ঋণচুক্তি, তিস্তা প্রকল্প, বাণিজ্য বৈষম্য কমানোসহ বাংলাদেশ চীনের সাথে যেসব চুক্তির প্রস্তাব আলোচনায় রয়েছে, সেগুলোর ব্যত্যয় ঘটবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

তিনি বলেন, “চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নে চীনের অঙ্গীকার অপরিবর্তিত রয়েছে। চীন সবসময় বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে ছিল এবং ভবিষ্যতে থাকবে।”

রোববার (১৯ জানুয়া‌রি) সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ সব কথা বলেন।

চীনের সাথে বাণিজ্য বৈষম্য কমাতে কৃষিসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানি, রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য চীন থেকে ঋণ সহায়তা, বাজেট সহায়তা, তিস্তা প্রকল্প প্রভৃতি নিয়ে চীনের সাথে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির প্রস্তাব রয়েছে। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর দেশটির মুখপাত্র বলেছিলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিতে যত পরিবর্তনই আসুক না কেন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা  মো.

তৌহিদ হোসেন আগামীকাল ২০ জানুয়ারি বেইজিং সফরে যাচ্ছেন। এই সফরের মধ্যে দিয়ে ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্তবর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এই চীন সফরের গুরুত্ব উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চীনের সাথে বাংলাদেশের আগের মতোই সম্পর্ক থাকবে এবং ভবিষ্যতে সম্পর্কের কোন চির ধরবে না। বরং এ সম্পর্ক কারো গভীর হবে।

বাংলাদেশ সঙ্গে চীনের চুক্তি বিষয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ পক্ষ থেকে যেসব চুক্তির প্রস্তাব সেগুলোর ব্যত্যয় ঘটবে না।”

এ সময় তিনি তিস্তা প্রকল্পের বিষয়ে বলেন, “এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে চীন। এটা সমাধান করা হবে।”

৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের ঘটনায় আহতদের চীনের পক্ষ থেকে যে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছিল সেটা অব্যাহত থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যদি কোন ধরনের চিকিৎসা ইনস্ট্রুমেন্ট লাগে তা চায়না সরকার সরবরাহ করবে এবং বাংলাদেশের মানুষকে সার্বিক সহযোগিতায় করবে।”

রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, “ব্রহ্মপুত্র নিয়ে ভারত যে বাঁধ তৈরি করছে চীন বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে।”

এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দূতাবাসের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন।

ঢাকা/হাসান/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি

গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের 

এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ। 

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।” 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, ‍“কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ