রমজানে চাহিদা বেশি থাকে এমন কিছু পণ্যের আমদানি বেড়েছে। গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে ছোলা, পেঁয়াজ ও রসুনের আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে। কিছুটা কমেছে খেজুর আমদানি। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া পণ্যের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি করা হয়েছে।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলছে, আমদানি বাড়লে বাজার স্বাভাবিক থাকার কথা। কিন্তু কিছু পণ্যের দাম এখনও বেশি। আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের দর যাতে না বাড়ে, সে জন্য এখন থেকেই সরকারকে নজরদারি জোরদার করতে হবে।

রোজায় ইফতারির অন্যতম উপকরণ হচ্ছে ছোলা। চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে দেশে ছোলা আমদানি হয়েছে ২৮ হাজার ৩৩৪ টন। তার আগের বছরের একই সময়ে ছোলা আমদানির পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৬৭৬ টন। অর্থাৎ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ছোলা আমদানি বেড়েছে ১৫ হাজার ৬৫৮ টন। গত ছয় মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ১৬ হাজার ২৫৪ টন। ২০২৩ সালের একই সময় পেঁয়াজ আমদানি হয় ৩ হাজার ৫৮ টন। এ হিসাবে গত ছয় মাসে পেঁয়াজ আমদানি বেড়েছে ১৩ হাজার ১৯৬ টন। তবে পেঁয়াজের একটি বড় অংশ হিলি, ভোমরাসহ বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়েও আমদানি হয়। একই সময়ে ছোলা ও পেঁয়াজের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রসুনের আমদানিও বেড়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমসের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে রসুন আমদানি হয়েছে ৯৭ হাজার ৬৩ টন। ২০২৩ সালের একই সময়ে এ আমদানির পরিমাণ ছিল ৬১ হাজার ৪৬৯ টন। 
ইফতারির অন্যতম উপকরণ খেজুরের আমদানি কমেছে। গত বছরের শেষ ছয় মাসে খেজুর আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ৯৭৮ টন। আগের বছরের একই সময়ে খেজুর আমদানি হয়েছিল ৭ হাজার ৯৬৫ টন। সেই হিসাবে খেজুর আমদানি কম হয়েছে ২ হাজার ৯৮৭ টন। তবে এক বছরের ব্যবধানে খেজুরের আমদানি বেড়েছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে মোট খেজুর আমদানি হয়েছে ৬৭ হাজার ৩২৪ টন। বিপরীতে ২০২৪ সালে খেজুর এসেছে ৭৫ হাজার ২২০ টন।

ট্যারিফ কমিশনের তথ্যমতে, শুধু রমজানে ছোলার চাহিদা রয়েছে ১ লাখ টনের। এ ছাড়া পেঁয়াজ ও খেজুরের চাহিদা রয়েছে যথাক্রমে ৫ লাখ ও ৬০ হাজার টন। এসব পণ্য আমদানির জন্য ব্যাপক হারে এলসি বা ঋণপত্র খোলা হয়েছে। প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার টন ছোলা আমদানির জন্য এলসি খুলেছেন আমদানিকারকরা। এ ছাড়া ৪ লাখ ৬৪ হাজার টন পেঁয়াজ ও ৮৬ হাজার ১০৯ টন খেজুর আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে।

আমদানি বাড়লেও বাজারে ছোলা ও খেজুরের দর কমেনি। গতকাল ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হয়েছে মানভেদে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। খেজুরের দরও অনেক বেশি। মানভেদে খেজুরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দরে। অবশ্য পেঁয়াজের বাজারে কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।  
এ বিষয়ে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, রোজার আগেই বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমদানি বাড়িয়ে সারাদেশে বাজারে তদারক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বছর র একই সময় খ জ র আমদ ন আমদ ন র রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

চার দেশের পাঁচ লাখ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার নির্দেশ

সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে ‘প্যারোল’ কর্মসূচিতে থাকা পাঁচ লাখেরও বেশি অভিবাসীর অভিবাসন মর্যাদা বাতিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলা থেকে আসা ৫ লাখ ৩০ হাজার অভিবাসীকে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে যে, তাদের বৈধ অভিবাসন মর্যাদা বাতিল করা হয়েছে। অবিলম্বে স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে হবে তাদের। এই অভিবাসীরা বাইডেন প্রশাসনের শুরু করা ‘মানবিক প্যারোল’ কর্মসূচিতে তালিকাভুক্ত ছিলেন, যার আওতায় তাদের দুই বছরের জন্য কাজের অনুমতি এবং নির্বাসন থেকে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের সহকারী সচিব ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন বলেন, ‘বাইডেন প্রশাসন আমেরিকান জনগণকে মিথ্যা বলেছে। তারা কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলা থেকে প্রায় অর্ধ-মিলিয়নের বেশি (যথাযথভাবে যাচাই না করা) বিদেশিকে এবং তাদের পরিবারকে এই ধ্বংসাত্মক প্যারোল কর্মসূচির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দিয়েছে। তাদের আমেরিকান চাকরির জন্য প্রতিযোগিতার সুযোগ দিয়েছে, যার ফলে আমেরিকান শ্রমজীবীদের ক্ষতি হয়েছে। এমনকি প্রতারণার প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও এই কর্মসূচি এগিয়ে নিতে সিভিল সার্ভেন্টদের বাধ্য করা হয়েছে। পরে আবার কংগ্রেসের রিপাবলিকানদের ওপর দোষ চাপানো হয়েছে এই বিশৃঙ্খলা ও অপরাধের জন্য।’

ম্যাকলাফলিন আরও বলেন, “সিএইচএনভি প্যারোল কর্মসূচি এবং যারা এটিকে অপব্যবহার করেছে তাদের প্যারোল বাতিল করা যুক্তিবাদী নীতিতে, জননিরাপত্তায় এবং ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে ফিরে যাওয়ার একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।”

২০২২ সালের অক্টোবর মাসে বাইডেন প্রশাসন এই প্যারোল কর্মসূচি শুরু করে, যার আওতায় প্রতি মাসে লাতিন আমেরিকার চারটি দেশ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। প্রথমে ভেনেজুয়েলানদের দিয়ে শুরু হলেও ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কিউবা, হাইতি ও নিকারাগুয়ার নাগরিকদেরও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

মূলত সীমান্তে বেড়ে যাওয়া অবৈধ অনুপ্রবেশ কমাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কর্মসূচিটি ব্যাপক জালিয়াতির কারণে সমালোচিত হয়। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায় দেখা যায়, বহু প্যারোল আবেদনে একই ঠিকানা, ভুয়া সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর ও ফোন নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিস জানায়, মাত্র ১০০টি ঠিকানার বিপরীতে ১৯,০০০ হাজারেরও বেশি আবেদন জমা পড়ে। অনেক আবেদন একই আইপি ঠিকানা থেকে পাঠানো হয়েছে। ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে বাইডেন প্রশাসন কর্মসূচিতে থাকা অভিবাসীদের অস্থায়ী বৈধতা নবায়নের সুযোগ বন্ধ করে দেয়।

ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই কর্মসূচি পুরোপুরি বাতিল করেন এবং নতুন কোনো আবেদন গ্রহণ বন্ধ করে দেন। গত মাসে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বহাল রাখে।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ তাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অভিবাসীদের ‘সিবিপি হোম মোবাইল অ্যাপ’ এর মাধ্যমে স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করার আহ্বান জানায়। তারা জানায়, এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে অভিবাসীদের দেশে ফেরার জন্য ভ্রমণ সহায়তা ও ১,০০০ ডলারের বোনাস দেওয়া হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
  • সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
  • অন্য বছরের চেয়ে এই জুনে ডেঙ্গু বেশি
  • সংশোধিত সাইবার অধ্যাদেশও আন্তর্জাতিক মানের হয়নি
  • জার্মানির ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে পড়াশোনা, জেনে নিন সব তথ্য
  • ২০২৪ সালে মেটার কাছে ৩৭৭১ অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে সরকার
  • কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইরান-ইসরায়েল
  • তিন চ্যাম্পিয়ন দলসহ যেসব তারকাকে দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে
  • চার দেশের পাঁচ লাখ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার নির্দেশ
  • ৫ বছরে ঋণের স্থিতি বাড়বে ৫৩.৭৭ শতাংশ: অর্থবিভাগ