তদবিরে বদলে গেল সেতুর স্থান, এলাকাবাসীর ক্ষোভ
Published: 23rd, January 2025 GMT
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামে বেতাই নদীর ওপর সেতু নির্মাণের দাবি করে আসছেন এলাকাবাসী। এলজিইডি গুরুত্ব অনুধাবন করে সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনাও পাঠায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। সেতুটি যখন অনুমোদনের কাছাকাছি, তখন নির্ধারিত স্থান পরিবর্তন করে নিয়মবহির্ভূতভাবে অন্য জায়গায় নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ কাজে স্থানীয় বাসিন্দা এক যুগ্ম সচিবের হাত রয়েছে বলে জানান গ্রামবাসী।
এ নিয়ে মোহনপুরসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সেতুটি নির্ধারিত স্থানে নির্মাণ করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) জানিয়েছে। পাশাপাশি তারা ক্ষমতা ব্যবহার করে জনগণের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে অন্য জায়গায় সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান।
এলাকাবাসী জানান, মোহনগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর গ্রামে বেতাই নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। সেতু না থাকায় মোহনপুর, পূর্ব ফাগুয়া, হানবীর, ভাটাপাড়া, আবদুল্লাহপুর, নাপিতপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের শিশু শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী বাঁশের সাঁকো পার হয়ে আসা-যাওয়া করে। বর্ষাকালে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারে না। ঝুঁকি নিয়ে শিশু ও বয়স্করা নদী পার হয়ে থাকেন। এ ছাড়া বয়স্ক রোগীদের চিকিৎসা দিতে নিয়ে যাওয়া ও হাওরের ধান পরিবহনে সমস্যা হয়। এসব কারণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সেতুটি নির্মাণের জন্য ২০১৯ সালে এলজিইডিতে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। সে লক্ষ্যে সেতুর আইডি তৈরি করে এলজিইডি। পরে সেটি নিয়মানুযায়ী প্রকল্প তৈরি করে গুরুত্ব বিবেচনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।
সর্বশেষ ২০২২ সালে আবারও সেতুটির চাহিদা চেয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে আবেদন করে উপজেলা এলজিইডি। কিন্তু সেতু নির্মাণের বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি একই এলাকায় দেড় কিলোমিটার দূরে নতুন একটি সেতু নির্মাণের অনুমোদন হয়। যার দরপত্র প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। নতুন সেতুটি অনুমোদনে স্থানীয় বাসিন্দা একজন যুগ্ম সচিবের তদবির রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। পূর্ব নির্ধারিত স্থান বাদ দিয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে শুনে ক্ষুব্ধ মোহনপুরসহ কয়েক গ্রামের মানুষ।
মোহনপুর গ্রামের শেখ মোহাম্মদ সুলতান বলেন, নদীর ওপারে থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কয়েকটি গ্রামের কয়েকশ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। শুকনো মৌসুমে সাঁকো পার হয়ে যায় তারা। বর্ষায় নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যায়। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। একই গ্রামের কাইয়ুম নামে একজন বলেন, দীর্ঘদিনের প্রস্তাবিত সেতু বাদ দিয়ে ক্ষমতাবান কারও তদবিরে ভুল জায়গায় সেতু করলে মানুষের কোনো উপকারে আসবে না। উল্টো এলাকার মানুষের টাকা গচ্ছা যাবে। যেখানে সেতুটি করতে যাচ্ছে, ওই জায়গায় তেমন কোনো মানুষজন নেই, স্কুল-মাদ্রাসাও নেই।
তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুজন কর জানান, নদীর পশ্চিম পাশের অনেক গ্রামের মানুষ হাওরে ফসল উৎপাদন করেন। সেতুর কারণে তাদের ফসল সঠিক সময়ে ঘরে তুলতে পারেন না। কম দামে জমিতে বিক্রি করতে বাধ্য হন। ছেলেমেয়ে স্কুলে যেতে পারে না। একটি সেতু পারে জীবনমান বদলে দিতে। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন দ্রুত পূর্বনির্ধরিত স্থানে সেতুটি নির্মাণ করা হোক।
মোহনগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সোয়েব ইমরান বলেন, মোহনপুর গ্রামের সেতুটি আসলেই গুরুত্বপূর্ণ। সেতুটি হলে এলাকার বেশ কয়েক গ্রামের মানুষের উপকার হবে। বাচ্চাদের স্কুলে যাতায়াত, ক্ষেতের ধান পরিবহনসহ নানা সুবিধা হবে। এর আগে সেতুটির প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল; কিন্তু বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। অন্য যে সেতুটি হচ্ছে সেটি এর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরের, এটিও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর আশা, ওই সেতুটিও হবে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর এল ক ব স
এছাড়াও পড়ুন:
আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স ক্যাথলিক গির্জার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে কোনো একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। নিজের এ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বিশাল এক পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
জেডি ভ্যান্স বলেন, তাঁর যে মন্তব্য নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটি মূল বক্তব্য থেকে কেটে নেওয়া একটি অংশ। কোন প্রসঙ্গে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন, সেটা দেখানো হয়নি।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে তরুণদের সংগঠন ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’র একটি অনুষ্ঠানে এক তরুণীর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ভ্যান্স তাঁর স্ত্রী উষা একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষা হিন্দু সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছেন।
স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তাঁর স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।
স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়া পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তাঁর স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।জবাব দিতে এক্স পোস্টে ভ্যান্স বলেন, একটি পাবলিক ইভেন্টে তাঁকে তাঁর আন্তধর্মীয় বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি ওই প্রশ্ন এড়িয়ে যেত চাননি, উত্তর দিয়েছেন।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘প্রথমেই বলি, প্রশ্নটি আসে আমার বাঁ পাশে থাকা একজনের কাছ থেকে, আমার আন্তধর্মীয় বিয়ে নিয়ে। আমি একজন পাবলিক ফিগার, লোকজন আমার ব্যাপারে জানতে আগ্রহী এবং আমি প্রশ্নটি এড়িয়ে যেতে চাচ্ছিলাম না।’
এ বছর জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে জেডি ভ্যান্স ও তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স