সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কাতার ও চীনের প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি (কাফকো) বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টন সার কিনছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টন ইউরিয়া এবং ৩০ হাজার টন ফসফরিক এসিড। এ সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৭৫৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড.
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৩২ কোটি ৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া একই দামে সৌদি আরবের সাবিক এগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানি করা হবে।
কাতার এনার্জি মার্কেটিং থেকে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানিতে কিছু বাড়তি ব্যয় হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দাম পড়ছে ১৩৮ কোটি ৬৫ লাখ ১৭ হাজার টাকা। তাছাড়া কাফকো থেকে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার কেনায় ব্যয় হবে ১২৯ কোটি ৪৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এ প্রতিষ্ঠান থেকে সার কিনলেও ডলারে মূল্য পরিশোধ করতে হয়, তাই আমদানি হিসেবেই ধরা হয়। এ ছাড়া চট্টগ্রামের টিএসপিসিএলের জন্য আরব আমিরাতের জেনট্রেড এফজেডইর কাছ থেকে ১০ হাজার টন ফসফরিক এসিড কেনা হচ্ছে। এতে ব্যয় হবে ৭৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
বৈঠকে ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৭১২টি স্টিল ক্রস আর্ম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন হয়। এতে ব্যয় হবে ৭০ কোটি ৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এর আগে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে কৃষিপণ্যের বিশেষ ওএমএস (খোলা বাজারে খাদ্যশস্য বিক্রি) কার্যক্রমের ভূতাপেক্ষ অনুমোদন দেওয়া হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র আমদ ন উপদ ষ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।