সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি রাবির আদিবাসী শিক্ষার্থীদের
Published: 20th, January 2025 GMT
সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অধ্যায়নরত আদিবাসী শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা নবম দশম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে আদিবাসী গ্রাফিতি বাদ দেওয়া ও ঢাকায় শান্তি সমাবেশে পুলিশি হামলার প্রতিবাদ জানান।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের আয়জনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। এরপর সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে এনে সমাবেশ করেন তারা।
এ সময় ‘জ্বালো রে জ্বালো আগুন জ্বালো’, ‘আমার ভাইকে মারল কেন, রাষ্ট্র তোমার জবাব চাই’, ‘লড়াই হবে সমান তালে, পাহাড় কিংবা সমতলে’, ‘আমরা নই উপজাতি, আমরা সবাই বাংলাদেশি’, ‘তোমার আমার পরিচয়, আদিবাসী আদিবাসী’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এ বাংলায় হবে না’, ‘উগ্রবাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা।
সমাবেশে আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিন্স হেমন্ত টুডু বলেন, “এনসিটিবির যে চেয়ারম্যান এ আদিবাসী গ্রাফিতি উঠিয়ে দিয়েছে, তার অনতিবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানাই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শান্তিপূর্ণ ঘেরাও মিছিলে গুলিবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানাই। আজ যখন আদিবাসীদের উপর হামলা হয়, তখন পুলিশদের আমরা নীরব ভূমিকায় দেখি। আদিবাসীদের উপর পুলিশের এ হামলা কোন নতুন কিছু নয়।”
তিনি আরও বলেন, “পুলিশ আদিবাসীদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়, তাদের গুলি করে মারে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কোন পদক্ষেপ নেয়নি। আদিবাসীদের তারা সবসময় দমিয়ে রাখতে চায়।”
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী রেজা বলেন, “আদিবাসী সঙ্গে যেসব কথা উঠে আসে, সেগুলো হলো উপজাতি, সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী; এ প্রতিটি শব্দই রাজনৈতিক। হাজার বছর ধরে এ ভূখণ্ডে আমরা বাস করছি, চাইলেই কেউ অস্বীকার করতে পারি না। জুলাই বিপ্লবের চেতনায় আমি কাউকে বাদ দিতে চাই না। জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ভোলানোর জন্য বাদ দেওয়ার জন্য কিছু মানুষ ষড়যন্ত্র করছে।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদস্য বিজয় চাকমা বলেন, “যখনই আদিবাসীদের অধিকার আদায় নিয়ে কোনো আন্দোলন হয়েছে কোনো দাবি উঠেছে, তখনই একদল মানুষের মধ্যে বিষফোঁড়া উন্মেচিত হয় এবং কোন না কোনভাবে এ আন্দোলন ভূলন্ঠিত করার চেষ্টা করে। তারা মনে করে আদিবাসীরা এ ভূখণ্ড থেকে আলাদা হয়ে যাবে।”
তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে নসাৎ করার জন্য স্টুডেন্ট ফর সভেরিয়েন্টি এনসিটিবি ভবন ঘেরাও করে গ্রাফিতি বাতিল করে। এর দায় এনসিটিবি ও স্টুডেন্ট ফর সভেরিয়েন্টিকে নিতে হবে।”
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।
মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।
এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।