বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগসংশ্লিষ্ট বিদ্যমান কাঠামোর সংস্কার ও যুগোপযোগীকরণের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। আমদানি-রপ্তানি নীতিমালা, রাজস্ব কাঠামো, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, লজিস্টিক নীতিমালা এবং জাতীয় বাজেট ও মুদ্রানীতি সম্পর্কিত বিষয়গুলো এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে সংগঠনটি।

গতকাল বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে এ বিষয় তুলে ধরেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ। সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সচিবালয়ে উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ডিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, কভিড অতিমারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা, দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন-পরবর্তী অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশ এলডিসি-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি ভালোভাবে নিতে পারেনি। বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের সময়সীমা পিছিয়ে নেওয়ার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করতে পারে। বাস্তবভিত্তিক উত্তরণ কৌশলও দরকার। 

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, সম্প্রতি শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক, আবগারি শুল্ক ও কর বাড়ানোর উদ্যোগের কারণে ইতোমধ্যে দেশের সাধারণ মানুষসহ ব্যবসায়ীদের মাঝে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে জনগণের জীবনযাত্রার ওপর আরও বেশি হারে চাপ ফেলবে, সেই সঙ্গে ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। 
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অস্থিরতা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে অপ্রত্যাশিত বন্যার কারণে স্থানীয়ভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। ইতোমধ্যে সামগ্রিক পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হয়েছে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। 
এলডিসি উত্তরণের ফলে দেশের বেসরকারি খাত বেশ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগসংশ্লিষ্ট নীতিমালার সংস্কার ও সবার সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়ােজন। তিনি বলেন, নীতিসহায়তা ও ধারাবাহিকতা অব্যাহত না থাকলে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা কমে যাবে।  
এদিকে ঢাকার পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে দেশের ফার্নিচার শিল্প নিয়ে এক সেমিনারে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিগত সরকারের আমলে অর্থনীতিতে যে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে, তা চিন্তার বাইরে। ব্যাংকিং, গার্মেন্টসসহ দেশের প্রতিটি খাতের সম্ভাবনাকে নষ্ট করা হয়েছে। 
বন্ড সুবিধার কারণে দেশে গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশ হলেও অনেক শিল্পে ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ব্যবসায়ীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে হবে। তিনি বলেন, ঢালাওভাবে নয়, বরং বাণিজ্যিক সম্ভাবনা আছে এমন সব দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এলড স ব ণ জ য উপদ ষ ট পর স থ ত ব যবস য় পরবর ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালির স্থাপত্য প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ থেকে যা উপস্থাপন করা হচ্ছে

বাংলাদেশের স্থাপত্যভাবনা, দক্ষতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তুলে ধরতে ইতালির ‘ভেনিস দ্বিবার্ষিক স্থাপত্য প্রদর্শনী ২০২৫’-এ অংশ নিতে যাচ্ছে ‘ভিত্তি স্থপতিবৃন্দ লিমিটেড’। ইউরোপিয়ান কালচারাল সেন্টারের আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক এই প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠানটি। দ্বিবার্ষিক প্রদর্শনীটির এবার ১৯তম আসর বসবে আগামী ১০ মে, চলবে পরবর্তী ছয় মাস।

এ নিয়েই আজ ২৮ এপ্রিল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। যেখানে দ্বিবার্ষিক স্থাপত্য প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের বিস্তারিত তুলে ধরেন ‘ভিত্তি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও স্থপতি ইকবাল হাবিব ও ইশতিয়াক জহির।

সংবাদ সম্মেলন শেষে স্থপতি ইকবাল হাবিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই বছর পরপর বিভিন্ন থিমে এই আয়োজন হয়। এখানে সারা পৃথিবীর স্থপতিদের আহ্বান জানানো হয়। তারপর আয়োজকেরা নিজেদের মতো করে অংশগ্রহণকারী নির্বাচন করেন। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল হাতিরঝিল প্রকল্পের জন্য। পরবর্তী সময়ে আমাদের অন্যান্য প্রকল্প দেখানোর পর আয়োজকেরা বড় পরিসরে প্রদর্শনীর জন্য আমাদের আমন্ত্রণ জানান।’

ভেনিসের এই প্রদর্শনীতে ‘ভিত্তি’ তাদের ৯টি প্রকল্প উপস্থাপন করবে। এসব প্রকল্প শহুরে ও প্রাকৃতিক পরিবেশের সমন্বয়, পুনর্গঠন ও সংরক্ষণের মাধ্যমে দেশীয় প্রয়োজনীয়তাকে সাংস্কৃতিক ধারাবাহিকতার সঙ্গে সমন্বয় করেছে। যার মধ্যে প্রদর্শনীতে স্থান পেতে যাচ্ছে ‘হাতিরঝিল’, ‘বাবুরাইল খাল পুনঃস্থাপন’, ‘১৮টি ডিএনসিসি পার্কের পুনরুদ্ধার’-এর মতো বৃহৎ পরিসরের নগর পরিকল্পনা প্রকল্প। পাশাপাশি স্থান পাচ্ছে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে স্থাপিত ‘একমাত্রা ডিবিবিএল একাডেমি’ প্রকল্প, পাবনার চাটমোহরের ‘বড়াল বিদ্যানিকেতন’, গাজীপুরের ‘বনের বাড়ি’ নামে আবাসিক বাড়ির মতো প্রকৃতির সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক স্থাপত্য প্রকল্প। এসব প্রকল্পে গড়া স্থাপত্য পরিবেশবান্ধব স্থানিক উপকরণ ব্যবহার করে স্থাপত্যকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। এ ছাড়া স্থাপত্য ঐতিহ্য ও তাত্ত্বিক স্থাপনা পুনঃস্থাপনের প্রকল্প হিসেবে ‘ব্রিটিশ কাউন্সিল’, নারায়ণগঞ্জের ‘নগর ভবন’-এর মতো প্রকল্পের অন্তর্ভুক্তি থাকবে।

আরও পড়ুনসুলতানি আমলের মুদ্রাসহ হারিয়ে যাওয়া দেশ ও জনপদের মুদ্রাও আছে এই প্রদর্শনীতে ১৯ এপ্রিল ২০২৫

ইকবাল হাবিব বলেন, ‘আমাদের প্রকল্পগুলোর মধ্য দিয়ে আমরা বলতে চাই, স্থাপত্যেরও গণতন্ত্রায়ণ দরকার। ওপর থেকে চাপিয়ে দিয়ে নয়, জনগণকে সম্পৃক্ত করে স্থাপত্যের চর্চা করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো। তিনি বলেন, ‘স্থাপত্যের নতুন পদ্ধতির জন্য বাংলাদেশকে বলব একটি বিশ্ব পরীক্ষাগার। কারণ, ছোট দেশ, অধিক জনসংখ্যা, জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাব, নির্মাণসামগ্রীর অভাব—এমন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েও আপনারা (স্থপতিরা) নিজস্ব পদ্ধতিতে এসব অতিক্রম করছেন।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের (আইএবি) সভাপতি আবু সাঈদ এম আহমেদ। তিনি বলেন, ‘প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শুধু ভিত্তি স্থপতিদের পরিচিতি হবে এমন নয়, এর মধ্যমে বাংলাদেশের স্থাপত্যের ব্র্যান্ডিং হবে। সারা দুনিয়া দেখবে, আমরা কী চিন্তা করি।’

আরও পড়ুনবাড়িটি দেখে অনেকেই রিসোর্ট ভেবে ভুল করতে পারেন০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে তিতুমীরে মানববন্ধন
  • আট অঞ্চলে বৃষ্টির আভাস, নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত
  • বাবার মামলায় ছেলে গ্রেপ্তার
  • রাজধানীতে পরপর তিন দিনে তিন জনসমাবেশ
  • নতুন পোপ নির্বাচনের সমাবেশ শুরু ৭ মে
  • প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চেয়ে ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের চিঠি
  • আগামী নির্বাচনে ইসি প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি চালু করতে চায়: সিইসি
  • ঝড়-বৃষ্টি থাকবে কত দিন, জানাল আবহাওয়া অফিস
  • ইতালির স্থাপত্য প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ থেকে যা উপস্থাপন করা হচ্ছে
  • ছাত্রদলের দেওয়া বিবৃতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি: ডুজা