার পরিপূর্ণভাবে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর। যদি সময়মতো চিকিৎসা না দেওয়া হয় তাহলে বরং জটিলতা হতে পারে। 
এমন হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

[কনসালট্যান্ট, গাইনি অ্যান্ড অবস
চেম্বার: আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার]

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দহন থেকে  জংলি

‘আমি নিয়মিত অনেক চিত্রনাট্য পাচ্ছি। নিয়মিত সেসব সিনেমা করলে প্রচুর টাকা কামাতে পারব। ফিন্যান্সিয়ালি জায়গাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দর্শক আমাকে যেভাবে দেখতে চাচ্ছেন, তেমন গল্প পাচ্ছি না। দর্শক-প্রত্যাশার চেয়ে ভালো কিছু দিতে চাই। যখন সামগ্রিক চিন্তা করি, তখন ভাবতে হয় আমি কতটা আয় করলাম তার চেয়েও দর্শকের সামনে কীভাবে আসছি, সেটি মুখ্য। এটি একটি প্যাকেজ। মাঝে একটি-দুটি গল্প পছন্দ হয়। সেসব টিমের যে অবস্থা, বাজেট সামগ্রিকভাবে দেখতে গেলে ভালো গল্প তুলে আনা কঠিন হবে। তখন আমি না করে দিই। আমি চাইছি নিজের মতো করে কাজ করতে। জীবনে অনেক সিনেমা করতে হবে, এমন চিন্তা নেই। আমার মতো করে অল্প কিছু কাজ করে যেতে চাই।’ বলছিলেন সিয়াম আহমেদ।

গেল ঈদে মুক্তি পেয়েছে সিয়াম আহমেদ অভিনীত সিনেমা ‘জংলি’। যে সিনেমার সঙ্গে জড়িয়ে আছে নায়কের আবেগ ও পরিশ্রমের দীর্ঘ গল্প। সিনেমাটি করতে একচুলও ছাড় দেননি সিয়াম। ফলাফল হিসেবে পেয়েছেন দর্শকের অবারিত ভালোবাসা। জংলি মুক্তির পর তাই গল্পটি হয়ে উঠেছে সবার। দর্শকরা হলে গিয়ে কেঁদেছেন, গল্পে বুঁদ হয়ে থেকেছেন। করেছেন সিয়াম ও তাঁর টিমের প্রশংসা। 

সিয়াম বললেন, ‘এ সিনেমায় আমি দীর্ঘ সময় দিয়েছি। সিনেমার জন্য চুলদাড়ি বড় করেছি। একটি সিনেমার জন্য আমার পাগলামি নিয়ে মা-বাবার মনে হয়তো প্রশ্ন ছিল, ছেলেটি চুল-দাড়ি বড় করে কী করছে? কী করেছি, এটি তো তাদের বোঝানো যায় না। তবে আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, সিনেমাটি মুক্তির পরে গল্পটি তাদের টাচ করবে। কারণ, গল্পটিই এমন, এটি প্রথম যদি কাউকে টাচ করে, সেটি সন্তানের মা-বাবাদের। যে কারণে তাদের একসঙ্গে হলে নিয়ে কাছ থেকে অনুভূতি জানার চেষ্টা করেছি। এখন পর্যন্ত মা-বাবার কাছ থেকে সেরা ফিডব্যাক পেয়েছি। বাবা-মেয়ের গল্পটি দেখে তারা ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিলেন। শুধু আমার বাবা-মা নন, অন্য মা-বাবাদের কাছেও গল্পটি নিজেদের হয়ে উঠেছে। তারা সিনেমাটি দেখে কেঁদেছেন। হল রিঅ্যাকশনের সেসব ভিডিও সবাই দেখেছেন। সব মিলিয়ে আমরা সফল। আমাদের জংলি সফল।’

মুক্তির পর থেকে ‘জংলি’ সিনেমার এগিয়ে যাওয়ার গ্রাফ দেখলে শুধু দর্শকের ভালোবাসায় সফল নয়, ব্যবসায়িকভাবেও সিনেমাটি যে সফল তার চিত্র বিদ্যমান। মাত্র ৮টি শো দিয়ে শুরু হওয়া সিনেমাটি ঈদের এতদিন পরও মাল্টিপ্লেক্সে ত্রিশটির মতো শো নিয়ে দাপিয়ে চলছে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও জংলি হয়ে উঠেছে দর্শকদের সিনেমা।  

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টাইগার মিডিয়ার কর্ণধার জানিয়েছেন, জংলি প্রায় ছয় কোটির (গ্রস) ক্লাবে প্রবেশ করেছে। 

ঈদে মুক্তির পর থেকে ক্রমশ দর্শকপ্রিয় হয়ে ওঠে ‘জংলি’। এমনকি, দেশের সিনেমাপ্রেমীদের মন জয় করে কানাডা, আমেরিকা ও ইউকে’র ৪০টি থিয়েটারে মুক্তি পেয়েছে ‘জংলি’। গত ২৫ এপ্রিল থেকে স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো-এর পরিবেশনায়, ঈদের সিনেমাগুলোর মধ্যে দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি থিয়েটারে একযোগে মুক্তি পেয়েছে এ সিনেমাটি। কানাডা ও আমেরিকার বক্স অফিসে প্রথম ৩ দিনের গ্রস ৩৫,০০০ ডলার আয় করে শুভসূচনা করেছে ‘জংলি’।

ঈদে আরও অনেক ছবি মুক্তি পেয়েছে। সেগুলোর মধ্যে জংলি বিশেষ হয়ে উঠেছে কেবল বাবা-মেয়ের গল্পের কারণে। সঙ্গে সিয়ামের নজরকাড়া অভিনয়। নৈঋতার পাখি হয়ে ওঠার দারুণ চেষ্টা। দিমিত্রি থে স্টোনহার্ট নামে এক মনীষী বলেছেন, ‘একজন বাবা বলেন না যে তিনি তোমাকে ভালোবাসেন; বরং তিনি দেখিয়ে দেন যে, তিনি তোমাকে ভালোবাসেন’ জংলি সিনেমায় সিয়াম সেটি বোঝাতে পেরেছেন। ফলে সিনেমাটি হয়ে উঠেছে সবার।

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন– ‘পৃথিবীতে আসার সময় প্রতিটি মানুষই একটি করে আলাদিনের প্রদীপ নিয়ে আসে, কিন্তু খুব কম মানুষই সেই প্রদীপ থেকে ঘুমন্ত দৈত্যকে জাগাতে পারে।’ 
সিয়াম তাঁর জীবনের সেই দৈত্যকে জাগাতে পেরেছেন। পেরেছেন বলেই হয়তো আজ তিনি সাধারণ সিয়াম থেকে নায়ক সিয়াম হয়ে উঠেছেন। সিয়ামের যাত্রাটা শুরু বেশ আগে হলেও পুরোপুরি শুরু হয় ‘দহন’ সিনেমার মাধ্যমে। রায়হান রাফী পরিচালিত এ সিনেমাটির মাধ্যমে সিয়াম নাটক থেকে পুরোপুরি চলচ্চিত্রের মানুষ হয়ে ওঠেন। সে যাত্রা এখনও চলছে। প্রথম সিনেমায় যে সিয়ামকে সবাই  দেখেছেন, জংলির সেই সিয়াম যেন আকাশ-পাতাল। তখন সিয়াম ছিলেন তরুণ, এই সিয়াম এখন বাবা। পর্দায় ও বাস্তবে দুই জায়গাতে দারুণ এক বাবা হয়ে উঠেছেন তিনি। নিজের অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে আগামী পরিকল্পনা কী? প্রশ্ন রাখলে নায়ক বলেন, ‘আমি নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চাই। যারা আমার আগের কাজ দেখেছেন, তারা যেন বলেন, আগের কাজকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছি। আরেকজনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া কঠিন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ