ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল থেকে হলপাড়া সড়ক এবং থিয়েটার থেকে মধুর ক্যান্টিন পর্যন্ত সড়কের বেহাল অবস্থা এবং সর্বত্র খানাখন্দে ভর্তি। চলাফেরার ভোগান্তি নিরসনে এ পথের সংস্কার দাবিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে উপাচার্যের কাছে তার নিজ কার্যালয়ে এ স্মারকলিপিটি হস্তান্তর করেন শিক্ষার্থীরা।

স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, ঢাবির সূর্যসেন হল থেকে হলপাড়ার রাস্তাটি অনেক বছর ধরে বেহাল অবস্থায় আছে। রাস্তাটির সর্বত্র খানাখন্দ। অথচ বিজয় একাত্তর হল, কবি জসীম উদ্দীন হল, শেখ মুজিবুর রহমান হল ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থীরা এ রাস্তা পাঠকক্ষে আসা-যাওয়াসহ তাদের নৈমিত্তিক কাজে ব্যবহার করে থাকেন। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তাটি ব্যবহার অযোগ্য এবং ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

স্মরকিলিপিতে তারা আরও বলেন, থিয়েটার থেকে মধুর ক্যান্টিন পর্যন্ত রাস্তারও চিত্র দুর্বিষহ। সর্বত্র গর্ত এবং খানাখন্দ। অনেক শিক্ষার্থীই কলাভবন, সামাজিক বিজ্ঞান ভবন, আইবিএ এবং কেন্দ্রীয় পাঠাগারে যাতায়াতে এ রাস্তাটি ব্যবহার করেন। কিন্তু বর্ষাকালে অনেক জায়গায় পানি জমে যায়। কিছু কিছু খানাখন্দ পানির নিচে চলে যায়। জমে থাকা পানি, পানির নিচে চলে যাওয়া খানাখন্দ এবং অনেক জায়গায় স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাওয়া রাস্তাটি চরম ভোগান্তি ও বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ছয় দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাস্তাগুলো দ্রুত মেরামতের পদক্ষেপ নিতে হবে; মেরামতের কাজ শুষ্ক মৌসুমেই শুরু করতে হবে; বৃষ্টির মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই কাজ শেষ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে; সড়ক মেরামতের কাজে টেকসই ও মানসম্মত উপকরণ ব্যবহার করতে হবে;, পানি নিষ্কাশনের যথার্থ ব্যবস্থা রাখতে হবে; কাজ চলাকালে দুর্ভোগ এড়ানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ বিষয়ে ঢাবি শিক্ষার্থী আব্দুল কাদের বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া এবং থিয়েটার ভবন থেকে মধুর ক্যান্টন পর্যন্ত রাস্তা দুইটির বেহাল দশা। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে নানারকম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ নিরসনে রাস্তা মেরামতের জন্য আজ আমরা স্মারকলিপি প্রদান করেছি।”

তিনি বলেন, “এ বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ স্যারের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছি। স্যার রাস্তা মেরামতের বিষয়টি খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করেছেন এবং আমাদের উপস্থিতিতে স্যার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধান প্রকৌশলী জানিয়েছেন, রাস্তা মেরামতের বিষয়ে নথিপত্র প্রসেস করে দুই একদিনের মধ্যে ইজিপিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন। আশাকরি, খুব শীঘ্রই রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু হবে।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ম রকল প ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ