পঞ্চগড়ে কাদিয়ানিদের কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে গণসমাবেশ
Published: 18th, January 2025 GMT
পঞ্চগড়ে কাদিয়ানিদের সকল প্রকার ‘ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম’ বন্ধ ও ‘হয়রানিমূলক’ সব মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গণসমাবেশ করেছে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা শহরের শের-ই বাংলা পার্কের মুক্তমঞ্চে এ সমাবেশ করে সংগঠনটি। সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন সংগঠনের নেতারা।
সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ পঞ্চগড়ের সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল হান্নানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক মসলিশে তাহফুজে খতমে নবুওয়তের যুগ্ম মহাসচিব এনামুল হক, উপদেষ্টা কমিটির সদস্য মাওলানা মাহমুদুল আলম, মাওলানা মুফতি আ.
সমাবেশে বক্তারা কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘‘কাদিয়ানিরা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে ২০২৩ সালে সালানা জলসা (সমাবেশ) করেছিল। সেই জলসা বন্ধের দাবিতে মুসলমানরা আন্দোলন করায় প্রশাসন কাদিয়ানিদের পক্ষ নিয়ে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরীহ মানুষদের হয়রানি করে। সেই মামলায় তাদের নির্বিচারে আটক করা হয়। আগের মতো এবারও যদি প্রশাসন তাদের সালানা জলসা করার অনুমতি দেয়, তাহলে পঞ্চগড়ের সাধারণ মানুষ ঘরে বসে থাকবে না।’’
তারা বলেন, ‘‘আমরা জেনেছি, কাদিয়ানিরা এবারও তাদের সালানা জলসার সমাবেশ করার চেষ্টা করছে। আহমদীয়া মুসলিম জামাত নামধারী কাদিয়ানি সম্প্রদায় মুসলমানদের পরিচয় বহন করে তারা কুফরি মতবাদ প্রচার করে, মুসলমাদের ঈমান ধ্বংস করছে। আশা করছি, প্রশাসন এবার তাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেবে না।’’
পঞ্চগড় জেলা শহরের উপকণ্ঠে আহমদনগর এলাকায় প্রতি বছর বার্ষিক সালানা জলসার আয়োজন করে আহমদিয়া (কাদিয়ানী) সম্প্রদায়। এই জলসা বন্ধের দাবিতে খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবছরই বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
২০২৩ সালের ৩ মার্চ সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে বিক্ষুব্ধরা। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে মুসল্লিদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ সাধারণ মুসল্লিদের উপর গুলি করে। ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে। পরবর্তীতে এসব ঘটনায় পুলিশ ও আহমদিয়াদের পক্ষ থেকে অন্তত ৩৫টি মামলা করা হয়। যেগুলোতে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের আসামি করা হয়।
ঢাকা/নাঈম/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায় চীনা বহুজাতিক কোম্পানি টেনসেন্ট
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীনা বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি টেনসেন্ট। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
ফেসবুক পোস্টে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লেখেন, বাংলাদেশে এসেছে মার্কিন জায়ান্ট স্টারলিংক। আজ (সোমবার) তাদের লাইসেন্স আবেদন অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। বাংলাদেশে বিগ টেক জায়ান্ট আসার যাত্রাটা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের হাত ধরেই শুরু হলো। এভাবে আসবে আরও অনেকেই।
চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট টেনসেন্ট বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে একই পোস্টে উল্লেখ করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, আজ আমরা চায়নিজ জায়ান্ট টেনসেন্টের সঙ্গে অফিশিয়ালি বসেছি। তারাও বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা তাদের দ্রুততম সময়ে পলিসি সাপোর্টের আশ্বাস দিয়েছি।
অসাইরিস গ্রুপও বাংলাদেশে আসছে বলে উল্লেখ করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে হাইপার স্কেলার ক্লাউড ও ডেটা সেন্টার হবে বাংলাদেশি ডাটা ও ক্লাউড কোম্পানি যাত্রার হাত ধরে। এখানে হচ্ছে বিগ জায়ান্টদের জন্য বিশ্বমানের সিকিউরড ক্লাউড সে-আপ, যেখানে আসতে পারে মেটা, গুগলের পেলোড। এমন অভাবনীয় সব উপহার বাংলাদেশকে দিতে চলছেন অধ্যাপক ইউনূস।
কী ব্যবসা করে টেনসেন্ট
টেনসেন্টের ওয়েবসাইটের দেওয়া তথ্য মতে, চীনের শেনজেনভিত্তিক প্রযুক্তি কোম্পানিটি ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। টেনসেন্ট নিজেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি কোম্পানি হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, তারা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু ভিডিও গেমসহ অন্যান্য উচ্চমানের ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে।
টেনসেন্টের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, গ্রাহকদের ডিজিটাল রূপান্তর ও ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তার জন্য তারা ক্লাউড কম্পিউটিং, বিজ্ঞাপন, ফিনটেক ও অন্যান্য এন্টারপ্রাইজ সেবা দিয়ে থাকে। চীনের জনপ্রিয় বার্তা আদান-প্রদানকারী অ্যাপ (ম্যাসেজিং অ্যাপ) উইচ্যাটের মালিক টেনসেন্ট। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়েও কাজ করে কোম্পানিটি।
টেনসেন্ট ২০০৪ সাল থেকে হংকং স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত কোম্পানি। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ফরচুন সাময়িকীর ২০২৪ সালের ‘ফরচুন গ্লোবাল ৫০০’ কোম্পানির তালিকায় টেনসেন্টের অবস্থান ছিল ১৪১তম।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজধানীতে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে বলা হয়, বর্তমানে বিশ্বের গেমশিল্পের বাজার ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা সমন্বিতভাবে সংগীত ও সিনেমাশিল্পের থেকেও বেশি। এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশেরও গেমশিল্পে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এই শিল্পের বিকাশ হলে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আর তাই বাংলাদেশের গেমশিল্প ও ডিজিটাল খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী চীনের অন্যতম বড় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান টেনসেন্ট।
২০২১ সালে প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সে সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের ভিডিও গেমশিল্পের বাজার নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি। তবে শিল্পের সঙ্গে জড়িত দেশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারেরা তখন বলছিলেন, এ বাজার ৫০ মিলিয়ন ডলার বা ৪২৮ কোটি টাকার মতো হবে।