গোপালগঞ্জে দুই সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুদকের অভিযান
Published: 20th, January 2025 GMT
নানা অনিয়মের অভিযোগে গোপালগঞ্জের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে দুর্নীতি দমন কমিশন গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচলক মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান পরিচালনা করে।
দুর্নীতি দমন কমিশন গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচলক মো.
আরো পড়ুন:
কবির বিন আনোয়ার ও আব্দুস শহীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা
দুদকের অভিযান: সুরের বাসা থেকে ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার
তিনি আরো বলেন, “বিভিন্ন গ্রামে টিউবয়েল ও ল্যাট্রিন বিতরণ, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, পানির লাইন সরবরাহে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও টিউবয়েল বিতরণে সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে কয়েকগুণ টাকা নেওয়ারও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এ ধরনের অসংখ্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যার সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক নেই। ব্যক্তি স্বার্থে জনগণের অর্থ ব্যয় করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহারসহ অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।”
মশিউর রহমান বলেন, “কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দী ইউনিয়নে জেলার সিভিল সার্জনের অজ্ঞাতসারে ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালে শুরু হলেও ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়নি। এ প্রকল্পের মোট মূল্য নির্ধারন করা হয়েছিল ১৬ কোটি ১৯ লাখ। এর মধ্যে ৮ কোটি ১২ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। কাজটির ঠিকাদার ম্যাক কন্সট্রাকশনের মালিক আলম। বর্তমানে কেটিএমসির (জেভি) মাধ্যমে কাজটি সম্পাদিত হচ্ছে। এই প্রকল্পটির বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম হাসানুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে সাইট ইঞ্জিনিয়ার গোপালগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রকৌশলের অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. ইব্রাহীম খলিল ফারুকী ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. সিহাব উদ্দিন হাসপাতাল নির্মাণ কাজ তদারকি করছেন।”
দুদকের এই কর্মকর্তা আবলেন, “ইতোমধ্যে এ হাসপাতালটি নির্মাণের জন্য তিনবার সময় বৃদ্ধি করা হলেও উক্ত প্রকল্পের ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ার পরস্পর যোগসাজশে কাজ সমাপ্ত না করে মূল্য বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে বারবার ব্যয় বৃদ্ধি করাচ্ছেন। এতে সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ও জনগণ স্বাস্থ্য সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। অল্প কাজ করে বেশি বিল নিয়ে ঠিকাদার ভেগে (পালিয়ে) গেছেন। উক্ত ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে নতুন বাজেটে কাজ শুরু করার পায়তারা করা হচ্ছে। অথচ সিভিল সার্জন অফিস বা স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের না জানিয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশলের অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও ঠিকাদারগণ সরকারের বিপুল অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষতি করছেন। দীর্ঘ ৫ বছর অতিক্রান্ত হলেও কাজ শেষ না হওয়ায় ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে তদন্তসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ প লগঞ জ প রকল প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।
তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।”
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ঢাকা/এএএম/রফিক