গ্রেপ্তার হওয়ার পর রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা থেকে পালিয়ে সাবেক ওসি শাহ আলম সম্ভবত ভারত বা অন্য কোনো প্রতিবেশী গেছেন বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার এসএম সাজ্জাত আলী। আজ মঙ্গলবার ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্র্যাব) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

উত্তরা পূর্ব থানার সাবেক ওসি শাহ আলম ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া একটি হত্যার মামলার আসামি। গত ৯ জানুয়ারি তাকে কুষ্টিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর উত্তরা পূর্ব থানায় নেওয়ার পর সেখান থেকে পালান তিনি।

ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধমুক্ত সমাজ গড়তে সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন। সাংবাদিকসহ সবার সহযোগিতা ছাড়া একা পুলিশের পক্ষে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। পুলিশ ও সাংবাদিক একে অপরের পরিপূরক। 

মতবিনিময় সভায় ক্র্যাবের নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যে কোনো নিউজ প্রচারের আগে অবশ্যই তার সত্যতা যাচাই করে নেবেন। তাতে ভুল তথ্য প্রচারের সম্ভাবনা থাকে না। অবশ্যই সত্য প্রচার করবেন। সত্য প্রচারে ডিএমপির কোনো ধরণের আপত্তি নাই। মানুষের মধ্যে ‘সেন্স অব ইনসিকিউরিটি’ (নিরাপত্তাহীনতা বোধ) সৃষ্টি হয় এমন নিউজ করার আগে অবশ্যই তার সত্যতা ভালোভাবে যাচাই করবেন।  

সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো.

নজরুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকরা তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক দক্ষতা কাজে লাগিয়ে সমাজের নিরাপত্তা সচেতনতা বাড়াতে পারেন। মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদের কোনো রাজনৈতিক বা দলীয় পরিচয় থাকতে পারে না। তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।

মতবিনিময় সভায় ক্র্যাবের সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল বলেন, পুলিশ ও সাংবাদিক একই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে থাকে। ক্র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমরা এক সঙ্গে কাজ করে আসছি। আমাদের মধ্যকার এই সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আগের মতো ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশাহ্ বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পুলিশ ও সাংবাদিক পাশাপাশি থেকে কাজ করতে চাই। আমরা একে অপরের পরিপূরক। মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে যে সকল সমস্যার সম্মুখীন হই তার ব্যপারে ডিএমপির সহযোগিতা কামনা করছি। 

মতবিনিময় সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও ক্র্যাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড এমপ ক জ কর ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে সাংবাদিক পরিচয়ে হোটেল কক্ষে তল্লাশি, সমালোচনা 
  • ভারতে কোনো বাংলাদেশি থাকলে উপযুক্ত চ্যানেলে পাঠাতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচনের জন‌্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • গাজীপুরে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে মারধর, আটক ৪৩
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • বিএনপি ও গণ অধিকারের মধ্যে উত্তেজনার জেরে পটুয়াখালীর ২ উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি
  • দীর্ঘ ছুটি শেষে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরছে মানুষ