ভ্যাট বৃদ্ধি এফডিআই বাধাগ্রস্ত করতে পারে
Published: 13th, January 2025 GMT
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফিকি গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া সাম্প্রতিক ভ্যাট ও অন্যান্য কর বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গতকাল সোমবার এক প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনটি বলেছে, ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক এবং অন্যান্য কর বৃদ্ধির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত সাধারণ ভোক্তাদের ওপর প্রভাব ফেলবে এবং দেশের ব্যবসা পরিচালনার খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে। এ পদক্ষেপ ব্যবসার আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতা হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
ফিকির প্রতিক্রিয়ায় আরও জানানো হয়, বিস্তৃত গবেষণা বা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া নীতি প্রণয়ন বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করতে পারে এবং ভবিষ্যৎ এফডিআই প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করতে পারে। উল্লেখযোগ্য নীতি পরিবর্তনের আগে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সংলাপের অভাব দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের জন্য নেতিবাচক বার্তা দিতে পারে এবং বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশের স্থিতিশীলতা ও পূর্বানুমানযোগ্যতা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে। সংগঠনটি সরকারের সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলো পুনর্বিবেচনা এবং পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানিয়ে বলেছে, সরকারের এমন কৌশল নেওয়া উচিত, যা শিল্পগুলোকে তাদের বিক্রয় বাড়াতে উৎসাহিত করে। বিক্রয় বাড়লে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাজস্ব আহরণ বাড়বে।
ফিকি বলেছে, একটি অভিন্ন ভ্যাট হারের অধীনে যদি শতভাগ ইনপুট ভ্যাট পুনরুদ্ধারযোগ্য হয়, তাহলে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ালে এর প্রভাব ন্যূনতম হবে। যেসব ক্ষেত্রে ভ্যাট হার ১৫ শতাংশ করা হয়েছে, তার অনেক ক্ষেত্রে ইনপুট ভ্যাট পুনরুদ্ধার অযোগ্য। ফলে ক্ষতি এড়াতে শিল্পগুলো খরচ কমানোর চেষ্টা করলে সাধারণ ভোক্তাদের জন্য পণ্যের দাম বাড়বে। এর চূড়ান্ত প্রভাব হবে ভোগ কমে যাওয়া, যা সামগ্রিক রাজস্ব কমাবে। ফলে উচ্চ করের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর কৌশল কার্যকর হবে না।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।
আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।
সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।