সোমবার সূচকের উল্লেখযোগ্য উত্থান দেখে কিছু বিনিয়োগকারীর মধ্যে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর আশা তৈরি হয়েছিল। আরও দাম বৃদ্ধির আগে আগাম ‘পজিশন’ নেওয়ার চিন্তায় কেউ কেউ গতকাল মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতে শেয়ার কিনেছিলেন। তবে দিনের শেষ হয়েছে পুরোনো ধারায়।
অবশ্য এর মধ্যেও লেনদেন বেড়েছে। গতকাল ডিএসইতে কেনাবেচা হয়েছে ৪৯৯ কোটি টাকার শেয়ার, যা আগের দিনের তুলনায় ৭২ কোটি টাকা বেশি এবং গত ৩ ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ।
সোমবার লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় যেখানে ১১৮ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল, গতকাল তা বেড়ে ১৭৬ কোটি টাকা ছাড়ায়। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে প্রথম ঘণ্টায় লেনদেন ৭০ থেকে ১০০ কোটি টাকার মধ্যে ওঠানামা করতে দেখা গেছে।
বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ স্বল্প মূল্যের শেয়ারগুলোর দর বৃদ্ধির প্রবণতা ছিল। সে ধারা এখন কমে আসছে। যাদের হাতে বিনিয়োগ করার মতো টাকা রয়েছে, তারা ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারে ঝুঁকছেন। তবে সার্বিক বিচারে আস্থার ঘাটতি কাটেনি।
এমন প্রবণতায় ডিএসইতে ১৬৫ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৪৯টি দর হারিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়। দর অপরিবর্তিত থাকে ৮০টি শেয়ারের। যদিও লেনদেনের প্রথম ঘণ্টা শেষে ২৫৯ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬০টি দর হারিয়ে কেনাবেচা হতে দেখা যায়। গতকাল বেলা পৌনে ১১টায় ডিএসইএক্স সূচক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫২৩৪ পয়েন্ট ছাড়ায়। তবে লেনদেন শেষ হওয়ার মাত্র ৩ মিনিট আগে সূচকটি ওই ৩৮ পয়েন্ট হারিয়ে আগের দিনের অবস্থানে নামে। অবশ্য শেয়ারের সমাপনী মূল্যের হিসাবে পৌনে ৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫২০২ পয়েন্টে থেমেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত আরও ৩, আহত ২৯
ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।
আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।