প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে এখন সচেতনতা তৈরি থেকে বাস্তবায়নের পথে এগোতে হবে। এ সংকট মোকাবিলায় উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে পেতে যুক্ত করতে হবে তরুণদেরও। পাশাপাশি প্লাস্টিক দূষণের হাত থেকে জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ রক্ষা করতে স্থানীয় পর্যায় থেকে আঞ্চলিক পর্যায়ে সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের অংশ হিসেবে জাতিসংঘের প্রজেক্ট সার্ভিস অফিস (ইউএনওপিএস), বিমসটেক (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন) ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে ইউএনওপিএসের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালিধরন বলেন, প্লাস্টিক কতটা ক্ষতিকর, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এ দূষণ বন্ধে এখনই সময় সচেতনতা থেকে বাস্তবায়নের পথে যাওয়া।

ইউএনওপিএসের এই কর্মকর্তা বলেন, বাস্তবায়নের ঘাটতিকে অনেক সময় হালকাভাবে নেওয়া হয়। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণে বাস্তবায়নের ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে হবে। জাতিসংঘের প্লাস্টিক ট্রিটির (চুক্তি) আলোকে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ প্লাস্টিক রিসাইক্লিংয়ে অন্যতম পথপ্রদর্শক। তবে এখনো অনেক পথ পাড়ি দেওয়া বাকি। তিনি উদ্ভাবনী সমাধান বের করতে তরুণদের যুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বিমসটেকের মহাসচিব ইন্দ্র মণি পান্ডে বলেন, পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্র, জীববৈচিত্র্য এখন প্লাস্টিকের দূষণের কারণে সংকটের মুখে পড়েছে। বিমসটেক দেশগুলোতে মোট ১৮০ কোটি মানুষ আছে। প্রত্যেকে প্লাস্টিক দূষণের উচ্চ ঝুঁকিতে আছে। তাই এ দূষণ বন্ধে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে উদ্যোগের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, প্লাস্টিক শুধু পরিবেশগত সংকট নয়, এটি শিল্প, অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক সংকটও। শিল্প মন্ত্রণালয় উৎস থেকে দূষণ বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, টেকসই প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিমসটেক অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতা বাড়াতে হবে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব উন্নয়ন সহযোগী, বেসরকারি খাত ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।

পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.

কামরুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের বিস্তৃত নদী ও উপকূল প্লাস্টিক দূষণের তীব্রতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর ৮৭ হাজার টন আন্তমহাদেশীয় প্লাস্টিক বর্জ্য আমাদের বাস্তুতন্ত্রে প্রবেশ করছে। এর ফলে একটি দ্রুত কর্মকৌশল প্রণয়ন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে আমাদের জন্য।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, টেকসই প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় কর্মকৌশল বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত একমাত্র সংস্থা হিসেবে পরিবেশ অধিদপ্তরের লক্ষ্য একদম পরিষ্কার। সেটি হলো প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনা, প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ৫০ শতাংশ বাড়ানো ও ৯০ শতাংশ সিঙ্গেল ইউজ (একবার ব্যবহার্য) প্লাস্টিক কমানো।

এ লক্ষ্য পূরণে পরিবেশ অধিদপ্তর বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে কামরুজ্জামান বলেন, ‘নীতিকাঠামো শক্তিশালী করা, উদ্ভাবন বাড়ানো, ভোক্তাদের আচরণগত পরিবর্তন উৎসাহিত করার মধ্য দিয়ে আমরা এ অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই।’

প্লাস্টিক দূষণ কমাতে এগুলো পর্যাপ্ত নয়, পাশাপাশি নিজেদের ভোক্তা মানসিকতাতেও পরিবর্তন আনতে হবে বলে মত দেন পরিবেশ অধিদপ্তরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক সহয গ ত ব মসট ক লক ষ য ন বল ন

এছাড়াও পড়ুন:

প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান

প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে এখন সচেতনতা তৈরি থেকে বাস্তবায়নের পথে এগোতে হবে। এ সংকট মোকাবিলায় উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে পেতে যুক্ত করতে হবে তরুণদেরও। পাশাপাশি প্লাস্টিক দূষণের হাত থেকে জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ রক্ষা করতে স্থানীয় পর্যায় থেকে আঞ্চলিক পর্যায়ে সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের অংশ হিসেবে জাতিসংঘের প্রজেক্ট সার্ভিস অফিস (ইউএনওপিএস), বিমসটেক (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন) ও পরিবেশ অধিদপ্তর যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে ইউএনওপিএসের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালিধরন বলেন, প্লাস্টিক কতটা ক্ষতিকর, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এ দূষণ বন্ধে এখনই সময় সচেতনতা থেকে বাস্তবায়নের পথে যাওয়া।

ইউএনওপিএসের এই কর্মকর্তা বলেন, বাস্তবায়নের ঘাটতিকে অনেক সময় হালকাভাবে নেওয়া হয়। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণে বাস্তবায়নের ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে হবে। জাতিসংঘের প্লাস্টিক ট্রিটির (চুক্তি) আলোকে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ প্লাস্টিক রিসাইক্লিংয়ে অন্যতম পথপ্রদর্শক। তবে এখনো অনেক পথ পাড়ি দেওয়া বাকি। তিনি উদ্ভাবনী সমাধান বের করতে তরুণদের যুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বিমসটেকের মহাসচিব ইন্দ্র মণি পান্ডে বলেন, পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্র, জীববৈচিত্র্য এখন প্লাস্টিকের দূষণের কারণে সংকটের মুখে পড়েছে। বিমসটেক দেশগুলোতে মোট ১৮০ কোটি মানুষ আছে। প্রত্যেকে প্লাস্টিক দূষণের উচ্চ ঝুঁকিতে আছে। তাই এ দূষণ বন্ধে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে উদ্যোগের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, প্লাস্টিক শুধু পরিবেশগত সংকট নয়, এটি শিল্প, অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক সংকটও। শিল্প মন্ত্রণালয় উৎস থেকে দূষণ বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, টেকসই প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিমসটেক অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতা বাড়াতে হবে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব উন্নয়ন সহযোগী, বেসরকারি খাত ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।

পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের বিস্তৃত নদী ও উপকূল প্লাস্টিক দূষণের তীব্রতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছর ৮৭ হাজার টন আন্তমহাদেশীয় প্লাস্টিক বর্জ্য আমাদের বাস্তুতন্ত্রে প্রবেশ করছে। এর ফলে একটি দ্রুত কর্মকৌশল প্রণয়ন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে আমাদের জন্য।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, টেকসই প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় কর্মকৌশল বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত একমাত্র সংস্থা হিসেবে পরিবেশ অধিদপ্তরের লক্ষ্য একদম পরিষ্কার। সেটি হলো প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনা, প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ৫০ শতাংশ বাড়ানো ও ৯০ শতাংশ সিঙ্গেল ইউজ (একবার ব্যবহার্য) প্লাস্টিক কমানো।

এ লক্ষ্য পূরণে পরিবেশ অধিদপ্তর বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে কামরুজ্জামান বলেন, ‘নীতিকাঠামো শক্তিশালী করা, উদ্ভাবন বাড়ানো, ভোক্তাদের আচরণগত পরিবর্তন উৎসাহিত করার মধ্য দিয়ে আমরা এ অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই।’

প্লাস্টিক দূষণ কমাতে এগুলো পর্যাপ্ত নয়, পাশাপাশি নিজেদের ভোক্তা মানসিকতাতেও পরিবর্তন আনতে হবে বলে মত দেন পরিবেশ অধিদপ্তরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ