অনটনের সংসারে মো. জুবায়ের আহম্মেদের (১৯) পড়ালেখা ছিল অনিয়মিত। নিজে টুকটাক রোজগার করে, বোনের সাহায্য নিয়ে পড়ালেখা চালাতেন। পরীক্ষার ফি পরিশোধ করতে না পারায় তিন বছর এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেননি।

তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান জুবায়েরের মনোবল বাড়িয়েছে। পড়ালেখায় যুক্ত হতে নতুন করে প্রেরণা জুগিয়েছে। তাই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হলেও এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। ঢাকা বোর্ডের অধীনে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৩ দশমিক ৩৯ পেয়ে পাস করেছেন তিনি।

জুবায়ের আজ শুক্রবার পরীক্ষার নম্বরপত্র পাঠিয়ে প্রথম আলোকে তাঁর পাস করার তথ্য জানান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষার ফল ভালো না হলেও তিনি খুশি, বাসার সবাই খুশি। শরীরে অনেক ব্যথা-যন্ত্রণা নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কোনো কোনো পরীক্ষার সময় শরীরে যন্ত্রণার তীব্রতা অনেক বেশি ছিল। জুবায়ের বলেন, ‘আমি এসএসসি পাস করেছি। মা, বোন আর খালামণি যে কী খুশি! আমার চেয়েও বেশি খুশি হয়েছেন তাঁরা।’

মো.

জাকির হোসেন ও জেসমিন আক্তার দম্পতির দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে ছোট জুবায়ের। তাঁরা থাকেন রাজধানীর তুরাগ থানার কামারপাড়া এলাকায়। বাবা জাকির হোসেন গাড়িচালক। আর বোন জাকিয়া সুলতানা বাড্ডায় নিজের সংসারে থাকেন। জুবায়ের কামারপাড়া উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

এর আগে জুবায়েরের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা নিয়ে প্রথম আলো অনলাইন সংস্করণে গত ১২ মে ‘অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ জুবায়ের ব্যথা-যন্ত্রণা নিয়েই দিচ্ছেন এসএসসি পরীক্ষা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়ে গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর উত্তরায় বিএনএস সেন্টারের সামনে জুবায়ের গুলিবিদ্ধ হন। গুলি তাঁর পাঁজরের নিচের অংশ ভেদ করে পাকস্থলী স্পর্শ করে বাঁ পাশে আটকে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসার কাগজপত্রে জুবায়েরের জখমের বিষয়ে লেখা, ‘বুলেট ইনজুরি (গুলিতে আহত)’।

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন স্কাউট গ্রুপের সদস্য ছিলেন। ২০২২ সাল থেকে ওই একই স্কাউট গ্রুপের সদস্য জুবায়ের। মুগ্ধ নিহত হওয়ার পর বিষণ্ন হয়ে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র এসএসস পর ক ষ র প স কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঝালকাঠিতে ৪ বিদ্যালয়ে পাস করেনি কেউ

২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ঝালকাঠির জেলার নলছিটি উপজেলার চারটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেউই উত্তীর্ণ হতে পারেনি। 

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া চারটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সবাই অকৃতকার্য হয়েছে, যার ফলে এসব বিদ্যালয়ের পাসের হার দাঁড়িয়েছে শতভাগ শূন্যতে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রকাশিত বরিশাল বোর্ডের এসএসসি ফলাফলে এ তথ্য উঠে আসে।

ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, উপজলার কুলকাঠি ইউনিয়নের দেলদুয়ার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৩ জন, রানাপাশা ইউনিয়নের ভেরনবাড়িয়া সিএসইউ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৭ জন, মাটিভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৭ জন ও দপদপিয়া ইউনিয়নের জুরকাঠি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়য়ের ১১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। কিন্তু চার বিদ্যালয়ের কেউই উত্তীর্ণ হতে না পারায় জেলার শিক্ষা মান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সি‌দ্দিকী বলেন, “নলছিটিতে চারটি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। কেন তাদের কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি, সেই বিষয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হবে এবং ওই সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/অলোক/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শারীরিক সীমাবদ্ধতা জয় করে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে তানিশা
  • জিপিএ ৫ পেলেও কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় সুব্রত
  • বন্দরে মালেক সিকদারের নাতি ফাইয়াজ জিপি-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ  
  • ২২ শিক্ষকের বিপরীতে শিক্ষার্থী ৩০, পাস করেনি কেউ
  • এসএসসি পরীক্ষায় সেনাবাহিনী পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দারুণ সাফল্য
  • দুই স্কুলের ২২ শিক্ষক পাস করাতে পারেননি ৩০ শিক্ষার্থীকে!
  • মোবাইলে আসক্তি, বিয়ে, পড়াশোনায় অনীহা: পাস করেনি কেউ
  • এসএসসিতে ছয় লাখ ফেল, তাদের কথা কি আমরা ভাববো না?
  • ঝালকাঠিতে ৪ বিদ্যালয়ে পাস করেনি কেউ